Saturday, April 16, 2016

আলেম সমাজ ইসলামের প্রতিনিধি, মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা তাঁদের নেই



মুসলিমদের জন্যে কারা কথা বলবে সরকারের কাছে?  আলেম সমাজ  মুসলিমদের সমস্যা ও দাবিদাওয়া  নিয়ে সরকার কাদের সঙ্গে কথা বলবে?  আলেমদের সঙ্গেএকথা বলেন ইমাম বরকতি, মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী, পীরজাদা ত্বহাত্বহা সিদ্দিকি প্রমুখ মুসলিম ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ অর্থাৎ আলেমরাই মুসলমান সমাজের একমাত্র প্রতিনিধি আলেম সমাজের মধ্যে নানা গোষ্ঠী  বিদ্যমানপ্রত্যেক গোষ্ঠীই দাবি করে তারাই মুসলমানদের প্রতিনিধি। সরকার একবার এ গোষ্ঠীর সঙ্গে কথা বলে তো পরমুহূর্তেই  আর এক গোষ্ঠীর সঙ্গে বসে। এভাবে যতো গোষ্ঠী আছে সব গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকার কথা বলে আলেমরা আবার শুধু কথা বলেন না, সরকার বাহাদুরকে হুকুমও করেন, কখনো সখনো ধমকও দেনপ্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীরা বা তাঁদের প্রতিনিধিরা তখন মাথা নত করে জি, জি, দেখছি, দেখছি  বলে তাঁদেরকে আশ্বস্ত করেন, এবং তাঁদের দাবিগুলি পূরণও করেন  এ হলো আমাদের ‘মহান ধর্মনিরপেক্ষ দেশ’ (!) ভারতের ছবি   
মুসলিম বিশ্বের ছবিটা অবশ্য সম্পূর্ণ আলাদাসেটা আরো খারাপ ছবিকিছু দেশ আছে যেখানে  আলেমরাই মূলতঃ রাষ্ট্র চালান।  যেমন ইরান, সৌদি আরব, জর্ডন, আরব আমিরশাহী, কাতার  ইত্যাদি।  কিছু দেশ আছে যেখানে  আধা গণতন্ত্র আধা শরিয়তি শাসন চালু আছে। এই দেশগুলিতে  রাষ্ট্র পরিচালনায় উলামার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভূমিকা পালন করেনযেমন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ইত্যাদি। বাংলাদেশে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো তখন আলেমরা তথা জামাতি ইসলাম ও ইসলামি ঐক্য রাষ্ট্রের অংশীদার ছিলেন। এখন আওয়ামি লিগ এবং আলেমদের সংগঠন ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ তলে তলে গাঁটছড়া বেঁধে সরকার চালাচ্ছে      
আলেম সমাজের  প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শাসনের ফল কি মুসলমানদের জন্যে ভালো হয়েছে? মোটেই  না। ভীষণ খারাপ হয়েছেশুধু মুসলমানদের জন্যেই নয়,  খারাপ হয়েছে সমগ্র মানবজাতির জন্যেইসমগ্র মানবজাতির পক্ষে কতটা ক্ষতিকর হয়েছে তা এ নিবন্ধে আলোচনা করার পরিসর নেইআলোচনা তাই সীমাবদ্ধ থাকবে শুধু মুসলিম সমাজের উপর, এবং বিশেষতঃ ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজের পক্ষে কতো ক্ষতি হয়েছে  তার উপর, সেটাও  সংক্ষেপে    
উলামার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শাসনে মুসলিমরা যে ভালো নেই তা মুসলিম বিশ্বের দিকে নজর ঘোরালেই স্পষ্ট বোঝা যায় মুসলিম সমাজই সারা বিশ্বে সবচেয়ে  দারিদ্রপীড়িত সম্প্রদায়। ২/৩টি বাদ  দিলে সমস্ত মুসলিম দেশই  বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলির কাতারে দাঁড়িয়ে রয়েছে।