Thursday, September 11, 2014

আদালত বলেছে বাল্যবিবাহ ধর্ষণের চেয়েও মারাত্মকঃ এবার মুহাম্মদেরও নতুন করে মূল্যায়ন করা হোক



শৈশবে বিয়েকে ধর্ষণের চেয়েও মারাত্মক বলে অভিহিত করলেন দিল্লী মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট  শিবানি চৌহান । একটি চোদ্দ বছরের মেয়ের বিয়ে দিয়েছলেন তার বাবা-মা বয়স ভাঁড়িয়ে । বিয়ের সময়  জামাইকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা যৌতুকও দিয়েছিলেন ।  তারপরে জামাই আরো পঞ্চাশ  হাজার টাকা ও একটি গাড়ি দাবি করে মেয়েটির উপর অকথ্য অত্যাচার চালাতো দিনের পর দিন ।  বাধ্য হয়ে অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছিলেন মেয়েটির বাবা-মা ।  বিচারক পণ ও নির্যাতনের মামলা গ্রহণ করলেও নাবালিকার বিয়ে দেওয়াটা মেনে নিতে পারেন নি ।   মেয়েটির বাবা-মাকে কঠোর-ভাবে ভর্ৎসনা করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন । সে সময়ই বিচারক অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ধর্ষণের চেয়েও মারাত্মক বলে অভিহিত করেন । বিচারক মেয়েটির বাবা-মাকে কঠোর ভাষায় তিরষ্কার করে বলেন যে,  এঁরা দুজনেই মারাত্মক অপরাধ করেছেন । প্রশ্ন করেন,  লেখাপড়া না শিখিয়ে  মেয়ের বিয়ে  দিলেন কেন  ? জানেন না এত কম বয়সে বিয়ে দিলে অস্যখ-বিসুখ ধরার সম্ভাবনা থাকে, শরীর কাহিল  হয়ে পড়ে, মেয়ের জীবন শেষ হয়ে যায় ? আপনারা  জামাইয়ের, তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন , কিন্তু আপনারা নিজেরা কি কম অপরাধ করেছেন ?
এই সংবাদটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ছেপেছে কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদপত্র ‘কলম’ । অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সংবাদটি ছেপে ‘কলম’ একটা দারুণ অভিনন্দনযোগ্য কাজ করেছে । কিন্তু তবুও অভিনন্দন জানাতে রীতিমতো কুন্ঠা হচ্ছে । কারণ, পত্রিকাটি সত্যিই এই রায়টিকে আন্তরিকভাবে সমর্থন করে  কি না তা প্রশ্নোর্দ্ধ নয় । পত্রিকার কর্ণধার ময়ূরের পালক লাগিয়ে কাকের কোকিল সাজবার চেষ্টা করার মতো কপটতার  আশ্রয় নিচ্ছেন না তো ?  বাল্যবিবাহ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিচারক যে কড়া কিন্তু নির্ভুল মন্তব্যগুলি করেছেন তাকে সমর্থন করতে হলে ইসলামেরও সমালোচনা করতে হয়, তিনি তা করতে প্রস্তুত তো ? এমনকি হযরত মুহাম্মদেরও কঠোর সমালোচনা ও তাঁকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করতে হয়, তিনি পারবেন তো ? বাল্যবিবাহের প্রশ্নে  ইসলাম ধর্ম ও তার প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদের সমালোচনা করা একান্তই আবশ্যক এ জন্যে যে ইসলাম বাল্যবিবাহকে আইনসিদ্ধ করেছে এবং মুহাম্মদ স্বয়ং একজন  শিশু কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন । এ প্রসঙ্গে আলোচনায়   আসার   আগে এই বিষয়টি স্পষ্ট করা যাক, কেন কলম পত্রিকার কর্ণধারের সততা ও আন্তরিকতার প্রতি আমাদের  সংশয়, সন্দেহ ও অবিশ্বাস ।
