Thursday, November 3, 2016

বাংলাদেশে সংখালঘুদের উপর হামলা অব্যাহত, অব্যাহত ‘ব্লেম গেম’ এর রাজনীতিও – রহস্যটা কী?



খুব সম্প্রতি রূপা গাঙ্গুলি বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন শেষে ঢাকা থেকে ফিরে এসে সাংবাদিকদের বলেন যে সে দেশে হিন্দুরা নিরাপদে আছে। রূপার এ কথা আসলে her master’s voice (হাসিনাজির কথা) বৈ নয়। আমি তাঁর এ কথার  প্রতিবাদে টুইট করেছিলাম – "Most probably what Rupa said is not true."  আমি জানি যে সংখ্যালঘুরা মোটেই নিরাপদে নেই। তবুও রূপা যেহেতু রাজ্যসভার সাংসদ তাই  সৌজন্যবশতঃ তাঁর ঐ  বাজে কথার কড়া প্রতিক্রিয়া দিই নি। রূপা যে ভুল বলেছিলেন তাঁর জবাব মাত্র দিন কয়েক পরই তিনি পেয়ে গেছেন। গত ৩০শে অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় এবং হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর বাজারে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর লুটপাট এবং মন্দির ও বিগ্রহ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে ২ দিন আগে একজন হিন্দু  যুবকের ফেসবুকে দেওয়া ইসলাম-বিদ্বেষী একটি পোষ্ট-এর প্রতিক্রিয়ায়। রসরাজ নামের সেই যুবকটি ফটো এডিট করে কাবার গায়ে শিবের ছবি জুড়ে দেয় উক্ত ঘটনার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ছেলেটিকে মারধোর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তবুও তারই জেরে নিরপরাধ ও নিরীহ হিন্দু জনগণকে ভয়াবহ হামলার শিকার হতে হলো   
‘উল্টা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত’‘খাঁটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত’ নামে দু’টি মুসলিম মৌলবাদী সংগঠনের নেতৃত্বে কয়েক শ’ সশস্ত্র মুসলমান উক্ত হামলা চালায়হামলায় হিন্দুদের মারধোর, তাঁদের বাড়ি-ঘর লুটপাট, মন্দির ও বিগ্রহ  ভাঙচূরের ঘটনা ঘটে অবাধে। পুলিশ যথারীতি আসে অনেক বিলম্বে, তার আগে দেড় ঘণ্টা ধরে চলে তাণ্ডব। মুসলমানদের হাতে সংখালঘুরা আক্রান্ত হলে তাদের বাঁচাতে পুলিশ কোনো তৎপরতা দেখায় না, বাংলাদেশে এটাই দস্তুর। বিএনপি কিংবা  আওয়ামী লীগ, সরকারে যারাই থাক, পুলিশের কাজের এই ধারা কম বেশী একই থাকে। আর বিলম্বে এসে পুলিশ যা করে তাতে সংখ্যালঘুরা আশ্বস্ত হওয়ার বদলে আরো বেশী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কারণ,পুলিশ সাধারণতঃ সন্ত্রাসী হানার ঘটনাকে লঘু করে দেখায় এবং হামলাকারীদের আড়াল করে থাকে  নাসিরনগর ও মাধব বাজারের ঘটনাতেও এর ব্যত্যয় ঘটে নি। পুলিশ যথারীতি ‘উল্টা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’ এবং ‘খাঁটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত - কে আড়াল করে দোষ চাপিয়েছে দুষ্কৃতিদের ঘাড়ে এবং আক্রান্ত বাড়ি-ঘর ও মন্দিরের সংখ্যা দেখিয়েছে বেশ কম করেনাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের  বলেছেন যে দুর্বৃত্তরা কুড়িটি বাড়ি ও পাঁচটি মন্দির ভাঙচুর করেছে। কিন্তু স্থানীয় সাংবাদিক মাসুদ হৃদয় বলেছেন যে নাসিরনগরের আটটি হিন্দু পাড়ায় (দত্তপাড়া, ঘোষপাড়া, গাংকুলপাড়া, মহাকালপাড়া, কাশিপাড়া, নমশুদ্রপাড়া, মালিপাড়া ওইশীলপাড়া) অন্তত তিনশটি বসতঘর এবং দশটি মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। অন্য একটি সংবাদ সূত্র বলেছে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরের সংখ্যা ১৫টি। মাসুক আরো জানিয়েছেন যে যখন লুটপাট ও ভাঙচুর চলছিলো তখন ঘটনাস্থলের আধ কিমি দূরে  আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’-এর বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিলো। সেই সমাবেশ থেকেই যে হিন্দুদের উপর আক্রমণ করার জন্যে প্ররোচিত করা হচ্ছিল তা বলা বাহুল্য।    
 