শিক্ষা, সংস্কৃতি, সঙ্গীত, শিল্পকলা, খেলাধূলা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রেই মুসলিম দেশগুলির পশ্চাদপদতা খুবই প্রকট যা সর্বজনবিদিতঅন্যদিকে হিংসা, প্রতিহিংসা, হত্যা এবং চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি, ডাকাতি পভৃতি অপরাধগুলির ক্ষেত্রে  সবার উপরের স্থানটি মুসলিমদের দখলে রয়েছে বহুকাল যাবৎশাসনব্যবস্থার  ক্ষেত্রেও মুসলিম দেশগুলির অবস্থান অতিশয় লজ্জাজনক ও উদ্বেগজনক মধ্যযুগীয়  শাসনব্যবস্থা থেকে তারা আজো বেরিয়ে আসতে পারেনি। মুসলিম বিশ্বে কোথাও ধর্মনিরপেক্ষতার বালাই নেই। অধিকাংশ দেশই হয় রাজার শাসন,  না হয় সামরিক শাসনে  আটকে রয়েছে। গুটি কয়েক  দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু  হয়েছে বটে, কিন্তু সে সব দেশেও জনগণ নয়,  শেষ কথা বলে সামরিক বাহিনীই। ফলতঃ  মুসলিম দেশগুলিতে সর্বদা অস্থিরতা, বিদ্রোহ, গৃহযুদ্ধ লেগেই রয়েছে। এএর পাশাপাশি ইসলামি সন্ত্রাসে কবলিত গোটা মুসলিম বিশ্ব। শুধু কি তাই ? প্রকৃত চিত্রটা হলো, ইসলামি সন্ত্রাস এখন গোটা বিশ্বের কাছেই মূর্তিমান আতঙ্ক।    
আর্থিক ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্ব এত পশ্চাদপদ যে  অধিকাংশ দেশকেই সর্বদা হাত পাততে হয় ঋণ ও অনুদানের জন্যে  ধনী ও উন্নত দেশগুলির কাছে। বিশ্ব চেনে তাই যেমন ধনী দেশগুলিকে  দাতা দেশ হিসেবে তেমনি  মুসলিম দেশগুলিকে চেনে গ্রহীতা দেশ হিসেবে । কী লজ্জা!  সারা বিশ্ব তর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতেসব দেশেরই তারজন্যে কিছু না কিছু কমবেশী অবদান আছে। শুধু ব্যতিক্রম মুসলিম দেশগুলি। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মুসলমানদের কোনো অবদান নেই। একথা শোনা গেছে সম্প্রতি পাকিস্তানের বিজ্ঞানী পারভেজ আমির আলি হুডভয়ের কণ্ঠেও। সম্প্রতি (জানুয়ারী ২০১৬)  হায়দ্রাবাদে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “দীর্ঘ ৫০০ বছর ধরে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চায় মুসলিমদের কোনও অবদান নেই উঠে আসেননি কোনও নাম করা মুসলিম বিজ্ঞানী    
শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে মুসলিমদের পশ্চাদপদতার করুণ চেহারাটা আমরা দেখতে পাই  নোবেল ও অস্কার পুরস্কারের তালিকায় চোখ রাখলে।  অর্থনীতি, সমাজনীতি, বিজ্ঞান, শিল্পকলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার এবং চলচ্চিত্র ও সঙ্গীতের ক্ষেত্রে অস্কার পুরস্কারকে বিশ্বের সেরা পুরস্কার  মানা হয়। ১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় বিগত ১১৭ বছরে  কয়েকহাজার কৃতি মানুষ নোবেল জয় করেছেন তাঁদের মধ্যে মাত্র এগারো জন মুসলিম রয়েছেন।  তাঁরা হলেন -  আনোয়ার আল সাদাত, মোহাম্মেদ এল বারাদেই, নাগিব মাহফুজ, আহমেদ জিয়েল,  আহমেদ জিয়েল, (মিশর),ইয়াসির  আরাফাত , (ফিলিস্তিনী),  শিরিন এবাদি, (ইরান),তায়াক্কুল কারমান (ইয়েমেন), আবদুস সালাম , মালালা ইউসুফজাই ( পাকিস্তানে), মুহাম্মদ ইউনুস (বাংলাদেশ)প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে এই কৃতি মানুষগুলোর কারোই আলেম সমাজের প্রতি আস্থা ও আনুগত্যশীলতা ছিলেন না। অস্কার পুরস্কার চালু হয়েছে ১৯২৯ সালে। এ পর্যন্ত ১৯২৯ জনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে যাঁদের মধ্যে মাত্র একজন মুসলমান – এ.আর.রহমান।.আর.রহমান আবার কোনো মুসলিম দেশের লোক নন, তিনি ভারতীয় এবং ধর্মান্তরিত মুসলমান। কোনো মুসলিম দেশে  জন্ম গ্রহণ করলে তাঁর সঙ্গীত প্রতিভার অপমৃত্যু হতো না এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না।
