Tuesday, March 15, 2016

মমতার মুখোশ উন্মোচনে নজরুল যতোটা সফল ততোটাই ব্যর্থ মুসলমানদের সঠিকপথের দিশা দিতে



নজরুলের ‘মুসলমানদের করণীয়’ মমতা ঘুর পথে নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন । কিন্তু প্রবল প্রতিবাদের জন্যে পারেননি । বইটিতে অবশ্য তাঁর রুষ্ট হওয়ার যথেষ্ট উপাদান আছে । লেখক লিখেছেন মমতা মুসলমানদের উওন্নতির নামে যা যা করেছেন তাতে তাঁদের কোনো কল্যাণ হবে না ।  আসলে তিনি মুসলমানদের কল্যাণের জন্যে করেননিও, করেছেন  কেবল তাঁদের ভোট নেবার জন্যে । এটা যে মুসলমানদের সঙ্গে প্রতারণা যেমনটা সিপিএমও করেছে, তা বলা বাহুল্য । নজরুল মমতার এই প্রতারণার মুখোশটি উন্মোচন করতে চেয়েছেন এবং দক্ষতার সাথে করেছেনও । হজে ভর্তুকি, ইমাম ভাতা, মাদ্রাসা, সংরক্ষণ, ইফতার পার্টিতে যাওয়া, প্রভৃতি প্রতিটি প্রশ্ন ধরে ধরে তিনি দেখিয়েছেন মমতা কীভাবে মুসলমানদের সাথে প্রতারণা করছেন ।
হজে ভর্তুকি তুলে দিতে বলেছে সুপ্রীম কোর্ট, তবু মমতার সরকার প্রত্যাহার করছে না, কারণ তাতে নেতা-নেত্রীদের স্বার্থ জড়িয়ে আছে ।  এ প্রসঙ্গে তিনি ইসলামেওর বিধানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, যাদের সামর্থ আছে তাদের জন্যেই কেবল হজ করার বিধান । তাই হজে ভর্তুকিতে সাধারণ মুসলমানের  স্বার্থ নেই । ইমামদের ভাতা দেওয়াকে তিনি ইমামদের সঙ্গে আরো বড়ো প্রতারণা বলে উল্লেখ করেছেন । তিনি লিখেছেন, ‘খলের ছলের অভাব হয় না । কয়েকটি মামলা তো হয়েই আছে রাজ্যে। দরকার হলে আরো কয়েকটি হবে । সে মামলায় রায় হয়ে যাবে সরকারী অর্থে ইমামদের  ভর্তুকি দেওয়া যাবে না । তখন ইমামদের আমও ছালা যাবে ছালাও যাবে ।’ (পৃ-৮০) তিনি আরো লিখেছেন, ‘দু - চারজনকে ভাতা দেওয়া হবে । বাকিরা ওই দু-চারজনের মধ্যে ঢোকার  জন্য নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মরবেন । মামলায় জড়িয়ে আবার শাসক দলের নেতাদের পিছন পিছন ঘুরবেন ।’
১০০০০ হাজার মাদ্রাসাকে অনুমোদন দেওয়ার ঘোষণাকে শুধু মুসলমানদের সঙ্গে প্রতারণা বলেই ক্ষান্ত থাকেননি নজরুল । এটাকে তিনি উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন । তিনি লিখেছেন “তাঁরা চান, মুসলমানরা ...  খারিজি মাদ্রাসায় ছেলে মেয়েদের পাঠিয়ে  বেশী সংখ্যায় মসজিদের ইমাম বা এ রকম খারিজি মাদ্রাসার দু-তিন হাজারের চাকরি নিয়ে অনাহারে বা অর্ধাহারে থাকুক । সেই সুযোগে ব্রাহ্মণ-বৈদ্য-কায়স্থ সন্তানরা নেতা-মন্ত্রী হোক, আই.এ.এস, আই.এফ.এস, আই.পি.এস, আই.এর.এস পভৃতির মতো সেবায় গিয়ে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি, চিফ সেক্রেটারি, হোম সেক্রেটারি, ডি.জি, সি.পি, ডি.এম, এস.পি হোক ।” নজরুল আরো লিখেছেন  যে মমতা মুসলমানদের ভীষণ বোকা ভাবেন  এবং  মনে করেন যে মাদ্রাসার সুড়সুড়ি দিয়ে তাদের ভোট আদায় করা সম্ভব । এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, “আবার ভোটের জন্য মুসলমান এলাকায় স্কুল তৈরী না করে দুয়েকটা মাদ্রাসাকেই অনুমোদন দেব । বলব, ‘ওরা ৩৪ বছরে মুসলমানদের জন্য কিছুই করেনি । আমরা করব ।’  তারপর ক্ষমতায় এসে কিছুদিনের মধ্যেই বলে দেব, ’৯০ শতাংশ কাজই করে দিয়েছি, তা মানতেই হবে ।’ মুসলমানরা এসব কিছু বোঝে নাকি ? যে মুসলমানদের জন্য কিছু করতে হবে ?”  (পৃ-৮২,৮৩)