পুলিশ অবশ্য যথারীতি গোটা ঘটনার দায় দুর্বৃত্তদের কাঁধে চাপিয়ে বলেছে যে কোনো একটা চক্র সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে এ হামলা সংঘটিত করেছে। রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা বলছেন, পুলিশের এটা বাঁধা গদের বয়ান আর চক্র-টক্র নয়, আওয়ামী লীগ তো সরাসরি হামলার দায় চাপিয়েছে বিএনপি-র ঘাড়ে অপরদিকে বিএনপি-সহ গোটা বিরোধী পক্ষই শুধু আঙুল তুলছে শাসক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।  এভাবেই তারা পরষ্পরকে দোষারোপ করে সুকৌশলে মূল অপরাধী মুসলিম সন্ত্রাসবাদীদের আড়াল করতে চাইছে।  এটাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি কোনো সরকারই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে বা হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে আগ্রহী নয়। নাস্তিক ব্লগারদের হত্যার ক্ষেত্রেও তাই হয়। এটা বাংলাদেশে ‘ব্লেম গেম’ – এর রাজনীতি বলে খ্যাত। এ  প্রসঙ্গে বাংলাদেশশের একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বলেছেন, ‘ব্লেম গেমে অপরাধীরা আড়ালে চলে যাচ্ছে।’ আর একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক ও লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘দেশের প্রধান দু’টি দল মনে করে দোষারোপের সংস্কৃতি দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিক করা যাবে।’ (সূত্রঃ প্রথম আলো, ২৭.৬.১৬)
বাংলাদেশে  সংখ্যালঘুদের উপর সহিংস অত্যাচার ও নির্যাতনের ঘটনার বিরাম নেই। বন্ধ হওয়ার লক্ষণও নেই। স্বভাবতই দু’টো প্রশ্ন ক্রমশঃ বড়ো হয়ে উঠছে। প্রশ্ন - এক).সংখ্যালঘুদের উপর মুসলিমরা (পড়ুন ঈমানদার মুসলিমরা, সব  মুসলিম নয়) কেন হামলা করে এবং এ হামলা বন্ধ হয় না কেনো? প্রশ্ন – দুই). প্রত্যেকটি হামলায়  সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি হামলাকারীদের কেনো আড়াল করে? কী তাদের স্বার্থ? দ্বিতীয় প্রশ্নটার উত্তর আগে দি। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি আসল অপরাধীদের আড়াল করে প্রধানত যে কারণে তার দুটি দিক আছে। একটি হলো রাজনৈতিক, এবং অন্যটি হলো অর্থনৈতিক, তবে এ ছাড়া অন্য কারণও আছে। রাজনৈতিক কারণটির আবার দুটি ভাগ আছে। তা হলো, এক). সংখ্যালঘুদের মনের মধ্যে মুসলিম মৌলবাদীদের জুজুর ভয় জিইয়ে রাখা যাতে তারা ভয়ে তাদের (পড়ুন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি) ছত্রছায়ায় থাকতে বাধ্য হয়। এবং দুই). হামলাকারীদের দলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলের নেতা-কর্মীরাও সামিল থাকে। রাজনীতির ময়দানে এই দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যতোই দ্বন্দ থাক, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করার সময় তারা সব দ্বন্দ ভুলে এক হয়ে যায়।  তখন দলীয় পতাকা  রেখে ইসলামের পতাকার নীচে জোটবদ্ধ হয়ে সংখ্যালঘুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দলীয় এই নেতা-কর্মীদের  ঝাঁপিয়ে পড়ার পেছনে অর্থনৈতিক কারণ বা স্বার্থটি হলো সংখ্যালঘুদের টাকা-পয়সা, জিনিষপত্র ও গয়নাগাঁটি লুট করা, এবং  জমি-জায়গা ও  ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করা।  