Tuesday, March 7, 2017

শরিয়তি খোরপোষ আইনে নারীর প্রতি যে অন্যায় ও অবিচার করা হয়েছে তা নজিরবিহীন


পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় তালাকপ্রাপ্ত নারীর জন্যে খোরপোষ একান্ত অপরিহার্য। কারণ, এ সমাজে নারীর আত্মনির্ভরশীল হবার সকল পথই বন্ধ।  ফলে নারীকে আজীবন পুরুষের উপর পরনির্ভরশীল ও   মুখাপেক্ষী থাকতে হয়বিয়ের আগে থাকে পিতার উপর নির্ভরশীল, বিবাহিত জীবনে বরের উপর এবং শেষ বয়সে থাকে পুত্রের প্রতি নির্ভরশীল। ফলে  নারীকে তালাক দিয়ে যখন তার বিবাহবন্ধন ছিন্ন করে দেওয়া হয় তখন তার জন্যে খোরপোষ অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তুলনামূলকভাবে পুরুষদের প্রতি নির্ভরশীলতা মুসলিম নারীদের অন্যদের চেয়ে অনেক বেশী। কারণ,  পুরুষতন্ত্রের শিকল ভেঙে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে মুসলিমরাই সবচেয়ে বেশী পশ্চাদপদ স্বভাবতঃই তালাকপ্রাপ্তা মুসলিম নারীদের জন্যে খোরপোষের অপরিহার্যতাও অন্যদের চেয়ে অনেক বেশী।  কিন্তু এরূপ পরিস্থিতিতেও শরিয়তি তালাক আইনে তালাকপ্রাপ্ত নারীর জন্যে খোরপোষের বিধান নেই। তালাকপ্রাপ্ত বিবাহবিচ্ছন্ন অসহায় মহিলাদের  ভরণপোষণ কীভাবে চলবে সে বিষয়ে তালাক আইন সম্পূর্ণ নীরব মুসলিমরা কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল এবং উচ্চ ধারণা পোষণ করে। তারা  বিশ্বাস করে যে ইসলামই হলো একমাত্র ধর্ম,  যে ধর্ম নারীকে পুরুষের দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছে, পুরুষের সমান অধিকার ও স্বাধীনতা দিয়েছে, সর্বোপরি সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে এবং সর্বোপরি দিয়েছে তাদের জান-মালের নিরাপত্তাও কিন্তু মুসলিমদের সেই বনিশ্বাসের যে ভিত্তি নেই তা আমরা দখেছি তালাক আইনের পরতে পরতে। দেখেছি সেই আইনে একদিকে পুরুষের প্রতি সীমাহীন পক্ষপাতিত্ব, আর একদিকে নারীর প্রতি পাহাড় প্রমাণ অবিচার, বঞ্চনা ও বৈষম্য।  সেই একই ছবি বহাল রয়েছে  খোরপোষের ক্ষেত্রেও। মুসলিম নারীদের  খোরপোষ পাওয়ার ন্যায্য দাবি ও অধিকারকে নির্মমভাবে নস্যাৎ  করে দেওয়া হয়েছে। এবং তালাকপ্রাপ্ত এবং বিবাহবিছিন্ন অসহায় নারীদের খোরপোষ না দিয়ে অনিশ্চিত ও অন্ধকারে ভবিষ্যতের অতল গহ্বরে নির্মমভাবে ঠেলে দেওয়া হয়েছেএ কথাটা  মুসলিমদের কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকতে পারে,   এটাই কিন্তু বাস্তব এবং   সত্যি।  হ্যাঁ, ভারতীয় শরিয়ত আইন (আইনটির বাংলা সংস্করণ হলো বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন) তালাকপ্রাপ্ত অসহায় নারীদের  সত্যি  সত্যিই খোরপোষের  অধিকার দেয় নি এই আইনের  চতুর্দশ অধ্যায়টি সম্পূর্ণ খোরপোষ সংক্রান্ত। এই অধ্যায়ে ৩৭৯ নং থেকে ৩৯৬ নং পর্যন্ত মোট ১৭টি ধারা রয়েছে যার মধ্যে তিনটি উপধারা  বিশিষ্ট ৩৯৬ নং ধারাটি কেবল তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদের জন্যে সেই ধারাটির উপর  চোখ রাখা যাক -   
ধারা - ৩৯৬
তালাকপ্রাপ্তার খোরপোষ ও উপঢৌকন (মাতা)
