Friday, May 12, 2017

‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ সচেতনতা অভিযান’: সুপ্রীম কোর্ট ও জনগণকে ধোঁকা দেবার ছলনা মাত্র



‘মুসলিম ব্যক্তিগত আইন’টি রক্ষার্থে অল ইণ্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডকে এবার অবশেষে ঔদ্ধত্য ও আস্ফালন ত্যাগ করেই পথে নামতে হলো। বোর্ডের সদস্য ও মাওলানা-মুফতিদের কণ্ঠ থেকে পরিচিত সেই রণংদেহী ধ্বনি হঠাৎই উধাও। গত বছর যখন সুপ্রীম কোর্ট ভারতের মুসলিম মহিলাদের পক্ষ থেকে ‘বহুবিবাহ ও তিন তালাক আইন’ বাতিলের দাবিতে পেশ করা আবেদনপত্রটি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে বিচারের জন্যে গ্রহণ করে তখন  বোর্ডের সদস্যরা গলা সপ্তমে চড়িয়ে হুঙ্কার ছেড়ে বলেছিলেন  - আল্লাহর তৈরী করা আইনে হস্তক্ষেপ করার এক্তিয়ার সুপ্রীম কোর্টের নেই। সুপ্রীম কোর্ট যদি তা করে তবে মুসলমানরা কিছুতেই বরদাস্ত করবে না। কিন্তু সুপ্রীম কোর্ট প্রত্যাশিতভাবেই সেই হুমকি উপেক্ষা করে এবং মুসলিম নারীদের আবেদনপত্রটি নিষ্পত্তির জন্যে  বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হয়।  তারপর কিছুদিনের মধ্যেই জানিয়ে দেয় যে, গ্রীষ্মকালীন অবকাশেই (১১ই মে থেকে) আবেদনপত্রটির উপর শুনানি নেওয়া শুরু হবে।  প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, বহুগামিতা, তালাক ও নিকাহ হালালা (হিল্লা বিয়ে) – এই তিনটি বিষয়কে সুপ্রীম কোর্ট আপাততঃ বিচারের জন্যে তালিকাভুক্ত করেছে বলে সংবাদে প্রকাশ। প্রসঙ্গতঃ আরেকটি  বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো এই যে মুসলিম নারীদের প্রতি সীমাহীন অবিচার ও বঞ্চনার অবসানের জন্যে এই প্রথম  কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন একটি সরকারকে উদ্যোগী ও তৎপর হতে দেখা যাচ্ছে।    
সুপ্রীম কোর্ট ও কেন্দ্রীয় সরকারের  এই মনোভাব দেখে ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড’ এবং তাবত  মোল্লা-মৌলভীরা  সম্যকরূপে এটা  বুঝেছেন যে অতীতের মতো লাল চোখ দেখিয়ে আর কাজ হাসিল করা যাবে না। তাই গর্জন-তর্জন ছেড়ে তাঁরা এবার ছল-চাতুরী করে কাজ হাসিল করার ছক কষে পথে নেমেছেন।  কীভাবে ছল-চাতুরী  করে তাঁরা কাজ হাসিল করতে চাইছেন সেটাই এই নিবন্ধের মূল আলোচ্য বিষয়।
কাজ হাসিল করা মানে সুপ্রীম কোর্ট ও কেন্দ্রিয় সরকারকে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন নিয়ে বিচারিক প্রক্রিয়া থেকে বিরত করা। বহুবিবাহ ও তালাক আইনের কারণে মুসলিম সমাজে কোনো সমস্যা হচ্ছে এ কথা ধর্মীয়নেতারা এতোদিন স্বীকারই করতেন না। তাঁরা এখন খানিকটা নিরীহ কণ্ঠে হলেও  মানছেন যে, হ্যাঁ, অল্পবিস্তর হলেও মুসলিম সমাজে সমস্যা ও সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। স্বীকার  করার পাশাপাশি তাঁরা সংকট লাঘবের জন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেওয়াও শুরু করেছেন। বলছেন যে, যারা অন্যায়ভাবে তালাক দিবে কিংবা একাধিক বিয়ে করবে তাদের সামাজিক বয়কট করা হবে।  মোল্লা-মৌলভিদের এই স্বীকারোক্তি এবং তালাক ও বহুবিবাহ বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করার  আশ্বাসকে একটা  আশাব্যঞ্জক ঘটনা বলে মনে করলে বিরাট ভুল হবে ও ঠকতে হবে। এটা স্রেফ তাদের ছলনা ও প্রতারণা মাত্র। এই ছলনাটিকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্যে এক পক্ষকাল ব্যাপী (২৩/৪-৭/৫) সচেতনতা প্রচার পক্ষ পালনের ডাকও দিয়েছিল  অল ইণ্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড এবং জামাতে ইসলামি হিন্দ।                   

