Friday, October 3, 2014

হোসেনের খলিফা হওয়ার তীব্র লালসাই কারবালা যুদ্ধের প্রধান কারণ


১০ই মহরম [মুহাররম/মহররম] উদযাপিত হয় 'মহরম' হিসেবে। এই দিনটি মুসলমানদের কাছে একটি গভীর শোকের দিন। মুসলমানরা বিশ্ব শোক দিবস হিসেবেও উদযাপন করে দিনটিকে। কারণ, এই দিন ইমাম হোসেন [হুসাইন], মুহাম্মদের ছোট  নাতি নিহত হয়েছিলেন ইসলামি সাম্রাজ্যের ৬ষ্ঠ খলিফা ইয়াজিদ ওরফে এজিদের সৈন্যদের হাতে। ঘটনাটি ঘটেছিল ৬৮০ খৃষ্টাব্দের ১০ই অক্টোবর, আরবি পঞ্জিকা মতে ৬৯ হিজরীর ১০ই মহরম। সেজন্যে এই দিনটি মহরম নামেও ইতিহাসে খ্যাতপঞ্চম খলিফা মুয়াবিয়া ওরফে মাবিয়া মৃত্যুর পূর্বে তাঁর পুত্র এজিদকে পরবর্তী খলিফা মনোনীত করে যান। ইমাম হোসেন তা মেনে নিতে পারেন নি, কারণ তিনি নিজেই খলিদফা পদের দাবিদার ছিলেন। তাই এজিদ খলিফার সিংহাসনে আরোহণ করার পর পরই তাঁর বিরুদ্ধে হোসেন বিদ্রোহ করবার আয়োজন শুরু করলেন। তিনি  স্থির করলেন যে বিদ্রোহের সমর্থনে জনমত ও  সৈন্য সংগ্রহের  জন্যে প্রথমে অধুনা ইরাকে অবস্থিত কুফা শহরে  যাবেন। তিনি কুফা শহরকে প্রথমেই নির্বাচন করেন কারণ, তাঁর কাছে খবর ছিলো যে কুফা শহরের মানুষ এজিদকে নয়, তাঁকেই খলিফা পদে দেখতে চান। কিন্তু কুফার মানুষ নাকি একদা তাঁর পিতা চতুর্থ খলিফা আলির সঙ্গে বিশ্বাসঘতকতা করেছিলো, তাই ঐ খবরের  সত্যতা নিয়ে তাঁর মনে সংশয়ও ছিলো হোসেন তাই তাঁর চাচাতো [খুড়তুতো] ভাই মুসলিমকে গোপনে কুফা শহরে  পাঠান সেখানকার মানুষের সত্যিকারের মনোভাব যাচাই করার জন্যে। কুফায় গিয়ে মুসলিমের মনে হয়েছিলো যে সেখানকার মানুষ সত্যিই ইমামকে খলিফা পদে পেতে প্রবল আগ্রহী এবং তারজন্যে তাঁরা হোসেনের পক্ষে এজিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতেও পিছপা নয়। তিনি এ রকম একটা খবরের আশাতেই কুফা ছুটে গিয়েছিলেন। তাই তড়িঘড়ি করে খবরটা তিনি মক্কায় হোসেনের নিকট পাঠিয়ে দিয়ে তাঁকে যথা শীঘ্র সম্ভব কুফার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করতে  অনুরোধ করেন। মুসলিম কুফায় গিয়ে গিয়েই যে খবরগুলি পেয়েছিলেন তা সত্যি না কি অতিরঞ্জিত ছিলো তা খতিয়ে বিশেষ দেখেন নি। মুসলিমের নিকট থেকে ইতিবাচক খবর পেয়ে হোসেনও আর বিলম্ব করেন নি, অতি সত্বর তিনি সদলবলে কুফার পথে  রওনা দেনএদিকে খবর পেয়ে এজিদের সৈন্যবাহিনী কুফার আগেই ইউফ্রেটাস [ফোরাত] নদীর তীরে কারবালা নামক এক প্রান্তরে তাঁর পথরোধ করেন। এবং সেখানেই উভয় দলের মধ্যে প্রবল যুদ্ধ শুরু হয়, যে যুদ্ধে হোসেন ও তাঁর সৈন্যদলের সকলেই নিহত হয়। তারপর থেকেই  দুনিয়া জুড়ে ১০ই মহরম  মুসলিম সমাজে শোকদিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। সেই ঘটনার পরই মুসলিমরা শিয়া ও সুন্নি এই দুইভাগে  দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। মুসলমানদের মধ্যে সেটাই প্রথম বিভাজন যা ঘটেছিলো কেবল ক্ষমতার জন্যে,আদর্শের জন্যে নয়। যারা এজিদের পক্ষাবলম্বন করেছিল তারা সুন্নি মুসলমান, আর যারা হোসেনের পক্ষে ছিলো তারা শিয়া মুসলমান নামে অভিহিত।  