·         (ক) ধারা (২৮৮*) মোতাবেক নির্জনে মিলন হওয়ার পূর্বে স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদান করিলে এবং মুহর ধার্য হইয়া না থাকিলে স্ত্রী কিছু উপহার সামগ্রী (মাতা) পাইবে এবং তাহা প্রদান করা স্বামীর জন্য বাধ্যতাকর; কিন্তু মুহর ধার্য হইয়া থাকিলে উপহার সামগ্রী প্রদান করা স্বামীর জন্য ঐচ্ছিক। (খ) ধারা (২৮৮*) মোতাবেক নির্জনে মিলন হইবার পর স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদান করিলে তাহার ইদ্দতকালের খোরপোষ ও বাসস্থান করা স্বামীর জন্য বাধ্যকর (গ) ইদ্দত চলাকালে স্বামী মারা গেলে সে খোরপোষ ও বাসস্থান পাইবে না, তবে সে তাহার  পরিত্যাক্ত মালে ওয়ারিশ হইবে। (২৮৮* - শরিয়ত আইনের ২৮৮ নং ধারা)
·          
৩৯৬ নং ধারায় তালাকপ্রাপ্ত মহিলাকে খোরপোষ যে দেওয়া হয় নইতা স্পষ্ট,  খোরপোষের বদলে  কিছু উপহার সামগ্রী দিতে বলা হয়েছেসেটাও আবার শর্ত সাপেক্ষে। শর্তটি হলো বিয়ের সময় মোহর (মুহর) ধার্য না করা থাকলে তালাকপ্রাপ্ত মহিলা কিছু উপহার সামগ্রী পাবে।  কিন্তু মোহর ধার্য  থাকলে উপহার পেতে পারে, না পেতেও পারে, কারণ উপহার দেওয়াটা তালাকদাতার জন্যে ঐচ্ছিক করা হয়েছে। কোনো আইনে নারীর প্রতি এতো অন্যায় ও অবিচার হতে পারে তা সত্যিই ভাবা যায় না। তাই মুসলিমদের হয়তো এটা মনে হতে পারে যে, এ আইনটি নিশ্চয়ই আলেমদের মস্তিষ্কপ্রসূত, কোরানের আইন নয়।  কিন্তু না, আলেমদের মস্তিষ্কপ্রসূত নয়। আইনটি আসলেই ইসলাম-সম্মত, এবং ওতে আলেমদের মনগড়া বিধি নেই বিধানটি তারা প্রণয়ন করেছেন কোরানের ২/২৩৬ এবং ২/৩৬৭ নং আয়াতের আলোকে। দেখুন ২/২৩৬ নং আয়াতটি কী বলছেঃ  “যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ না করে অথবা তাদের প্রাপ্য নির্ধারণ করে তালাক প্রদান কর, তবে তাতে কোনো দোষ নেই, এবং তাদেরকে কিছু সংস্থান করে দেবে, অবস্থাপন্ন লোক তাদের অবস্থানুসারে এবং অভাবগ্রস্থ লোক তার অবস্থানুসারে বিহিত সংস্থান (করে দেবে), সৎকর্মশীল লোকদের উপর এই কর্তব্য।” (অনুবাদ – প্রখ্যাত তফসিরকার ইবনে কাশির)  এই আয়াতের অথবা তাদের প্রাপ্য নির্ধারণ করে তালাক প্রদান কর’ - কথাগুলি এবং  ৩৯৬ (ক) ধারার   মুহর ধার্য হইয়া না থাকিলেকথাগুলি যে একই তা বলা বাহুল্যসুতরাং এটা সংশয়াতীতভাবে প্রমাণিত হলো যে ৩৯৬ (ক) ধারাটি  রচনা করা হয়েছে কোরানের ২/২৩৬ নং আয়াতের  ভিত্তিতে।    
এবার ৩৯৬(ক)ধারার ২য় অংশটি (মুহর ধার্য হইয়া থাকিলে উপহার সামগ্রী প্রদান করা স্বামীর জন্য ঐচ্ছিক) প্রসঙ্গে আসা যাক। এই অংশটি যে প্রণয়ন করা হয়েছে  ২/২৩৭ নং আয়াতের আলোকেই তা আয়াতটির কথা থেকেই প্রতীয়মান হয় কারণ, আয়াতটি বলেছে -  “আর যদি তোমরা তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বেই তালাক প্রদান কর এবং তাদের মোহর নির্ধারণ করে থাক, তবে যা নির্ধারণ করেছিলে তার অর্ধেক; কিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে কিংবা যার হাতে বিবাহ বন্ধন সে ক্ষমা করে অথবা তোমরা ক্ষমা কর তবে এটা ধর্মপ্রাণতার নিকটবর্তী; এবং পরষ্পরের উপকারকে যেন ভুলে যেও না; তোমরা যা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী।”  (অনুবাদ – ঐ) ৩৯৬(ক) ধারার ২য় অংশটি এবং  ২/২৩৭ নং আয়াতটি তুলনা করলে এটা স্পষ্টতঃই পরিলক্ষিত হয় যে আয়াত এবং আইনের ধারাটির মধ্যে অমিল বা গড়মিল নেই বললেই চলে। গড়মিল যেটুকু রয়েছে তা গণ্য করার মতো মোটেই নয়। মোহর ধার্য থাকলে তালাকপ্রপাপ্ত নারীকে উপহার সামগ্রী দেওয়াটাকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে আইনটিতে যে কথা কোরানের আয়াতে নেই। গড়মিল এতোটুকুই। অন্যদিকে কোরান প্রথমে নারীর মোহর অর্ধেক কেটে নিয়েছে এবং পরে বাকি অর্ধেকটা তাকে মাফ করে দিতে বলেছে। অর্থাৎ কার্যতঃ নারীকে তাদের মোহরের ন্যায্য অধিকার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করেছে। আলেমগণ কিন্তু তাদের  তৈরী করা আইনে  মোহরের ন্যায্য অধিকার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করেন নি। সুতরাং কোরান অপেক্ষা আলেমদের তৈরী করা এই আইনটি একটু কম অমানবিক বলেই প্রতিভাত হয়।   
শুধু কোরানের আলোকেই ৩৯৬(ক) ধারাটি প্রণয়ন করা হয় নি, আইনটির ভিত্তি যে হাদিসও - সে কথাটি জানিয়েছেন উক্ত আইন প্রণোয়নকারী বিশেষজ্ঞ আলেমগণ। তাঁরা ৩৯৬ নং ধারার শেষে তার প্রমাণ রেখেছেন। তারা এক্ষেত্রে দু’টি হাদিস উল্লেখ করেছেন। হাদিস দুটি হলোঃ  মহানবী (সঃ) বলেনঃ “তালাকপ্রাপ্তা নারী ইদ্দত পর্যন্ত খোরপোষ পাইবে।” (হিদায়া ২য় খণ্ড)  “হযরত উমর ফারুক (রা) তাঁহার খিলাফতকালে এই ফরমান জারি করেন যে, তালাকপ্রাপ্তা নারী তাহার ইদ্দতকাল পর্যন্ত তাহার তালাকদাতা স্বামীর নিকট হইতে খোরপোষ পাইবে।”  (ইমাম কুরতুবির আল-জামে লি-আহকামিল কুরআন, তখ, পৃ. ১৬৭)    
৩৯৬(খ) ধারায় বলা হয়েছে যে, তালাকপ্রাপ্ত নারীর ‘ইদ্দতকালের খোরপোষ ও বাসস্থান করা স্বামীর জন্য বাধ্যকর এরইএরই সূত্র ধরে  মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা দাবি করেন যে তালাকপ্রাপ্তদের খোরপোষ দেবার বিধান আছে। এর মধ্যে দিয়ে তারা ইসলামের মানবিক মুখটি তুলে ধরতে চায় এবং বলতে চায় যে দেখো,  ইসলাম নারীর প্রতি কতো সংবেদনশীল এবং সহানুভূতিশীল। কিন্তু এটা আসলে তাদের একটা চতুর প্রতারণা ও মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। কারণ, তাদের দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যে তালাকপ্রাপ্ত নারীদের ইদ্দতকালে খোরপোষ দেওয়া বাধ্যতামূলক বলা হয়েছে তারা প্রকৃত অর্থে তালাকপ্রাপ্ত নয়।  যাদের এক তালাক বা দু তালাক দেওয়া হয়েছে তাদের কথা বলা হয়েছে এখানে। এক তালাক এবং দু তালাক দেওয়ার পরেও তালাক ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে যে কথা ২/২২৯, ৬৫/১, ৬৫/২ প্রভৃতি আয়াতে বলা হয়েছে। এই ধরণের তালাককে শরিয়তের পরিভাষায় বলে ‘রিজঈ’ তালাক যা ফিরিয়ে নেওয়া যায়। অর্থাৎ এক ও দু তালাক দেওয়ার পরেও তালাকপ্রাপ্ত নারী তার বরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকে। এই