আন্তর্জাতিক ক্রীড়া জগতেও ছবিটা সমান শোচনীয়। অলিম্পিকের পদক তালিকায় মুসলিম দেশ ও মুসলিমদের নাম  দুরবীণ দিয়ে খুঁজতে হয়। টেনিসে বিশ্ব মানচিত্রে মুসলিম দেশ নেই। সেখানে একটাই মাত্র মুসলিম নাম -  সানিয়া মির্জাতিনি কিন্তু ভারতের মেয়ে।কোনো মুসলিম দেশে জন্মালে তিনি হারিয়ে যেতেন এ কথা বাজি রেখে বলা যায়। বিশ্ব ফুটবল মানচিত্রে মুসলিম দেশ নেই বললেই চলে।  ক্রিকেটে বিশ্ব সেরার শিরোপা একবার উঠেছিলো মাত্র পাকিস্তানের মাথায়, তারপর এই দেশটাও ক্রমশঃ পিছিয়ে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই।মুসলিমরা  মানব সভ্যতার বিকাশের  প্রতিটি ক্ষেত্রে কী ভয়ানকভাবে  পিছিয়ে পড়েছে এ হলো তার করুণ  ছবি এক নজরে।  
মুসলিম বিশ্বের যখন এই শোচনীয় হাল তখন   দেশের মুসলমানদের হাল তো আরো বেহাল হবারই  কথা। হয়েছেও তাই।   দেশে  পশ্চাদপদতম ছিলো তপশিলী জাতি উপজাতি এখন মুসলমানরা সবচেয়ে পশ্চাদপদ এটাই তো স্বাভাবিক গোঁড়া আলেম সমাজ বিশ্বাসেই অনড় যে  মানব সমাজের মুক্তির পথ দিশা আছে কোরান নির্দেশিত পথে  তাঁদের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য আস্থা রাখা মুসলিম সমাজের  অবস্থা তাই  যা হবার তাই হয়েছে  আলেম সমাজ কিন্তু মুসলিম সমাজের পশ্চাদপদতার দায় নিতে চাই না তাঁরা তাঁদের সকল কৃতকর্মের (অপকর্মের) দায় চাপায় সরকারের উপর বলেন, সরকারি বৈষম্য বঞ্চনার জন্যে মুসলমানরা পশ্চাদপদ হয়ে পড়েছে  কিন্তু এসব ছেঁদো অজুহা সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করে তো আই..এস, আই.পি.এস, ডাবলু.বি.সি.এস, এম.বি.বি.এস, এম.টেক, বি.টেক, আই.আই.টি, এল.এল.এম, এল.এল.বি ইত্যাদি ডিগ্রী কারো আটকাতে পারে না এসব ডিগ্রী অর্জন করে তো মুসলিমরা সরকারের চোখে চোখ রেখে সচিব, ডি.এম, এসপি, এস.ডি., এস.ডি.পি., বিচারপতির চাকরিগুলি আদায় করে নিতে পারতেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র, উকিল, ব্যারিষ্টার, সাংবাদিক হতে পারতেন   কিন্তু পারেননি তাই এসব পদে মুসলমানদের খুঁজে  পেতে  দুরবীণ দিয়ে  দেখতে হয়  মুসলমান সমাজের এই  করুণ অবস্থা প্রমাণ করে যে শুধু  সরকারি বৈষম্যের কারণে মুসলমান সমাজ পিছিয়ে পড়েছে এ অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যে কেনো মুসলিমদের এই বেহাল  অবস্থা  হয়েছে তা মাত্র দুটি বাক্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন  বিজ্ঞানী পারভেজ হুডবয় হায়দ্রাবাদের উক্ত অনুষ্ঠানে  তিনি যা  বলেছেন তা হলো - বিশ্বের সব দেশেই মুসলিম সম্প্রদায় পিছিয়ে পড়ছে বিজ্ঞানের সঙ্গে সংযোগহীনতার কারণে৷ ধর্মীয় ভাবাবেগ আচারকে  মুসলিমরা যতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখেন তার ছিটেফোঁটাও সময় দেন না বিজ্ঞানচর্চায়৷ নেই কোনও আগ্রহও” হুডবয়ের এই বাখ্যা ভারতের মুসলমানদের ক্ষেত্রেও প্রযোয্য তা বলা বাহুল্য । ধর্মীয় ভাবাবেগকে ব্যবহার করে আলেম সমাজ কীভাবে মুসলমানদের বিপথে পরিচালিত করে তাঁদের সর্বনাশ করেছে তার কয়েকটা উদাহরণ দেওয়া যাক ।