একটি সমীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে যে শত্রুসম্পত্তি আইনের প্যাঁচে ফেলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হিন্দুদের ৬০% শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে। এ তথ্যটি  জানিয়েয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হায়দার আকবর খান রনো। (সূত্রঃ ঐ)  আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-র সাংসদরা যে সংখ্যালঘুদের জমি দখলে জড়িত সে কথা বলেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সদস্য এবং আইন সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালগতো গতো ৯ই জানুয়ারী ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে তিনি বলেন যে, ক্ষমতাবানরা বিভিন্নভাবে দুর্বলের জমি সম্পত্তি  দখল করছে। সম্পদ পরিবারের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বেশিরভাগ জায়গায় সংসদ সদস্য মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আসছে  তাঁর দেওয়া একটি রিপোর্টে সরাসরি কয়েকজন মন্ত্রী ও সাংসদের নাম উঠে এসেছে যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের  সাংসদ  দবিরুল ইসলাম,  পিরোজপুরের সাংসদ কে এম আউয়াল, দিনাজপুরের পার্বতীপুরেসাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার  এবং  রয়েছে ফরিদপুরেমন্ত্রীর নামও। (সূত্রঃ  http://www.thebengalitimes.com/politics/2016/01/09/9817) সংখ্যালঘুদের উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে আড়াল করার পেছনে অন্য যে কারণটি রয়েছে সেটি উল্লেখ করবো শেষে। 
এবার প্রথম প্রশ্নের প্রসঙ্গে আসা যাক। হিন্দুদের উপর মুসলমানরা কেনো আক্রমণ করে এবং এ আক্রমণ কেনো বন্ধ হয় না? প্রশ্নটির দ্বিতীয় অংশের উত্তরটি আগে দি। উত্তরটি উপরেই রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, সরকার চাই না এটা বন্ধ হোক। সত্যিই যে চাই না তার প্রমাণ হলো  সংখ্যালঘু  নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না করা।  এটা যে নিছক একটি অভিযগ নয় তার প্রমাণ রয়েছে এ তথ্যটিতে। তথ্যটি হলো - ২০০১ সাল থেকে পরবর্তী ১৩ বছরে কুড়ি হাজার সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে যেসব ঘটনায় সংখ্যালঘুরা ছ’ হাজারের বেশী নিহত  এবং ষাট হাজারের বেশী আহত হয়েছেন।   আহত মানুষদের মধ্যে বারো হাজার মানুষকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর  মুসলমানদের হামলা, নির্যাতন ও লুটপাটের ঘটনায় ক্ষতির পরিমান লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে এবং লক্ষাধিক সংখ্যালঘু নিঃস্ব হয়ে পড়েছেনকুড়ি হাজার  সশস্ত্র হামলার ঘটনাতে একজনও শাস্তি পাই নি। এই হাড় হিম করা তথ্যটি নিশ্চিতভাবেই প্রমাণ করে যে কোনো সরকারই সংখ্যালঘুদের  উপর মুসলিম সন্ত্রাসীদের হামলা বন্ধ করতে চাই না। (উপরের তথ্যটি ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ কাগজ থেকে সংগৃহীত, সূত্রঃ  http://www.bd-pratidin.com/last-page/2014/01/11/37182) আর নাসিরনগরের হামলা সম্পর্কে মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো আরো ভয়ঙ্কর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, “পরিকল্পিতভাবে অনেকপ্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণেই হামলা চালানো হয়েছে।”  তিনি আরো বলেছেন যে “এ পরিস্থিতিতে হিন্দুদের বাংলাদেশ ত্যাগ বাড়তে পারে।”(সূত্রঃ  http://www.thebengalitimes.com/politics/2016/11/02/20919)