কলম পত্রিকাটি  তার জন্ম লগ্ন থেকেই  মোল্লাতন্ত্রের  প্রতিনিধিত্ব করে আসছে ।  পত্রিকাটি সাপ্তাহিক ছিলো, কিছুদিন হলো দৈনিক সংবাদপত্রে উন্নীত হয়েছে । পত্রিকার মালিক তথা কার্যনির্বাহি সম্পাদক আহমাদ হাসান ইমরান স্বয়ং একজন কট্টর মুসলমান এবং মোল্লাতন্ত্রের প্রবল সমর্থক । শুধু তাই নয়, তিনি একজন মোল্লাতন্ত্রের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধি ও মুখপাত্রও বটে । মোল্লাতন্ত্র তথা আল্লাহতন্ত্র তথা নবীতন্ত্র  হলো সরাসরি গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিপরীত একটি  রাজনৈতিক তন্ত্র বা  তত্ত্ব ।  মোল্লাতন্ত্র  মানে আল্লাহ ও আল্লাহর নবী মুহাম্মদের কথাই শেষ কথা, তার উপর কোনো কথা চলবে না ।  মোল্লাতন্ত্র মানে শুধু আল্লাহর  ধর্ম ইসলাম  ও আইনকে সমর্থন জানালেই হবে না, মানুষের তৈরী সমস্ত ধর্ম ও আইন কে  [পবিত্র যুদ্ধ] করে পরাস্ত ও নির্মূল করতে হবে এবং  আল্লাহর ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে হবে । মুহাম্মদ স্বয়ং এই তন্ত্রের প্রবক্তা ।  তিনি শুধু মুখেই এ কথা বলেন নি, নিজে হাতে কলমে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংস ও সশস্ত্র জিহাদ করে তাদের ধন-সম্পদ লুঠ করে, নির্বাসিত করে ও হত্যা করে তাঁর তন্ত্র তথা ইসলাম ধর্মকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন । ইমরান একজন ব্যক্তি মুসলমান হিসেবে এবং একজন সাধারণ সাংবাদিক ও পত্রিকার একজন কর্ণধার হিসেব অত্যন্ত নিষ্ঠা  ও সততার সাথে এই দায়িত্ব পালন ব্রতী রয়েছেন আজীবন । কলম পত্রিকার একটা প্রধান কাজই হলো এটা প্রতিষ্ঠিত করা যে ইসলাম ধর্মই একমাত্র আল্লাহর ধর্ম,  সত্য ধর্ম ও  শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং বাকি অন্য সব ধর্ম ভ্রান্ত ধর্ম, নিকৃষ্ট ধর্ম ও প্রতিক্রিয়াশীল ধর্ম যা মানব সমাজকে বিপথে পরিচালিত করছে এবং মানব সমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে । মোল্লাতন্ত্র সর্বদা অভিযোগ করে থাকে যে সারা বিশ্বব্যাপী ইসলামের বিরুদ্ধে সকল বিধর্মীরা মিলে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ইসলামকে ধ্বংস করার জন্যে । কলম পত্রিকা নিষ্ঠার সঙ্গে মোল্লাতন্ত্রের করা এই অভিযোগটি ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে অক্লান্তভাবে প্রচার করে  চলেছে । আফগানিস্তানে যখন নাজিবুল্লাহর নেতৃত্বাধীন কম্যুনিস্ট পার্টি পরিচালিত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ছিলো এবং তার পক্ষে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিলো তখন মোল্লাতন্ত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন ও কম্যুনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে ইসলামকে খতম করার ষড়যন্ত্র দেখতে পেতো । তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল প্রগতিশীল রাষ্ট্র । এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ তোলা হচ্ছে । মোল্লাতন্ত্রের এই অভিযোগের পক্ষে ‘কলম’ নিয়মিত খবর ও প্রতিবেদন ছাপিয়ে চলেছে । গাজায় ইজরায়েলের  মানবতাবিরোধী আক্রমণের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যে নিন্দা ও প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে ও হচ্ছে তার খবর ও প্রতিবেদন প্রতিদিনই ‘কলমে’র  পাতায় ছাপা হয়েছে ধারাবাহিকভাবে, কিন্তু সন্ত্রাসবাদী  সংগঠন ‘হামাস’ও যে ইজরায়েলের বুকে শ’য়ে শ’য়ে মিসাইল ছুঁড়ে প্ররোচনা সৃষ্টি করেছে তার বিরুদ্ধে একটা কথাও ছাপা হয় নি । শুধু তাই নয়, কলমের পাতায় পাতায় ‘হামাসে’র সন্ত্রাসবাদী ভূমিকাকে বন্দিত ও নন্দিত করা হচ্ছে । ইজরায়েল গাজায় অসামরিক মানুষের ওপর যে হত্যালীলা চালিয়েছে তার নিন্দা করার ভাষা সত্যিই নেই ।  