এই অভিযানের নাম দিয়েছিলো  ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ সচেতনতা অভিযান’।  মুসলিমদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় নেতারা যে আহ্বান জানিয়েছিলেন - বন্ধ করুন ‘তালাকের অপব্যবহার ও বহু বিবাহের  অপ- প্রয়োগ’। ধর্মীয় নেতারা পোস্টারে এ ব্যানারে এবং মুখে যাই-ই বলুন না কেনো, এই ‘সচেতনতা অভিযান’  কর্মসূচীর মূল উদ্দেশ্য হলো  মানুষকে, বিশেষ করে সুপ্রীম কোর্টকে, ধোঁকা দেওয়া।  সুপ্রীম কোর্টকে তাঁরা  বোঝাতে চান যে মুসলিম সমাজে বহুবিবাহ ও তিন তালাকের যে সব ঘটনা ঘটছে তা  ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ সম্পর্কে অজ্ঞতার জন্যে, এর জন্যে ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’-কে দায়ী করা যায় না।  এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁরা বহুবিবাহ ও তালাক আইন বাতিলের আবেদনটি খারিজ করে দেওয়ার  আর্জি জানাতে চান।   
‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ সচেতনতা অভিযান’ যে স্রেফ ভাঁওতা তার প্রমাণ রয়েছে তাঁদের এই দাবির মধ্যে যেখানে তাঁরা বলছেন যে, বহুবিবাহ ও তিন তালাকের ঘটনা ঘটছে ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ সম্পর্কে মুসলমানদের অজ্ঞতার জন্যে। বহুবিবাহ প্রসঙ্গে তাঁদের দাবি - ইসলাম বহুবিবাহকে অনুমোদন করলেও তাতে উৎসাহ দেয় নি। একাধিক বিয়ে করা শরিয়ত আইনে মোটেই সহজ বিষয় নয়, একমাত্র অপরিহার্য হলেই তবেই একাধিক বিয়ে করার বিধান দিয়েছে ইসলাম, নতুবা নয়।  তালাকের ক্ষেত্রেও তাঁদের দাবী একই। তাঁরা বলছেন যে, তালাক আইনটি আল্লাহর চোখে  খুবই অপছন্দের,  তাই একমাত্র অনিবার্য পরিস্থিতিতেই তালাক দেওয়াকে আল্লাহ অনুমোদনে করেছে, নচেৎ নয়।  নিকাহ হালালা বা হিল্লা বিয়ে সম্পর্কেও একই দাবী তাঁদের -  নিকাহ হালালার যে সব ঘটনা ঘটে তার অধিকাংশই অনৈসলামিক।  অল ইণ্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের এ সব দাবি আমাকে চরম অবাক করেছে। কারণ, এই দাবীগুলি এতোদিন মুসলিম বুদ্ধিজীবীরাই করেছেন, আর বোর্ডের তরফে মোল্লা-মৌলভিরা এই সব দাবীকে  তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন। সুতরাং অল ইণ্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড এবং জামাতে ইসলামি হিন্দ যে এখন মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলাচ্ছে – এই মেলানোটা তাঁদের আত্মোপলব্ধি প্রসূত মোটেই নয়। আসলে মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের কুৎসিত চেহারাকে আড়াল করে সুপ্রীম কোর্টকে বিভ্রান্ত করার তাঁদের এটা একটা পরিকল্পিত ছক ও ছলনা মাত্র।  এটা যে তাঁদের ছলনা তার প্রমাণ রয়েছে কোরান ও হাদিসের পাতায় পাতায় ও ছত্রে ছত্রে।