শিয়ারা মনে করে যে হোসেনই একমাত্র খলিফা পদের যোগ্য উত্তরাধিকারী ছিলেন, মাবিয়া অন্যায়ভাবে হোসেনকে বঞ্চিত করে নিজের পুত্র এজিদকে খলিফা মনোনীত করে ইসলামি সাম্রাজ্যে রাজতন্ত্র কায়েম করেন। শিয়াদের মতে মাবিয়া এই মহাপাপের কাজটি করে কার্যতঃ ইসলামি  আদর্শের অপমৃত্যু ঘটিয়েছিলেন যা ইমাম হোসেনের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিলো না। তাই ইসলামকে রক্ষা করার জন্যে তিনি এজিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং শাহাদাত বরণ করে অমরত্ব লাভ করেন।
ঘটনাটি যেহেতু কারবালা নামক স্থানে ঘটেছিলো তাই ইতিহাসে এই বিদ্রোহটি কারবালা যুদ্ধ নামেও খ্যাত। এখন শুধু আর শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে নয়, সমস্ত মুসলমানদের কাছেই ইমাম হোসেন একজন আত্মোৎসর্গকারী মহান যোদ্ধা হিসেবে খ্যাত। শিয়া, সুন্নি প্রভৃতি সকল গোষ্ঠীর মুসলমানরাই মনে করেন যে এজিদ ছিলেন পথভ্রষ্ট ও পাপীসেই পাপী এজিদের হাত থেকে ইসলাম ধর্ম ও ইসলামি সাম্রাজ্যকে রক্ষা করতে গিয়েই হোসেন আল্লাহর পথে আত্মবলিদান করেছিলেন। তাই আজো সারা বিশ্বের মুসলমানরা  একদিকে হোসেনকে যেমন গভীর শ্রদ্ধা সহকারে ১০ই মহরম প্রতি বছর  শোকদিবস পালন করে, তেমনি অপরদিকে এজিদকে নিষ্ঠুর, নির্দয়, নিকৃষ্ট ও পাপাচারি বলে অভিসম্পাত দেয়। কারবালার ঘটনাটি কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ছোট্ট একটি বিদ্রোহের ঘটনা মাত্রমাত্র ৭০/৭২ জন সৈন্য ছিল হোসেনের সঙ্গে। তিনি কুফা যাচ্ছিলেন একটি সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলার জন্যে। কিন্তু পথিমধ্যেই বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সদলবলে নিহত হন। ক্ষুদ্র এই বিদ্রোহের ঘটনাটিই ধর্মীয় আবেগের কারণে বিরাট একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধের তাৎপর্য পেয়ে গেছে। ফলে কারবালার ঘটনা জানার প্রবল আগ্রহ ও কৌতূহল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের মনে আজো সমানেভাবে বিদ্যমান।   
কারবালা যুদ্ধের সঠিক কারণ বুঝতে হলে অনেক পিছনে যেতে হবে এর বীজ রোপিত হয়েছিলো বস্তুতঃ মুহাম্মদের মৃত্যুর পরপরই। কে হবে তাঁর উত্তরাধিকার তথা খলিফা [ইসলামি রাষ্ট্রের প্রধান] তা নিয়ে তীব্র কলহ হয় সাহাবিদের [মুহাম্মদের শিষ্যদের] মধ্যে। সে কলহের নিষ্পত্তি হতে সময় লেগেছিলো তিন দিন।  সেই তিন দিন মুহাম্মদের দাফন-কাফন [সৎকার] বন্ধ ছিলো। অবশেষে যেরূপ  নিষ্পত্তি হয়েছিলো সেটাও সাহাবিরা সবাই মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেন নিকোনো রকমে গোঁজামিল দিয়ে আবুবকরকে মুহাম্মদের স্থলাভিসিক্ত অর্থাৎ ইসলামি সাম্রাজ্যের খলিফা মনোনীত করা হয়েছিলআলি, মুহাম্মদের চাচাতো ভ্রাতা ও আপন জামাই, এবং তাঁর  স্ত্রী ফতেমা আবুবকরকে খলিফা মেনে নিতে পারেন নি।  