মুসলমানদের সংরক্ষণ দেওয়াটাও একটা মস্ত বড়ো ধাপ্পা বলেছেন নজরুল । বলেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদে চাকরিতে সংরক্ষণ পেলে মুসলমানদের কোনো লাভ হবে না । তিনি এ প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন । বলেছেন মরার সময় হরিনাম করার মতো যাবার সময় মুসলমানদের জন্য সংরক্ষণ  ঘোষণা করে গেছে । এ প্রসঙ্গে তিনি মমতার আন্তরিকতা নিয়ে গভীর সন্দেহ প্রদর্শন করেছেন। এমনকি তিনি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনও বলেছেন । তিনি লিখেছেন মুসলমানদের সংরক্ষণ নিয়ে যখন মামলা চলছে সে সময় একটি জনসভায় (১৯.০৪.১২) তিনি ঘোষণা করে দিলেন যে, একমাসের মধ্যে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং সরকারি চাকুরিতে সংরক্ষণের অর্ডার বের করে দেবেন । তিনি লিখেছেন যে মমতা কথা রাখেননি । এ প্রসঙ্গে নজরুল লিখেছেন, “কোন অর্ডার বের হয়নি । ঘোষণা দেওয়ার দরকার ছিল । দিয়ে দিয়েছেন । প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা তাঁর দফায়িত্বের মধ্যে পড়ে না ।”  (পৃ-৮৮)
নজরুল বোধ হয় সব চেয়ে বেশী চটেছেন মমতার এফতার পার্টিতে গিয়ে ‘খোদাহাফেজ’, ‘ইনশাল্লাহ’ বলার জন্যে । এর জন্যে মমতাকে ক্ষমতাখোর বলে তীব্র কশাঘাত করেছেন । তিনি লিখেছেন ঐ শব্দগুচ্ছগুলোর মানে-মতলব কিছু না বুঝেই শুধু ভোটের জন্যে ওসব করেন মমতা । তিনি এটাকে মুসলমানদের নেশাগ্রস্ত করে ভোট নেওয়ার ছল বলতে চেয়েছেন । লিখেছেন, “নেশাখোররা যেমন মাদকতার মাত্রা বাড়ানোর জন্য নেশার দ্রব্যের সঙ্গে ধুতুতার বিচি মিশিয়ে দেয় তেমনি এই ক্ষমতাখোররা ক্ষমতা লাভের জন্য বক্তৃতার মাঝে ভুলভাল যায়গায় উচ্চারণ করছেন, ‘খোদাহাফেজ ইনশাল্লাহ’ । এটা ন্যাক্কারজনক ।” (পৃ-৯২,৯৩)
মুসলমানদের বন্ধু সেজে থাকাটা মমতার একটা মুখোশ – এই মুখোশ উন্মোচন করাটা এই বইটার একটা উদ্দেশ্য যেটা খুব ভালো ভাবেই সম্পন্ন করেছেন নজরুল । এছাড়া বইটিতে আরো দু’টি অংশ আছে । একটা হলো মুসলমানরা কেনো পিছিয়ে সে বিষয়ে ল্পোকপাত করা এবপং আরেকটা হলো মুসলমানদের কী করণীয় তার পরামর্শ দেওয়া বা দিক নির্দেশনা দেওয়া । প্রথম উদ্দেশ্যটি  পূরণে নজরুল যতোটা সফল, বাকি অংশ দুইটিতে ততোটাই ব্যর্থ । এই দু’টি অংশই আমি মনে করে প্রথম অংশ অপেক্ষা  অধিক গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু পাঠকদের কাছে বইটির মূল ফোকাস চলে গিয়েছে প্রথম অংশেই । সেটা যতোটা না লেখকের লেখনির জন্যে তার চেয়ে বেশী মমতার সৌজন্যে । কারণ, মুসলমানদের প্রতি মমতা কীরূপ প্রতারণা করেছেন সেটাই জানার আগ্রহ মুসলমানদের বেশী এবং এ বিষয়ে নজরুল কী লিখেছেন তা মানুষের জানার কৌতূহল ছিলো বেশী ।
নজরুল লিখেছে ব্রাহ্মণ-বৈদ্য-কায়স্থ প্রভৃতি উচ্চ বর্ণের মানুষরাই মুসলমানদের পিছিয়ে দিয়েছে এবং পিছিয়ে রেখেছে । হিন্দু সমাজের বর্ণ প্রথাকে মুসলমানদের ‘শোষণের নির্মম যন্ত্র’ বলে চিহ্নিত করেছেন। লিখেছেন, “ঋগ্বেদ থেকে কৌটিল্যের অর্থসঘাস্ত্র, মনুসংহিতা, রামায়ন-মহাভারত প্রভৃতি মনুবাদী বা   ব্রাহ্মণবাদী বিধান আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে ।”  (পৃ-৩৮) নজরুলের এই মূল্যায়ন সম্পূর্ন অবৈগানিক, অবাস্তব এবং অনৈতিহাসিক । তিনি মুসলমান ও নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের সমস্যাকে আন্তর্জাতিক্ব জাতীয় পুঁজিবাদী ব্যবস্থা থেকে আলাদা করে দেখেছেন । তার ফলে একটা গুরুতর ভ্রান্তির শিকার হয়েছেন তিনি এবং তার ফলে মুসলমানদের যে পথ নির্দেশ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাতে রয়ে গেছে গুরুতর ত্রুটি ও ভ্রান্তি ।