অপরদিকে  ইরাক ও সিরিয়ায় এবং নাইজিরিয়ায় যথাক্রমে আইসিস (ISIS) ও বোকো হারাম যে হত্যালীলা চালিয়ে যাচ্ছে মাসের পর মাস তাও তো ভাষায়  বর্ণনা করা মানুষের সাধ্যের অতীত । ইজরায়েল যা করেছে তা নিশ্চিতভাবেই ভয়ঙ্কর এক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, কিন্তু তারজন্যে তো হামাসের প্ররোচনা অনেকটাই দায়ী । অন্যদিকে  আইসিস (ISIS) ও বোকো হারাম যে নির্মম ও নৃশংস হত্যালীলা ও ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে তাতো কেবল শরিয়তি রাষ্ট্র স্থাপনের জন্যে এবং কোনোরূপ  প্ররোচনা ছাড়াই ।  ইজরায়েল যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিয়ে তাদের আক্রমণ বন্ধ রেখেছে, কিন্তু আইসিস (ISIS) ও বোকো হারাম তো তাদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর অনন্তকাল ব্যাপী । সুতরাং আইসিস (ISIS) ও বোকো হারাম যা করছে তা  ইজরায়েলের চেয়েও মারাত্মক । তবুও তাদের নিন্দা করে  ‘কলম’ পত্রিকাটি একটা শব্দও ব্যয় করে নি । ‘কলম’  কোনো দিন আল-কায়দা, তালিবান, হুজি, লস্কর-ই-তৈবা, জামাত-ই-ইসলাম, বাংলা ভাই, ইন্ডিয়ান মুজাহিদ প্রভৃতি ভয়ঙ্কর মুসলিম সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির নিন্দা করে নি । মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড হলো আল-কায়দা, তালিবান, আইসিস (ISIS), বোকো হারাম প্রভৃতি অন্তর্দেশীয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির মতোই একটি কুখ্যাত মুসলিম সন্ত্রাসবাদি সংগঠন যাকে সঙ্গত কারণেই সৌদি আরব নিষিদ্ধ করেছে । সেই মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষে ‘কলম’ দাঁড়িয়েছে খোলাখুলি  এবং তাকে গণতান্ত্রিক দল আখ্যা দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে তার হয়ে মিথ্যা প্রচার করে যাচ্ছে   
পৃথিবীতে কোথাও  মুসলিমরা আক্রান্ত   হলে মোল্লাতন্ত্র ও মুসলিম বুদ্ধিজীবীগণ তৎক্ষণাৎ মুসলিমদের মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে থাকে  । কিন্তু মুসলিম মৌলবাদীরা ও সন্ত্রাসবাদীরা সারা বিশ্বজুড়ে যে অমুসলিমদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন ও হত্যালীলা চালাচ্ছে , তার বেলায়  তাঁরা  অদ্ভূতভাবে নীরব , টুঁ শব্দটি পর্যন্ত নেই । বাংলাদেশে পূর্বপাকিস্তানের আমল থেকেই অমুসলিমদের উপর সীমাহীন অত্যাচার সংগঠিত হয়ে আসছে । এই অত্যাচারের শিকার সবচেয়ে বেশী হিন্দুরা । অত্যাচার চালানো হয় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, গণধর্ষণ ও গণহত্যা চালিয়ে । অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে  লাখ লাখ হিন্দু তাই ভারতে চলে এসেছেন । আজো সে ধারা অব্যাহত রয়েছে । তাদের মানবাধিকারের পক্ষে ‘কলম’  কোনো দিন একটা কথা বলে নি, এবং  অত্যাচারী মুসলিম সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একবার ভুলেও নিন্দা করতে দেখা যায়  নি ‘কলম’কে । এই ‘কলম’ই আবার বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যখন  বিচার চলছে তখন সেই বিচারকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে চিৎকার করেছে ।  এবং যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা ও তিন লক্ষ নারীর সম্ভ্রম হরণের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত সেই  যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের পক্ষে পাতার পর পাতা খবর ও প্রতিবেদন ছেপেছে ।