এবার উত্তর দেওয়া যাক মুসলমানরা কেনো সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়? মুসলমানরা  (ঈমানদার মুসলমানরা) প্রধানতঃ ধর্মীয় কারণেই এ ধরণের হামলা চালায়। বিষয়টা খোলসা করা যাক। মূর্তিভাঙা হলো ইসলামি সংস্কৃতির অঙ্গ। আফগানিস্তানে তালিবান জামানায় সমস্ত বামিয়ান মূর্তি ধ্বংস করে দেয়া হয়। ইরাক ও সিরিয়ায় অধিকৃত  অঞ্চলসমূহের সমস্ত মূর্তি ও ভাস্কর্য সম্প্রতি ধ্বংস করে দিয়েছে আইএস। সৌদি আরবে  যতো মন্দির ও বিগ্রহ ছিলো তা কবেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আর যে কথা আমাদের জানা দরকার তা হলো এই যে মূর্তিভাঙা সংস্কৃতির প্রচলন করেছিলেন মুহাম্মদ স্বয়ং। ৬৩০ খৃস্টাব্দে মক্কা দখল করে প্রথমেই তিনি কাবা গৃহের সমস্ত (৩৬০টি) মূর্তিই ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। মূর্তি ধ্বংস করা প্রসঙ্গে এ যুগের খ্যাতনামা ধর্মগুরু ও ইসলাম ধর্মের প্রচারক ডা জাকির নায়েক যা বলছেন তা খুবই প্রণিধানযোগ্য। কি বলেছেন  শুনুন এই ভিডিওটায় -https://youtu.be/049N05V48C8। আর অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে হামলা (ইসলামের পরিভাষায় জিহাদ বা যুদ্ধ) করা তো হলো ইসলামের প্রধান নীতি। এ বিষয়ে কোরানে অসংখ্য আয়াত বা অধ্যাদেশ রয়েছে। কোরান প্রাঞ্জল ভাষায় ঘোষণা করেছে যে, 'পৃথিবীতে অবিশ্বাসীদের ঠাঁই নেই।' এ প্রসঙ্গে কোরানের একটি ভাষ্য হলো এ রকম - ‘পৃথিবীতে কোনো অবিশ্বাসী গৃহবাসীকে তুমি অব্যাহতি দিও না (৭/১২৬) আর অবিশ্বাসীমুক্ত পৃথিবী গড়তে কোরান কী বলেছে তার একটা নমুনা দেখুন। -  “জিহাদ করো তাদের সঙ্গে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস করে না আর আখেরাতের দিনেও না, আর নিষেধ করে না যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নিষেধ করেছেন, আর সত্য ধর্মে ধর্মনিষ্ঠা পালন করে না।” ( ৯/২৯) এরূপ আরো অনেক আয়াত আছে কোরানে। কোরানের এ আয়াতগুলি আবৃত্তি করেই মুহাম্মদ ক্ষান্ত থাকেন নি। তিনি মৃত্যশয্যায় তাঁর সাহাবিদের আরবকে মুশরিক-মুক্ত করার নছিহত করে গিয়েছেন।  নছিহতটি হলো - “কোনও মোশরেক যেন আরবে থাকতে না পারে।” (দ্রঃ- মৃত্যুর দুয়ারে মানবতা, মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, ইসলামিয়া লাইব্রেরী ঢাকা, পৃ – ১৬)  কোরান ও মুহাম্মদের এই আদেশ কার্যকর করাই হলো বাংলাদেশের ঈমানদারমুসলমানদের মূল লক্ষ্য, শুধু টাকা-পয়সা ও জমি-জায়গা লুট করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য নয়। অর্থাৎ বাংলাদেশকে মুশরিক-মুক্ত করার মহান(!) লক্ষ্য নিয়েই সংখ্যালঘুদের উপর ঈমানদার মুসলমানরা হামলা ও নির্যাতন চালায়। 


পরিশেষে বলি যে, সরকারের সর্বস্তরে অর্থাৎ মন্ত্রী ও সাংসদ থেকে শুরু করে সরকারি  সাধারণ প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যেকটি শাখায় ছড়িয়ে রয়েছে মুসলিম মৌলবাদীদের লোকেরা। এই আধিকারিকগুলো (যাদের মধ্যে সচিব থেকে ডিম এবং ডিজি থেকে থানার বড়ো বাবু রয়েছেন) ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রতি মোটেই দায়বদ্ধ নয়, তারা বরং দায়বদ্ধ মোশরেক মুক্ত বাংলাদেশ তথা ইসলামি বাংলাদেশ গড়ার ঈমানদারী কাজে। সেজন্যেই ঈমানদার মুসলিমরা সংখ্যালঘু তথা মোশরেকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় তখন প্রশাসন নিষ্ক্রিয় থাকে এবং হামলাকারী ঈমানদার মুসুলমানরা যাতে শাস্তি না পায় তার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করে।                   
      
       

    
      

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...