প্রকৃত অর্থে ঠিক তখনই পোঁতা হয়ে গিয়েছিল কারবালা যুদ্ধের বীজ যা পরে নানা ঘাত-প্রতিঘাতে প্রকাণ্ড বিষবৃক্ষ পরিণত হয়েছিল। ২য় ও ৩য় খলিফা মনোনয়ন বা নির্বাচনেও আলি খলিফার সিংহাসন লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। খলিফা হতে না পারার জ্বালায় আলি এতই কাতর ছিলেন যে তিনি ১ম খলিফা ও ২য় খলিফাকে খেলাফত চালানোয় সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন নি। তারপর তৃতীয় বারেও যখন খলিফা হতে ব্যর্থ হন এবং খলিফা পদে নির্বাচিত হন মুহাম্মদের আর এক জামাই ওসমান গণি, তখন তাঁর সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়কারণে অকারণে তিনি ৩য় খলিফা ওসমানের ভুল ধরা শুরু করেন। নানারূপ তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে ওসমানের বিরুদ্ধে সাহাবি সাধারণ মুসলমানদের [প্রধানতঃ হাসেমি বংশের লোকদের] মনে যে অসন্তোষের   জন্ম হতো তাকে আলি আরো উস্কে দিতে শুরু করেন পেছন থেকে। ফলে কিছু বিদ্রোহী জোটবদ্ধ হয়ে এক সময় ওসমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সংগঠিত করে যার পেছনে আলির মদত ছিলো। আলি যে নেপথ্যে থেকে সেই বিদ্রোহে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন তা পরের অনেক ঘটনা থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায়। বিদ্রোহেই খলিফা ওসমান গণি নিহত হন। তারপর বিদ্রোহীরাই আলিকে ৪র্থ খলিফা মনোনীত করেন। তারপর পরিস্থিতি দ্রুত কারবালার যুদ্ধের দিকে এগোতে শুরু করে। কারবালা  যুদ্ধের ইতিহাসের  পিছনের প্রেক্ষাপটটি অনেক বিস্তৃত ও ব্যাপক। তার সব দিকটা একটা নিবন্ধে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। তাই আলির খলিফা হওয়ার পর পরিস্থিতি যেহেতু দ্রুত কারবালার যুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়েছিলো, তাই  সেখান থেকেই শুরু করা যেতে পারে।   
আলি মাত্র চার/পাঁচ বছর খেলাফত চালিয়েছিলেন। তাঁর খেলাফত কালে সমগ্র ইসলামি সাম্রাজ্যে গৃহযুদ্ধ বাধেআলির বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিলো সে বিদ্রোহের মূল নেতৃত্বে  ছিলেন একদিকে মাবিয়া, আর একদিকে ছিলেন মুহাম্মদের প্রিয়তম ও সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী আয়েশাআলির সঙ্গে মাবিয়া ও আয়েশার বিরোধের পেছনে ক্ষমতার সংকীর্ণ স্বার্থ ছিলো না। ছিলো ন্যায় বিচারের দাবি। মাবিয়া ও আয়েশা সহ সমস্ত সাহাবিরা দাবি করেছিলেন যারা ওসমানকে হত্যা করেছে তাদের বিচার ও কঠোর শাস্তি। ইসলামের ইতিহাসে বিদ্রোহীদের হাতে খলিফা ওসমানের মৃত্যু এক অতি বর্বরোচিত ও  মর্মস্পর্শী ঘটনা। তিনি নিজ প্রাসাদে ৪০ দিন বন্দি থাকার পর বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হনতখন তাঁকে রক্ষা করার জন্যে আলি ও তাঁর পুত্ররা কেউই এগিয়ে যান নি। ওসমান গণি যখন খলিফা তখন বহুদূরে অবস্থিত সিরিয়া প্রদেশের গভর্নর পদে নিযুক্ত ছিলেন মাবিয়া। তিনি ছিলেন খলিফার ভীষণ আস্থাভাজন ও বিশ্বস্তওসমানের নিহত হওয়ার খবরে তিনি ভীষণ আঘাত পেয়েছিলেন। এদিকে বিদ্রোহীদের হাত ধরে আলি যখন খলিফা পদে অধিষ্ঠিত হন, তখন সেটা কেউ মনের দিক থেকে মেনে মিতে পারে নি। কিন্তু বিদ্রোহীদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করে নি। পরে সকলেই ওসমানের হত্যাকারীদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে মুখর হয়। তবে মাবিয়া ও