এই ‘কলম’ই  তসলিমা নাসরিন, সলমান রুশদি সহ মুসলিম সমাজে জন্ম নেওয়া যুক্তিবাদী লেখকদের বিরুদ্ধে ইসলামবিরোধী আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে কুৎসা ও অপপ্রচার করে চলেছে ক্লান্তিহীনভাবে  । তাঁদের শিরচ্ছদ করার ফতোয়াকে অবলীলায় সমর্থন জানিয়েছে । তসলিমার   শিরচ্ছেদের ফতোয়া দিয়ে  হাজার হাজার  মোল্লা-মুফতি ও গোঁড়া মুসলমানরা  যখন ঢাকার রাজপথে তান্ডব করেছে সেই তান্ডবকে সমর্থন জানিয়ে মহা উৎসাহে  খবর ও প্রতিবেদন ছেপেছে । হায়দ্রাবাদে তসলিমার  উপর মৌলবাদিদের আক্রমণকে ন্যায়সঙ্গত বলে আনন্দে আপ্লুত হয়ে প্রতিবেদন লিখেছে । কলকাতায় তসলিমার উপর শিরচ্ছেদের ফতোয়াকে প্রবলভাবে সমর্থন করেছে । তসলিমার বই নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে । তাঁকে কলকাতা ও ভারত থেকে তাড়ানোর দাবিতে ধারাবাহিকভাবে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে । এবং  কলকাতা থেকে তাড়ানোর  দাবিতে  মুসলিম মৌলবাদীরা কলকাতাকে অবরোধ করে যে তান্ডব চালিয়েছিলো সেই তান্ডবকেও দুহাত তুলে সমর্থন জানিয়েছিলো ।
‘কলম’ পত্রিকার মালিক গুণধর [!] আহমদ হাসান ইমরানের গুণের [!] অন্ত নেই । ভারতবর্ষের মাটিতে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যে তিনি নিজে একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন  তৈরী করেছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ।  ১৯৭৭ – এর এপ্রিলে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে গড়ে ওঠা সেই  সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটির নাম  ‘সিমি’ (স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া) । ইমরানই তার  প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক  বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে । এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের অভিযোগ আছে । সেই কারণে ভারত সরকার ‘সিমি’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ।  আহমদ হাসান ইমরান ও  অন্যান্য মুসলিম মৌলবাদীরা এই ‘সিমি’র উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে আসছে  প্রথম থেকেই ।
এই হচ্ছে আহমদ হাসান ও তাঁর ‘কলম’ পত্রিকার আসল পরিচয় । ইমরান মোল্লাতন্ত্রের একজন নেতৃস্থানীয় ও নির্ভরযোগ্য প্রতিনিধি ও মুখপাত্র বলে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তাঁকে একটা বিশাল পুরষ্কার দিয়ে সম্মানিত ও আরো ক্ষমতাবান করে তুলেছে ।  শাসক দলের প্রধান ও  মুখ্যমন্ত্রী  মমতা ব্যানার্জী তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার  সাংসদ করে দিল্লী পাঠিয়েছেন মোল্লাতন্ত্রকে তোয়াজ ও তুষ্ট করার জন্যে    ইমরানকে যখন প্রার্থী করেন মমতা ব্যানার্জী তখনই আমি তার তীব্র প্রতিবাদ করে ব্লগ লিখেছিলাম (http://giasuddinonline.blogspot.in/2014/01/blog-post_22.html ) । এহেন ইমরান বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে রায় ও কঠোর ভর্ৎসনাকে সমর্থন করা ও হজম করা কি আদৌ সম্ভব ? ইমরাম কাকের মতো কোনো কুমতলবে কোকিলের পালক গুঁজে প্রগতিশীল সমাজের মানুষদের ধোঁকা দিচ্ছেন না তো ? বাল্যবিবাহের নিন্দা ও প্রতিবাদ করলে তো ইসলাম ও মুহাম্মদেরও নিন্দা ও প্রতিবাদ করতে হয় ।  ইমরানের পক্ষে কি আদৌ তা সম্ভব ?  ঈমানদার ও জিহাদী কোনো মুসলমানের পক্ষে   বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কেনো সম্ভব নয় তা দেখা যাক ।