যে কোনো সমাজ দাঁড়িয়ে থাকে অর্থনৈতিক নীতি ও তার ভিতের উপর ।  জাত-পাত এবং বর্ণ প্রথা এসব সমাজের উপরি কাঠামো । একেক দেশে এবং  মানব সমাজের একেক জাতি-উপজাতি ও গোষ্ঠীতে তা একেক রকম হয় আসল হলো অর্থনৈতিক নীতি ও বন্টন ব্যবস্থা ।  সেটা ঠিক হয় শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গী অনুসারে, জাত-পাত বা বর্ণ প্রথার উপরে নয় । অর্থনীতি ও বন্টন ব্যবস্থা নির্ধারণ করা হয় হয় শোষক শ্রেণির স্বার্থে না হয় শোষিত শ্রেণির স্বার্থে ।  রাষ্ট্রের এই নীতিই ঠিক করে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাটা ঠিক কীরূপ হবে । প্রত্যেকটি দেশের সরকার পরিচালিত হয় সেই  সেই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা (system ) অনুসারে ।  সরকারকে তাই আপাত দৃষ্টিতে আমজনতার (Government is of the people, by the people, for the people)  এবং শ্রেণি নিরপেক্ষ মনে হলেও আসলে সে কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে । প্রত্যেকটি সরকারের অবশ্যই একটা শ্রেণি চরিত্র থাকে । আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত হয় মূলতঃ বৃহৎ পুঁজিপতি শ্রেণির দ্বারা।  সামন্ত শ্রেণির সাথে অবশ্য গাঁটছড়া রয়েছে বুর্জোয়া শ্রেণির । প্রণব-মমতা এবং বিমান-বুদ্ধবাবুরা উচ্চ বর্ণের মানুষ হলেও  তাঁরা  শোষক শ্রেণিগুলির স্বার্থই রক্ষা করেন । করতেই হয় । পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পুঁজিবাদী অর্থনীতির মধ্যে থেকে এর বাইরে যাওয়ার উপায় নেই । আর তাছাড়া সিপিএম ও সিপিআই নামে কম্যুনিস্ট পার্টি হলেও আসলে পরিণত হয়ে গিয়েছে পেটি বুর্জোয়া পার্টিতে । তাই বুদ্ধ বাবু ও বিমান বাবুরা নিজেরা উচ্চ বর্ণের মানুষ হলেও এবং নিজেদের কম্যুনিস্ট বলে দাবি করলেও  তাঁরা প্রধানতঃ বুর্জোয়া শ্রেণিরই  প্রতিনিধিত্ব করেন । তাই প্রণব-মমতা ও বুদ্ধ-বিমানরা উচ্চ বর্ণের লোক  বলে উচ্চ বর্ণের স্বার্থে সরকার পরিচালনা করেন না । তা করলে এ দেশে এবং এ রাজ্যে উচ্চ বর্ণের লোকেরা কেউ দরিদ্র থাকতেন না ।  তাই বাস্তবটা হলো এই যে কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের মধ্যে লক্ষ লক্ষ উচ্চ বরণের মানুষরাও আছেন । আবার এর বিপরীত ঘটনাও আছে । নিম্ন বর্ণের মানুষের মধ্যেও  সংখ্যায় নগণ্য হলেও কিছু কোটিপতি ও শিল্পপতি আছেন । আছেন সব থেকে পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু মুসলমানদের মধ্যেও । পতাকা বিড়ি, হাওড়া বিড়ি, শিব বিড়ি প্রভৃতি বিড়ি কোম্পানীর মালিকরা সবাই মুসলমান । এ রাজ্যে বিড়ি শিল্পটা মূলতঃ মুসলমানদের দখলেই ।  বুর্জোয়া রাষ্ট্রে এ রকমটা হয়েই থাকে । পুঁজিপতি ও শিল্পপতিগণ শিল্প ও ব্যবসা করেন মুনাফার লোভে । তাঁরা নিজে কোন জাত ও গোত্রের লোক, যাঁদের শোষণ করছেন তাঁরা কোন জাত ও গোত্রের লোক তার বিচার  করেন না ।