আয়েশা ছিলেন সেই দাবিতে সর্বাধিক সোচ্চার। আলি সেই দাবিকে অগ্রাহ্য করেছিলেন, কারণ বিদ্রোহীদের অধিকাংশই ছিল তাঁর লোক। ওসমানের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের ব্যবস্থা না করে তাদের নিয়েই খেলাফত পরিচালনার কাজ শুরু করেন। এই ঘটনায়  সাহাবিরা  এতোই ক্ষুব্ধ হন যে তাঁরা আলির কাছে বয়াত [আনুগত্যের শপথ] না নিয়ে মদিনা ছেড়ে মক্কা চলে যানসেখানে আয়েশা তখন অবস্থান করছিলেন, তাঁর কাছে সাহাবিরা সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করেন। আয়েশা তা শুনে ক্ষুব্ধ সাহাবিদের সঙ্গে নিয়ে ওসমানের হত্যাকারীদের শাস্তি দাবিতে আলির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঘোষণা করেন।  অপরদিকে সিরিয়ার গভর্নর মাবিয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন গভর্নর এবং আরো অনেকেই আলির কাছে বয়াত নিতে অস্বীকার করেন। তাঁরা দাবি করেন যে আগে ওসমানের হত্যাকারীদের তাঁদের হাতে সমর্পন করতে হবে,  তারপর তাঁরা আলির কাছে বয়াত নেবেন। আলি কারও কথাতেই কর্ণপাত করেন নি উল্টে মাবিয়া সহ পাঁচ জন গভর্ণর যাঁরা ওসমানের হত্যাকারীদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন তাঁদেরকে বরখাস্ত করেন। ফলে আলির বিরুদ্ধে চারিদিকে ব্যাপক গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়আলির খেলাফত কালে যতগুলো যুদ্ধ হয়েছিলো তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রধান দুটি যুদ্ধ হলো জামালের যুদ্ধ বা  উটের যুদ্ধ এবং সিফফিনের যুদ্ধদুট যুদ্ধই হয়েছিলো ৬৫৮ খৃষ্টাব্দে জামালের যুদ্ধে হয়েছিলো মুহাম্মদের প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েষার সঙ্গে যে যুদ্ধে দশ হাজার মুসলমানের মৃত্যু হয়েছিলো এবং সিফফিনের যুদ্ধ হয়েছিলো  মাবিয়ার সঙ্গে যে যুদ্ধে নব্বই হাজার মুসলমান মারা গিয়েছিলো। জামালের যুদ্ধে আয়েষা পরাস্ত হয়ে আলির হাতে বন্দি হয়েছিলেন, কিন্তু সিফফিনের যুদ্ধে জয়-পরাজয় হয় নি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজবার জন্যে উভয় পক্ষ যুদ্ধ বিরতি করতে সম্মত হয়। সেই বিরতি চলাকালীন সময়ে গৃহযুদ্ধের আবহেই গুপ্তঘাতকের হাতে  আলির মৃত্যু হয়। যারা আলিক এ হত্যা করেছিলো তারা এক সময় আলির পক্ষেই ছিলো। সিফফিনের যুদ্ধে আলি যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্ত নিলে তারা আলির বিরুদ্ধে চলে যায় যারা ইতিহাসে খারিজি নামে পরিচিত, তারাই ছিল  আলির গুপ্তঘাতক। আলি নিহত হলে  মাবিয়া ৫ম খলিফা মনোনীত হন
মাবিয়া যখন খলিফার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তখন ইসলামি সাম্রাজ্য গৃহযুদ্ধে একেবারের বিধ্বস্ত এবং পতনের দোরগড়ায় দাঁড়িয়ে । ইসলামি রাষ্ট্র থেকে  বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্যে  তখন বিভিন্ন জায়গায়  বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছিলো, চারিদিকে তখন চলছে চরম বিশৃঙ্খলা ও অরাজক অবস্থাসমস্ত বিদ্রোহ ও বিশৃঙ্খলা মাবিয়া  দক্ষতার সাথে কঠর হাতে দমন করেন এবং বিধ্বস্ত  ইসলামি রষ্ট্রটিকে শক্তিশালী ও সংহত একটি রাষ্ট্র হিসেব গড়ে তোলেন। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ফিলিপ কে হিট্টি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বিশৃঙ্খলার মধ্যে মুয়াবিয়া শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন এবং একটি শক্তিপূর্ণ মুসলিম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।’ মাবিয়া তারপর রাজ্য বিজয়ে মনোনিবেশ করে রাষ্ট্রের ব্যাপক বিস্তার ঘটান। হিট্টির মতে মুয়াবিয়ার খেলাফত কালে ইসলামের খেলাফত শুধু সংহতই হয় নি, বরং বহুগুণে সম্প্রসারিতও হয়েছিলো। তাঁর শাসনকালে ইসলামি সাম্রাজ্যের ব্যাপক বিস্তার ও উন্নতি হয়েছিলো। মাবিয়া দীর্ঘ সময় ক্ষমতাসীন ছিলেন [৬৬১-৬৮০]। তিনি ছিলেন বড়ো মাপের একজন সুশাসকও। তাঁর নীতি ছিলো দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। কঠোর হাতে তিনি চোর, গুন্ডা, লম্পট, বদমায়েশদের শাসন করেছেন। তাঁর শাসনে সাধারণ মানুষ এবং বিশেষতঃ নারীরা শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করতে পারতেন। মাবিয়াই প্রথম ইসলামি সাম্রাজ্যে ধর্মনিরপেক্ষ নীতির  কিছুটা হলেও সূচনা করেন। সব ধর্মের মানুষদের নিয়ে গড়ে তোলেন রাষ্ট্রের সৈন্যবাহিনী। খৃষ্টান কবি আল আখতালকে সভাকবির মর্যাদা দেন । খৃষ্টান চিকিৎসক ইবন আসালকে হিমস প্রদেশের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নিযুক্ত করেন। মাবিয়া শিল্প-সাহিত্যেরও  গুণগ্রাহী ছিলেন তিনি ব্যক্তি জীবনে ছিলেন খুবই সৎ, স্বচ্ছ ও ধর্মভীরু মানুষ। তিনি সুরা পান করতেন না, এবং নারীর প্রতি আসক্ত ছিলেন না। মাবিয়ার এসব গুণ ও সাফল্যের কথা তাঁর ঘোর শত্রুরাও অকপটে স্বীকার করেন। মাবিয়া সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত হিট্টি বলেছেন, মাবিয়া ছিলেন শ্রেষ্ঠ আরব নৃপতি।
মাবিয়ার দীর্ঘ এই খেলাফত কালে ইমাম হোসেন তাঁকে কোনো প্রকার সহযোগিতা করেছেন এমন খবর পাওয়া যায় না। ইসলামি রাষ্ট্রকে যিনি পতনের হাত থেকে রক্ষা করেন এবং তারপর সেই রাষ্ট্রের বিপুল বিস্তার ও উন্নতি সাধন করেন সেই মাবিয়ার প্রতি প্রসন্ন  না হয়ে বরং তিনি বিরূপই ছিলেনএর কারণ সম্ভবতঃ একটাই, তা হলো, তাঁর পিতা আলির সঙ্গে মাবিয়ার যে দ্বন্দ ও যুদ্ধ হয়েছিলো সে কথা তিনি কখনোই ভুলতে পারেন নি। হয় তো চানও নি। এমনকি খলিফা হিসেবে মাবিয়ার ন্যূনতম যেটুকু মর্যাদা ও সমীহ  প্রাপ্য ছিলো, হোসেনের আচরণে তারও কোনোদিন প্রকাশ বা প্রতিফলন  দেখা যায় নি। বরং তিনি তাঁকে সর্বদা হয় উপেক্ষা করতেন, না হয় তাঁর সঙ্গে রূঢ় আচরণ করতেন।  মাবিয়া এত উদার প্রকৃতির মানুষ ছিলেন যে, তাঁর প্রতি এরূপ মনোভাব ও আচরণ সত্ত্বেও তিনি কখনো হোসেনের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করেন নি। বরং মাবিয়া হোসেনকে মুহাম্মদের নাতি বলে যা তাঁর প্রাপ্য তার চেয়ে অনেক বেশী গুরুত্ব ও সম্মান প্রদর্শন করেছেন আমৃত্যু।