পুরুষরা চারটে বিয়ে করতে পারবে সে কথা কোরান স্পষ্ট করেই বলেছে - বিয়ে করবে স্বাধীন নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভাল লাগে, দুই, তিন, বা চার জনকে (/)  বহুবিবাহে  উৎসাহ দেওয়া হয়েছে কোরানের ৪/২৪ নং আয়াতেও - “ কিন্তু তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাহাদের উপর অধিকার লাভ করিয়াছে ঈশ্বর তাহাদের তোমাদের সম্বন্ধে লিপি করিয়াছেন।” এর অর্থ হলো, মুসলিম পুরুষদের  অধিকারে থাকা  অবিশ্বাসী দাসীরা তাদের জন্যে বৈধ, তাদের মধ্যে থেকে যে  যতো খুশী দাসীকে (এখানে চারটির সর্বোচ্চা সীমা প্রযোজ্য নয়) তারা বিয়ে করতে পারবে। খলিফাদের জীবনাচরণও প্রমাণ করে যে ইসলাম বহুগামিতাকে ঢালাও উৎসাহ দিয়েছে।  ৪র্থ খলিফা আলি (মুহাম্মদের জামাই) মোট ১১টি বিয়ে করেছিলেন, ১ম খলিফা আবুবকর  করেছিলেন ৪টি, ২য় খলিফা ওমর করেছিলেন ৭টি,  ৩য় খলিফা ওসমান (মুহাম্মদের জামাই) করেছিলেন ৮টি  এবং মুহাম্মদের অতি আদরের বড়ো নাতি ইমাম হাসান করেছিলেন ১০০টি বিয়ে।  অবশ্য চারটির বেশী বউ তাঁরা একসঙ্গে রাখেন নি। তালাক দেওয়ার ক্ষেত্রেও ইসলাম অনুরূপভাবেই ব্যাপক উৎসাহ দিয়েছে পুরুষদের।  তা না হলে ইমাম হাসান ১০০টি বিয়ে করতে পারতেন না।  যখনই কোনো সুন্দরী ও যুবতী নারীকে তাঁর পছন্দ হয়েছে তখনই তিনি একজন বৌকে তালাক দিয়ে পছন্দের নারীকে বিয়ে করেছেন। এমনকি চারজন বউকে একসঙ্গে তালাক দিয়ে সেদিনই চারটি বিয়ে করেছিলেন তিনি। না, এর দ্বারা তিনি ইসলামের অনুশাসন লঙ্ঘন করেছেন এমন নয়ন।  কারণ, কোরানে এ রকম তালাক দেবার অনুমতি রয়েছে  ৪/২০ নং আয়াতে। আয়াতটি  হলো - “যদি এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করা স্থির করো, এবং তাদের একজনকে প্রচুর অর্থও দিয়ে থাক, তবু তার থেকে কিছু গ্রহণ করো না, ..।” এ তো এক বৌ-এর বদলে অন্য নারীকে বৌ করার ঢালাই লাইসেন্স।  কোরান এমনকি এও বলেছে যে বিয়ে করে বউকে স্পর্শ করার আগেই  তালাক দিতে পারো। এ প্রসঙ্গে কোরানের সেই মহান (!) ভাষ্যটি হলো – “যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ না করে অথবা তাদের প্রাপ্য নির্ধারণ করে তালাক প্রদান করে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই।” (২/২৩৬)  ফোনে কিংবা চিঠিতে তালাক, তালাক মোবাইলে টেক্সট মেসেজে কিংবা ইমেলে,   সব ধরণের তালাকই  ইসলাম সম্মত – এ কথা প্রাঞ্জল ভাষায় বলা হয়েছে  ভারতের  শরিয়ত আইনের  ৩৪৩ নং ধারায়।   ঐ ধারার কথাগুলো এ রকম -  “সুস্পষ্ট বাক্যে অথবা পরোক্ষ বক্তব্যে অথবা ইশারা- ইঙ্গিতে অথবা  লিখিতভাবে প্রদত্ত তালাক সংঘটিত হইবে।”  এই ধারা অনুসারেই ১৯৭৮ সালে শাহবানুকে তার বর  চিঠি দিয়ে তালাক দিয়েছিলেন।  সুপ্রীম কোর্ট ১৯৮৫ সালে সেটা খারিজ করে দিয়েছিলো।  অল ইণ্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড তখন   সেই তালাকের পক্ষ নিয়েই   সুপ্রীম কোর্টের রায়কে ইসলামবিরোধী বলে তাণ্ডব চালিয়েছিলো - এ কথা তো সর্বজন বিদিত।   কোরান এমনকি  এ কথাও বলেছে যে, তালাক দেওয়ার জন্যে মুখে তালাক বলা বা চিঠিপত্র লেখারও  দরকার নেই, শুধু নিয়ত (আপন মনে স্থির করা) করলেই হবে। (২/২২৬) এটাকে কোরানের পরিভাষায়   ‘ইলা তালাক’ বলে।  ‘ইলা তালাক’ অনুযায়ী  বর যদি বৌ এর সঙ্গে চার মাস যৌনমিলন না করে তাহলেই বৌ-এর তালাক হয়ে যাবে।  কোরান এভাবেই পুরুষদের  তালাক দেওয়াকে  যথেচ্ছ উৎসাহ  দিয়েছে। নিকাহ হালালা বা হিল্লা বিয়ের আইনটি নারীর পক্ষে সর্বাধিক অবমাননাকর।  কোরানে  ২/২৩০ নং ধারায় এর অনুমোদন রয়েছে।  কোরান বলেছে, “অতঃপর যদি সে তাকে তালাক দেয়, তবে সে তার জন্যে বৈধ হবে না, যে পর্যন্ত অন্য ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহিত না হবে” অন্য পুরুষটির সাথে শুধু বিয়ে হলেই হবে না,  তার সঙ্গে সহবাসে লিপ্ত হতেই হবে। তারপর যদি দ্বিতীয় পুরুষটি তালাক দেয় তবেই সে আগের বরকে বিয়ে করতে পারবে, অবশ্য আগের বর যদি সম্মত থাকে তবেই।  এক সঙ্গে তিন তালাক বৈধ নয় বলেও মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে  একদল ভণ্ড। এই ভণ্ডরা এটা জেনেও ভণ্ডামি করেন যে হাদিসে একসঙ্গে তিন তালাককে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। আর কে না জানে যে, হাদিস হলো কোরানের পরিপূরক ধর্মগ্রন্থ।
উপরের আলোচনায় এটা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, বহুবিবাহ ও  তালাকের ঘটনাগুলি মুসলিম ব্যক্তিগত আইন সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে ঘটছে – এ দাবী মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। সুতরাং ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ সচেতনতা অভিযান’ চালিয়ে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি যে ঘটবে না তা বলাই বাহুল্য। বস্তুত সেটা অল ইণ্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের আসল উদ্দেশ্যও নয়। তাদের উদ্দেশ্য  সুপ্রীম কোর্ট ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা যে কথা  আগেই বলেছি।
মুসলিম ব্যক্তিগত আইনটির আর একটি অন্ধকার দিক রয়েছে যে কথাটি না বললেই নয়। সেটা হলো, শরিয়ত আইনে কোনো পরিস্থিতিতেই মুসলিম নারীর তালাক দেবার অধিকার নেই। এবং সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে তালাকপ্রাপ্ত অসহায় নারীকে খোরপোষ দেবার বিধানও এই আইনে নেই।  সুতরাং  আইনটি নিঃসংশয়ে সম্পূর্ণ পুরুষকেন্দ্রিক, নারীবিরোধী ও নারীবিদ্বেষী।  সঙ্গত কারণেই ভারতের মুসলিম নারীগণ দাবি তুলেছেন -  মুসলিম ব্যক্তিগত আইন বাতিল  করে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার যুক্ত একটি বিকল্প আইন প্রণয়ন করতে হবে।  আশার কথা এই যে, সুপ্রীম কোর্ট তাঁদের দাবির প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেছে।  (৮/৫/১৭)
 [বিঃদ্রঃ – ১১ই মে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী সুপ্রীম কোর্টে শুনানী শুরু হয়েছে। সংবাদে প্রকাশ যে, সুপ্রীম কোর্ট জানিয়েছে যে এবার শুধু তালাকের উপরেই বিচার প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধ রাখা হবে।]  

  
 
  
 
          
  


KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...