সময়কালটাই শরিয়তের পরিভাষায় হলো ইদ্দতকাল (এক সঙ্গে তিন তালাক দিলেও তালাকপ্রাপ্ত নারীকে ইদ্দত পালন করতে হয়) বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকা নারীর ইদ্দতকালের সময়ে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সে যেন তার বরের বাড়িতেই থাকে এবং বরকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সে যেন তার বৌকে বাড়ি থেকে বের করে না দেয়। সুতরাং  এই সময়টা (ইদ্দতকালটা) তো সে (বর) তার বৌকে খোরপোষ দিতে বাধ্য। এখানে নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা ও সহানুভূতীশীলতার কথা বলা অবান্তর যা মিথ্যাচারের শামিল। প্রকৃত তালাক হলো তিন তালাক দেওয়া তা একসঙ্গেই হোক কিংবা তিন বারেই হোক। কারণ, এই তালাক হলো ইসলামের ভাষায় ‘বাইন’ তালাক  যা ফিরিয়ে নেওয়া যায় না  এবং এই ‘বাইন’ তালাকে বিবাহবন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়। এই তালাকপ্রাপ্ত নারীরাই হলো আসল তালাকপ্রাপ্ত নারী।  পুরুষদের অন্যায়ভাবে দেওয়া ‘বাইন’ তালাকের অভিঘাতে মুসলিম নারীদের জীবন যখন বিপন্ন হয়ে ওঠেসেক্ষেত্রে আইন এমন হওয়া উচিৎ  যাতে কেউ এভাবে একজন নারীরও জীবনকে বিপন্ন করতে না পারে। আর যদি করেও বা তাহলে জীবন বিপন্নকারী যাতে কঠিন শাস্তি  পায় তার ব্যবস্থা  থাকা উচিৎ। তারই পাশাপাশি  তালাকপ্রাপ্ত অসহায় নারী যাতে ন্যূনতম খেয়েপরে বাঁচতে পারে আইনে তার ব্যবস্থাও থাকা উচিৎ। শরিয়ত আইন এ সবের কোনোটাই করে নি।  যেমন তালাকপ্রাপ্ত ও বিবাহবিচ্ছিন্ন  অসহায় নারীকে বাঁচাতে তার খোরপোষের ব্যবস্থা করে নি এবং তালাকদাতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো পদক্ষেপ করে নি।  ফলে বিবেকহীন পুরুষরা  তাদের হীন স্বার্থ পূরণের জন্যে খেয়ালখুশি মতো যখন তখন তালাক দিতে পারে এবং প্রতিদিন কতো নারী যে তাদের খেয়ালখুশীর শিকার হয় তার ইয়ত্তা নেই।  
মূলকথা হলো শরিয়তি খোরপোষ আইন তালাকপ্রাপ্ত মুসলিম নারীকে খোরপোষ পাবার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ফলে তালাকপ্রাপ্ত নারীর যদি ধন-সম্পদ না থাকে (সচরাচর থাকে না) এবং তার পিতাও যদি গরীব হয় এবং মেয়ের ভার নেবার তার সামর্থ না থাকে, তবে  তালাকপ্রাপ্ত নারীর সামনে তিনটি পথ খোলা থাকে - এক. অনাহারে  মৃত্যুবরণ করা, অথবা দুই. দেহবিক্রীর ঘৃণ্য পেশা বা অনুরূপ কোনো আত্মহননকারী পেশা অবলম্বন করা, অথবা  তিন. আত্মহত্যা করা। ইসলাম নারীর খোরপোষের দাবিকে নস্যাৎ করে তাদের সে পথেই ঠেলে দিয়েছে।      

(বিঃদ্রঃ এই লেখাটি আমার ‘নারী ও ইসলাম’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া। লেখাটা পড়লে কিছুটা তার আঁচ পাওয়া যাবে। ‘নারী ও ইসলাম’ গ্রন্থটি লেখার কাজ চলছে, তবে শেষ পর্যায়ের লেখা চলছে এখন। কোনো সমস্যা হঠাৎ এসে পথ রোধ করে দাঁড়ালে খুব শীঘ্রয় গ্রন্থটি লেখা শেষ করতে পারা যাবে আশা করি।  ০৭.০৩.২০১৭)  






KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...