মাবিয়া মারা যাবার পূর্বে তাঁর পুত্র এজিদকে পরবর্তী খলিফা মনোনীত করে যান। সে জন্যে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে তিনি খলিফা নির্বাচনে ইসলামি গণতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। খলিফা নির্বাচনে কিন্তু কখনোই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু ছিলো না। কীভাবে হৈ হট্টগোল ও কলহের  মধ্যে আবুবকর ১ম খলিফা মনোনীত হয়েছিলেন সেকথা পূর্বেই আলোচানা করা হয়েছে। আর আবুবকর মৃত্যুর আগে ২য় খলিফা মনোনীত করে যান ওমর ফারুককে কারো সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই। তিনি সকলকে ডেকে ঘোষণা দেন যে তিনি ওমর ফারুককে ২য় খলিফা মনোনীত করলেন। সুতরাং মাবিয়া ইসলামি গণত্তান্ত্রিক ব্যবস্থার লঙ্ঘন করেছিলেন এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। মুহাম্মদও কীভাবে খলিফা নির্বাচন করতে হবে সে বিষয়ে কিছুই বলে যান নি। তাছাড়া মাবিয়ার সময়ে ইসলামি সাম্রাজ্যের আয়ত তখন এতো সুবিশাল যে পরবর্তী খলিফা নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অনুসরণ করা অসম্ভব ছিলো। তখন তেমন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন  কোনো সাহাবি  জীবিত ছিলেন না যিনি খলিফা পদে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারতেনঅপরদিকে পরবর্তী খলিফা পদের জন্যে হোসেনের নাম কোনোভাবেই বিবেচনা করার অবকাশ ছিলো না। কারণ, ইমাম হোসেন খলিফা মাবিয়ার সঙ্গে সর্বদা দুরত্ব বজায় রেখে চলেছেন, শাসনকার্য পরিচালনায় কোনোরূপ সহযোগিতা করেন নি, বরং পদে পদে অসহযোগিতাই করেছেন। ফলে শাসনকার্য পরিচালনায় তাঁর বিন্দু মাত্র অভিজ্ঞতা ছিলো না। অন্যান্য যাঁরা গুরুত্বপূর্ন গভর্ণর বা উচ্চপদস্থ ও নেতৃস্থানীয় পদাধিকারী ছিলেন তাঁদের মধ্যে কাউকে খলিফা মনোনীত করা হলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হবার যথেষ্ট আশঙ্কা ছিলো এজিদ ছাড়া অন্য কাউকে খলিফা মনোনীত করলে ইসলামি সাম্রাজ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রবলভাবেই ছিলো। এবং তা হলে শুধু ইসলামি সাম্রাজ্যের পতনই হতো না, ইসলাম ধর্মটাই বিপন্ন হতে পারতো। তাই আপন পুত্র এজিদকে খলিফা  মনোনীত করা ছাড়া মাবিয়ার সামনে বিকল্প কোনো পথ খোলা ছিলো না। মাবিয়া ছিলেন অত্যন্ত দূরদর্শী,  সম্ভবতঃ  ইসলাম ও ইসলামি সাম্রাজ্যের নিরাপদ ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তিনি তাঁর পুত্র এজিদকে পরবর্তী খলিফা মনোনীত করেছিলেন। ঐতিহাসিক মর্গান ঠিক সে কথাই বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘খিলাফতের উত্তরাধিকার নির্বাচনের ব্যাপারে গৃহযুদ্ধ এড়াতে হলে বংশানুক্রমিক নীতি বলবৎ করা ব্যতীত আর কোনও বিকল্প ছিলো না। আবার ইয়াজিদও অযোগ্য ব্যক্তি ছিল তাও নয়।’ মুসলিম ঐতিহাসিকরা এজিদ  সম্পর্কে অনেক কটূ মন্তব্য করেছেন। তাঁদের মতে  তিনি ছিলেন খলিফা পদের সম্পূর্ণ অযোগ্যতবু তাঁকে মাবিয়া খলিফা মনোনীত করেছিলেন অন্ধ পুত্রস্নেহের বশবর্তী হয়ে। এজিদ সম্পর্কে এমন মূল্যায়ন নিশ্চিতভাবেই একপেশে ও পক্ষপাতমূলক। এজিদ যে খলিফা পদে যোগ্য ছিলেন সে কথা মর্গানের মতো স্বীকার করেছেন বার্ণাড লুইস ও ইবনে কাতিবের মতো প্রখ্যাত ঐতিহাসিকগণও। লুইস বলেছেন, ইয়াজিদ রাজোচিত গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন। আর ইবনে কাতিব বলেছেন, ইয়াজিদ উদারপন্থী ও বাগ্মী ছিলেন। 