নজরুল মুসলমান ও নিম্ন বর্ণের মানুষদের ডাক দিয়েছেন উচ্চ বর্ণের মানুষদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্যে এবং সে উদ্দেশ্যে সংগঠন বা রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার জন্যে । তিনি বলেছেন এটা করলে তাঁরাও (মুসলমান ও নিম্ন বর্ণের মানুষরা)  ক্ষমতা দখল করতে পারবেন যেমন পেরেছেন লালু প্রসাদ যাদব, মুলায়ম সং যাদব, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী প্রমুখ নিম্ন বর্ণের মানুষরা । মূল অর্থনীতির পরিবর্তন ব্যতীত ভোটে জিতে সরকারি ক্ষমতা দখল  করলেও যে পুঁজিপতি ও শিল্পপতিদেরই স্বার্থ রক্ষা করতে হয় এবং দরিদ্র শ্রেণির দারিদ্র মোচন করা যায় না এই বাস্তব সত্যটা নজরুলের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছে । তাঁর দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছে যে বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তর প্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যের নিম্ন বর্ণের মানুষরাও যে তিমিরে ছিলেন সে তিমিরেই রয়ে গেছেন এবং তাঁদের আর্থিক অবস্থা ও সামাজিক অবস্থানের কোনো পরিবর্তনই হয়নি । নিম্ন বর্ণের মানুষ যাঁরা ক্ষমতা লাভ করেছেন তাঁরাই কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ ধনী ও কোটিপতি হয়েছেন মাত্র ।
নজরুল আর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে গেছেন । মুসলমানরা পশ্চাদপদতার জন্যে তাঁরা নিজেরাই যে অনেকটা দায়ী সে বিষয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননিএকটি শব্দ ব্যয় করেননি মোল্লাতন্ত্রের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও । কিন্তু মোল্লাতন্ত্রই সবচেয়ে বড়ো বাধা মুসলমানদের উন্নতি ও অগ্রগতির পথে । শরিয়তি আইন ও সংস্কৃতির দ্বারাই আজো মুসলিম সমাজ পরিচালিত হচ্ছে । এ বিষয়ে আলোচনা করার অবকাশ নেই এখানে । শুধু এটুকুই বলতে চাই যে, শরিয়তি আইন ও সংস্কৃতি এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংস্কৃতির (যা মুসলিম সমাজকে পিছন দিকে টানছে) নাগপাশ  ছিন্ন  করে উন্নতি ও বিকাশের পথ ধরতে হলে সর্ব্রাগ্রে  মোল্লাতন্ত্রকে পরাস্ত করতে  হবে । এটা না করে শুধু সরকারকে দোষারোপ করে কোনো লাভ হবে না । নজরুল কিন্তু আশ্চর্য জনকভাবে মোল্লাতন্ত্র সম্পর্কে নীরব থেকেছেন । তিনি কি উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্যে মুসলমান ও নিম্ন বর্ণের মানুষদের যে ডাক দিয়েছেন তাতে কি তিনি মোল্লাতন্ত্রের প্রতিনিধিদের সামিল করতে চান ?   তা যদি হয়, তবে সেও এক ভয়ানক বিভেদমূলক প্রয়াস হবে যা হিন্দু ও মুসলিম মৌলবাদীদের হাতকেই শক্তিশালী করবে ।  
(বিঃদ্রঃ এ লেখাটি লেখা হয়েছিলো ০১.১০.১২ তারিখ ।   এপিডিআর – এর নেতা প্রয়াত দীপঙ্কর চক্রবর্তী  ‘অনীক’ পত্রিকার জন্যে  লেখাটি চেয়েছিলেন । লেখাটি ছেপেছিলেনও প্রায় কোনো সম্পাদনা ছাড়াই । দীপঙ্কর দা বলেছিলেন যে লেখাটি তাঁর ভালোই লেগেছে ।  যে টুকু [ বোধ হয় শেষের দু’ একটা বাক্য]  সম্পাদনা করেছিলেন তা বইটির লেখক নজরুল ইসলাম দুঃখ পাবেন বলে । প্রসঙ্গতঃ  উল্লেখ্য যে  তিনি নজরুলের শিক্ষক ছিলেন । )

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...