আলেম সমাজ আধুনিক শিক্ষার চরম বিরোধী । বিরোধী বলেই বামফ্রন্ট সরকার যতোবার হাই মাদ্রাসা ও সিনিয়র মাদ্রাসার সিলেবাস আধুনিকীকরণের চেষ্টা করেছে ততবারই বিরোধিতা করেছে । সর্বশেষ ২০০৬ সালে সিনিয়র মাদ্রাসার আধুনিকীকরণের যে সুপারিশ করেছিলো কিদোয়াই কমিটি তা বাঞ্চাল করে দিয়েছিলেন  তাঁরা১৭৮০ সালে বৃটিশ গভর্নর ওয়য়ারেন হেস্টিংস কলকাতায় মুসলমানদের জন্যে স্থাপন করেছিলেন ‘কলকাতা মহমেডান কলেজ’   এই কলেজে তখন আইন, জ্যোতির্বিদ্যা, যুক্তিবিজ্ঞান, দর্শন, পাটিগণিত, জ্যামিতি, ছন্দবিজ্ঞান, ব্যাকরণ, ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি পড়ানো হত এই কলেজেই ১৮২৭ সালে প্রথম মেডিক্যাল কলেজের ক্লাস শুরু করেছিলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের অধ্যাপক পি বৃটেন । শব ব্যবচ্ছেদ অনৈসলামিক ফতোয়া দিয়ে আলেম সমাজ মেডিক্যাল কলেজের প্রবল বিরোধিতা করেন এবং   ১৮৩৬ সালে সেখান থেকে মেডিক্যাল কলেজ  সরিয়ে নিয়ে  যেতে বাধ্য করা হয়  ঐ ফতোয়ায়  সবচেয়ে বেশী ক্ষতি  হয়েছিলো মুসলমানদের । মুসলমিন সমাজ মেডিক্যাল শিক্ষাকে হারাম জ্ঞানে ডাক্তারি পড়া থেকে  মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলো    আলেম সমাজ কলকাতা  মহমেডান কলেজ এর নাম বদলে করেন কলকাতা মাদ্রাসা  (পরে আলিয়া মাদ্রাসা)  তাঁরা  ১৯২৭ সালে কলকাতা মহমেডান কলেজ তথা কলকাতা মাদ্রাসাকে আরো পেছন দিকে টেনে  নিয়ে যান ।  সেখানে পুরানো শিক্ষাক্রম বাতিল করে আলিম, ফাজিল, কালিম, মুমতাজুল মুহাদ্দেসিন প্রভৃতি শিক্ষাক্রমের সূচনা করেন ।  তারও বহু আগে কলকাতা মহমেডান কলেজে ইংরাজী শিক্ষা যুক্ত করা হয়েছিলো । তারও প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন আলেমরা । তাঁরা ফতোয়া দিয়েছিলেন যে ইংরাজী শিক্ষা হারাম । ফলে মুসলমানরা ইংরাজী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন । এর কী মারাত্মক  কুপ্রভাব পড়েছিলো তা জানা যায় এই তথ্য থেকে । ১৮৮২ সালের শিক্ষা রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশে হাই ও মিডল স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে ৮৬.৫৫ শতাংশই ছিলো হিন্দু এবং কলেজ ছাত্রদেরে মধ্যে হিন্দু ছাত্ররা ছিলো ৯২.৪১ শতাংশ এর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছিলো চাকরির ক্ষেত্রে । ১৯০১ সালের একটি রিপোর্টে দেখা যায় যে, সরকারি উচ্চপদে কর্মরত বাঙালিদের ৮৯.৭  শতাংশই ছিলো হিন্দু ।   
প্রবল জনস্ফীতি মুসলিম সমাজের  দারিদ্রতার পশ্চাতে অন্যতম বড়ো কারণ ।  এর  জন্যে প্রধানতঃ দায়ী  আলেম সমাজ   জন্ম নিয়ন্ত্রন করা মহাপাপ – এই ফতোয়ার জন্যেই মুসলিমদের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের হার খুব কম  নারী সম্পর্কে ফতোয়া -   নারীর পুরুষের সঙ্গে মেলেমেশা করা পাপ । যারা পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করা, লেখাপড়া করা,ব্যবসা করা, চাকরি করা  মহাপাপএই ফতোয়ার জেরে পুরো নারীশক্তি নষ্ট হয় গৃহকর্মে । মুসলিম সমাজে নারীশক্তির এই অপচয়  তাদের দারিদ্রতাকে অনেক বেশী প্রকট করে তোলে ।    রকম আর বহু দৃষ্টান্ত দেওয়া যায় । এই ঘটনাগুলি  প্রমাণ করে মুসলিম সমাজের পশ্চাদপদতা ও  পশ্চাদগামীতার জন্যে  প্রধানতঃ  আলেম সমাজই দায়ী সুতরাং কোনো সংশয় নেই যে, মুসলমানদের প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা তাঁদের নেই । তবে তাঁরা যে ইসলামের প্রতিনিধি তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই । মুশকিল হলো এই যে, ইসলামের প্রতিনিধি এবং মুসলমানদের প্রতিনিধি – এ দুটো বিষয়  যে সম্পূর্ণ আলাদা  সে কথা আমরা  বুঝতে ভুল করি  অন্তত মুসলিমরা যতদিন না এ কথাটা বুঝবে ততদিন তাঁরা পশ্চাদগামিতার গাড্ডা থেকে বের হতে পারবেন না ।











KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...