এ প্রসঙ্গে একটা কথা উল্লেখ করা আবশ্যক। এজিদকে খলিফা হিসেবে মাবিয়া তাঁর ক্ষমতার জোরে মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেন নি। তিনি এজিদের গ্রহণযোগ্যতা আছে কী না তা নিজে সাম্রাজ্য ঘুরে ঘুরে যাচাই করেছিলেন। বিভিন্ন প্রদেশে গিয়ে এজিদকে খলিফা পদে মেনে নিতে কারো সম্মতি বা আপত্তি আছে কী না  সে বিষয়ে  সকলের মতামত আহ্বান করেছিলেন। সমগ্র সাম্রাজ্যের মধ্যে মাত্র তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছাড়া বাকি সকলেই এজিদের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন  ঘোষণা করেছিলেন । যাঁরা আপত্তি জানিয়েছিলেন তাঁরা হলেন ইমাম হোসেন, আবুবকরের পুত্র আব্দুর রহমান এবং ওমর ফারুকের পুত্র আবদুল্লাহ। ইমাম হোসেনের মনে তাঁর পিতার মতোই খলিফা হওয়ার তীব্র লালসা ছিলো। আবার তাঁর পিতার মতোই তাঁরও খলিফা হওয়ার কোনো যোগ্যতা ছিলো না। আলি ছিলেন মুহাম্মদের চাচাতো ভাই ও জামাই, তাঁর খলিফা হওয়ার যোগ্যতা থাকলে সবাই তাঁকেই ১ম খলিফা নির্বাচিত করতেন। কিন্তু একজনও খলিফা হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করে নি। আবার আবুবকরও ২য় খলিফা পদের জন্যে আলির কথা বিবেচনায় আনেন নি। বিবেচনায় আনেন নি ২য় খলিফা ওমর ফারুকও ৩য় খলিফা মনোনীত করার সময়।  ঠিক তেমনই মাবিয়ার পর খলিফা পদের জন্যে কেউই হোসেনের নাম বিবেচনা করেন নি। কিন্তু আলি ও হোসেন দুজনেই খলিফা পদের প্রবল দাবিদার ছিলেন শুধু এজন্যে যে তাঁরা ছিলেন মুহাম্মদের বংশধর।
১ম বার খলিফা হতে না পেরে আলি ১ম খলিফা আবুবকরের কাছে ছ’ মাস [যত দিন ফাতেমা বেঁচে ছিলেন] বয়াত নেন নি। ছ’ মাস পরে বয়াত নিয়েছিলেন আবুবকরের কাছে শুধু ২য় খলিফা হওয়ার বাসনায়। আলির পুত্র ইমাম হোসেনও এজিদ খলিফা পদে যখন অধিষ্ঠিত হন, তখন তাঁর কাছে বয়াত নিতে সম্মত হন নি। ঘুরিয়ে তাঁকে খলিফা বলে অস্বীকার করেন এবং তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিংহাসন দখল করার জন্যে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। তারই পরিণতিতে ঘটেছিলো কারবালা যুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধে তাঁর পরাজয় ও মৃত্যু হয়েছিলো। খলিফা পদের লালসা ছেড়ে হোসেন যদি দ্বীনের কাজে তথা ধর্মের কাজে নিজেকে ব্যাপৃত রাখতেন তা হলে কারবালা যুদ্ধের ঘটনা ঘটতো না। তাই কারবালা যুদ্ধের জন্যে মাবিয়া বা এজিদ নয়, দায়ী ছিলেন ইমাম হোসেন নিজেই
মুসলিম সমাজে সাধারণভাবে একটা বিশ্বাস প্রবল ভাবে রয়েছে যে এজিদ স্বয়ং ইমাম হোসেনকে  হত্যা করেছিলেনকিন্তু এটা একেবারেই সত্য ঘটনা  নয়। এমনকি এজিদ হোসেনকে হত্যা করার নির্দেশ পর্যন্ত দেন নি। এজিদ তাঁর সেনাপতিকে বলেছিলেন হোসেনের কুফা যাত্রার গতিপথ রোধ করে তাঁর বিদ্রোহ ব্যর্থ করে দিতে। কারবালা প্রান্তর ও ইসলামি সাম্রাজ্যের তখনকার রাজধানী দামেস্কের মধ্যে দুরত্ব ২০০ মাইল  মতো।  