মুসলমানদের কাছে কোরান ও মুহাম্মদের প্রতিটি কথা এবং মুহাম্মদের প্রতিটি কাজই অভ্রান্ত ও অবশ্য পালনীয় কর্তব্য ।  কোরানের কিছু কথা কিংবা মুহাম্মদের কিছু কথা বা কাজকে ভুল বা বাতিল বললে মুসলমানই থাকা যায় না । মুসলমানদের দৃঢ় বিশ্বাস মুহাম্মদ  ভুল করতে বা ভুল বলতে পারেন না, কেননা তিনি তো আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ । এরূপ বিশ্বাস শুধু মুসলমানদেরই নেই, অমুসলমানদের মধ্যেও রয়েছে । তাই  মুহাম্মদ সম্পর্কে  ধর্ম-বর্ণ  নির্বিশেষ কোটী কোটী মানুষের অপরিসীম শ্রদ্ধা আজো অটুট আছে । সেই মুহাম্মদই তাঁর জীবনে এমন কতকগুলি কাজ করেছিলেন যেগুলি  আধুনিক  ও সভ্য সমাজের পক্ষে ভীষণ লজ্জা ও ঘৃণা উদ্রেককারী কাজ হিসেবে চিহ্নত হয়ে রয়ে গেছে । সেই কাজগুলির মধ্যে একটি হলো  তাঁর একটি শিশু কন্যাকে বিয়ে করা    মুহাম্মদ তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েষাকে যখন বিয়ে করেন তখন তাঁর নিজের বয়স ছিলো পঞ্চাশের উপর ও আয়েষার বয়স ছিলো মাত্র ছ’ বছর । আয়েষার বাবা আবুবকর ছিলেন তাঁর প্রিয়তম বন্ধু ও সাহাবা এবং তাঁর চেয়ে দু বছরের ছোটও । মুহাম্মদের সঙ্গে আয়েষার বিয়ে দিতে আবুবকরের সম্মতি মোটেই ছিলো না, থাকার কথাও নয়  । মুহাম্মদ তাঁর সম্মতি  আদায়ের জন্যে তাঁকে মিথ্যা কথা বলে তাঁর উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করে তাঁকে সম্মতি দানে বাধ্য করেছিলেন । বলেছিলেন যে,  স্বয়ং  আল্লাহ্‌র ইচ্ছা হলো  যে আমার সঙ্গে যেন আয়েষার বিয়ে হয় ।   আয়েষাকে  বিয়ের তিন বছর পর মুহাম্মদ তাঁর শয্যাসঙ্গিনী করে নিয়েছিলেন । একজন ন’ বছরের মেয়ের শরীর যে পুরুষের সঙ্গে সহবাসের উপযুক্ত হয় নি এবং আয়েষা  যে স্বেচ্ছায় সহবাসে সম্মত হয় নি তা বলা বাহুল্য । তাঁকে জোরপূর্বক মুহাম্মদ যে সঙ্গম করেছিলেন তাও সংশয়াতীত । সে সময়  আয়েষা প্রবল যন্ত্রণায় কীরূপ আর্তনাদ করেছিলেন তা অনুমান করা আমাদের পক্ষে মোটেই কষ্টসাধ্য বিষয় নয় । এই সহবাস ও  এই দুঃসহ যন্ত্রণা  আয়েষাকে কয়েক বছর ধরেই ভোগ করতে হয়েছে ।  দিল্লী মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট  শিবানি চৌহান  বলেছেন অল্প বয়সের মেয়ের বিয়ে দেওয়া ধর্ষণের চেয়েও  মারাত্মক । তিনি তো বলেছেন একজন ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়ের বিয়ের পরিপ্রেক্ষিতে । কিন্তু মুহাম্মদ তো একজন শিশু কন্যাকে বিয়ে করে  তাঁর সঙ্গে সহবাস করেছিলেন ।  এতো আরো মারাত্মক ঘটনা । এতো  প্রায়  নজিরবিহীন এক জঘণ্যতম ধর্ষণের ঘটনা  
বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে দিল্লী মেট্রপলিটন কোর্টের  রায়কে সমর্থন ও স্বাগত জানানো যে আমাদের     সামাজিক ও নৈতিক কর্তব্য তা তর্কাতীত  । কিন্তু এই রায়কে শুধু সমর্থন জানালেই আমাদের কর্তব্য শেষ হয়ে যায় না ।  যারা বাল্যবিবাহকে সমর্থন ও  মদত দেয়  তাদের সকলের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে । এমনকি যারা সমাজের কর্ণধার হয়েও বাল্যবিবাহকে শুধু উৎসাহই দেয় নি, ঘুরিয়ে নিজেরা সেই জঘণ্য কাজ করে গেছেন তাঁদের সকলের বিরুদ্ধেও  একই অবস্থান নিতে হবে । কাঊকে বা কোনো ধর্মকে ছাড় দেওয়া যাবে না । তা হলেই আমরা সমাজ থেকে বাল্যবিবাহকে নির্মূল করতে পারবো । স্বভাবতই   বাল্যবিবাহের প্রশ্নে  মুহাম্মদ সম্পর্কে্ব আমাদের  কঠিন ও সঠিক অবস্থান নিতে হবে । কারণ, মনে রাখতে হবে যে মুসলিম সমাজে আজো যে বাল্যবিবাহের মতো জঘন্য প্রথা প্রচলিত আছে তার জন্যে প্রধানতঃ দায়ী মুহাম্মদই । তাই এ কথা বলার সময় হয়েছে যে  ৬ বছরের একটি শিশু মেয়েকে বিয়ে করে মুহাম্মদ যে জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তার জন্যে তাঁর কঠোর সমালোচনা প্রাপ্য, ইসলাম  ধর্মের প্রবর্তক বলে তাঁকে ছাড় বা রেহাই দেওয়া যেতে পারে না । বাল্যবিবাহকে সমর্থন ও উৎসাহ দেওয়ার জন্যে ইমরান সাহেবরা ইসলাম ও  মুহাম্মদের সমালোচনা  করতে পারবেন তো ?


KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...