অতো দূরে বসে কারবালার প্রন্তরে কী ঘটেছিলো তা এজিদের পক্ষে জানা ও বোঝা সম্ভব ছিলো না। সুতরাং এজিদ হোসেনকে হত্যা করেছিলেন বা যুদ্ধস্থলে হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। বরং প্রকৃত ঘটনা হলো ঠিক তার বিপরীত যা সাধারণতঃ  মুসলিম ঐতিহাসিকরা আড়াল করার চেষ্টার  করে থাকেন। সে ঘটনাগুলো এরূপ – এক]. হোসেনের ছিন্ন মস্তক যখন এজিদের কাছে সমর্পণ করা হয়েছিল মস্তবড়ো বখশিশের [পুরস্কার] আশায় তখন এজিদ প্রচন্ড আহত ও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং হোসেনের ছিন্ন মস্তক সহ কারবালার প্রান্তরে হোসেনের যে সৈন্যরা নিহত হয়েছিলেন তাদের সকলকে ইসলামি বিধি-বিধান অনুসারে ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে দাফন-কাফন [সৎকার] করা এবং [দুই]. হোসেনের স্ত্রী সহ সকল বন্দি নারী ও শিশুকে সসম্মানে মক্কায় ফেরৎ পাঠানোর ব্যবস্থা করতে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। এজিদ ছিলেন এমনই উদার ও মানবিক গুণ সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব।
শেষ
পুনশ্চঃ কারবালায় যে বিদ্রোহ বা যুদ্ধটি হয়েছিলো তারজন্যে শুধু হোসেনই নয়, দায়ী ছিলেন বহুলাংশে আলিও। আলি মনে করতেন তিনি যেহেতু আলির একমাত্র বংশধর  তাই তিনিই একমাত্র ইসলামি রাষ্ট্রের উত্তরাধিকার। তার ফলেই মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তাঁর মনে খলিফা হওয়ার তীব্র লোভ-লালসা  দানা বেঁধেছিলো।  আলি তাঁর এই চিন্তাভাবনা সঞ্চারিত করে দিয়েছিলেন তাঁর পুত্রদের মধ্যে, এবং সে কারণে হোসেনও নিজেকে খলিফা পদের উত্তরাধিকার বলে ভেবে বসেছিলেন। কিন্তু সুন্নি মুসলমানদের মতে মুহাম্মদ নাকি স্বয়ং বলে যান যে নবীদের উত্তরাধিকার হয় না। তাই আলি ও হোসেন দুজনেরই খলিফা হওয়ার দাবি বৈধ ও সঙ্গত ছিলো না। ফলে নবীর উত্তরাধিকার হিসেবে খলিফা পদে তাঁদের নাম কেউই বিবেচনা করার কথা ভাবেন নি। অথচ আলি ভেবেছিলেন যে তাঁকে চক্রান্ত করে খলিফা পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সে কারণে তিনি কাউকেই মন থেকে খলিফা হিসেবে মেনে নেন নি এবং তাঁদের খেলাফত পরিচালনায় সহযোগিতা করার বদলে অসহযোগিতা করতেও দ্বিধা করেন নি ওসমানের বেলায় তো তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেপথ্য সেনাপতির ভূমিকা পালন করেছেন। কীভাবে আলি সেই ভূমিকা পালন করেছিলেন, এবং তারও আগে ১ম ও ২য় খলিফাকে কীভাবে সহযোগিতার বদলে অসহযোগিতা করেছিলেন সে ঘটনাগুলি আলোচনা করা খুব দরকার। না হলে, এই প্রবন্ধে  আলির সম্পর্কে যে কথাগুলি বলা হয়েছে তার সত্যতা নিয়ে সংশয় থেকে যাবে এবং কারবালার ঘটনায় আলি কতটা দায়ী সেটাও স্পষ্ট হবে না। তাই কারবালা কান্ডে আর একটা প্রবন্ধ লেখা জরুরী  যেখানে আলির  উপর যথেষ্ট আলোচনা থাকবে। যথাসম্ভব শীঘ্র সেটি লেখা হবে।  


[বিঃদ্রঃ কারবালার যুদ্ধ নিয়ে লেখা আমার একটি বই আছে। বইটির নাম - কারবালাঃ মিথ ও মিথ্যা। বইটি সংগ্রহ করতে হলে এই নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে - ৯০৩৮৫৩০৬৯০, ৮০১৭৯৫৪১২৬]

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...