Friday, March 21, 2014

মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন বাতিল হলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা


সম্প্রতি (১২ই মার্চ’ ২০১৪) কলকাতা হাই কোর্ট এক রায়ে বলেছে যে মাদ্রাসা স্কুল সার্ভিস কমিশন একটি অসাংবনিধানিক প্রতিষ্ঠান । এই রায়ে মুসলিম সমাজের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবী সমাজের একাংশ ভীষণ উল্লসিত ।  তাঁরা এই রায়কে ঐতিহাসিক রায় বলে বর্ণনা করে বলেছেন,  ‘৩০ ধারা নিয়ে হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায় আমূল বদলাতে পারে মুসলমান জনজীবনউদ্ধৃতিটি কোনো ব্যক্তির নয়, এটা  মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের পরিচালিত একটি সাপ্তাহিকের (‘নতুন গতি’, ১৭-২৩মার্চ’২০১৪)  প্রথম পাতার প্রথম তিন কলাম জুড়ে শিরোনামের অংশ ।  সরকারের কাছে অত্যন্ত জোরালো ভাষায় তাঁরা দাবী জানিয়েছেন  সরকার  যেন এই রায়কে মেনে নেয় এবং এই রায়ের বিরুদ্ধে  আপীল না করে ।  ওঁদের আর একটি সাপ্তাহিক (‘মিযান’, ১৬ মার্চ’২০১৪)  এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘বিচারপতি চক্রবর্তীর রায় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ । সরকারের উচিত সংবিধান মেনেই কাজ করা । সংখ্যালঘুদের স্বার্থে আঘাত নে হেনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিক তৃণমূল সরকার, বামেরা যা করেছে তার যেন পুনরাবৃ না হয় ।’  এই রায় ও তার পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম সমাজের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতিক্রিয়া ও দাবী-দাওয়া নিয়ে  সরকার পক্ষ  এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া  দেয় নিতবে সকলের ধারণা হলো - সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না যাতে মুসলিম সমাজের ওই প্রতিনিধিরা সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট হয় ।
 সংবিধানে ঠিক কী  আছে এবং সত্য সত্যিই মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন সংবিধানের পরিপন্থী কী না তা নিয়ে আলোচনা করা এ নিবন্ধের বিষয় নয়, এটা যাঁদের বিষয় তাঁরা দেখবেন, আলোচন করবেন । আমি এই রায়ের ফলাফল নিয়ে শুধু আলোচনা করতে চাই এবং তার জন্যেই এ প্রবন্ধের অবতারণা । বামফ্রন্ট সরকারের অনেক ত্রুটি ছিল বলেই মানুষ তাদেরকে ৩৪ বছর পর ক্ষমতায় থেকে সরিয়ে তৃণমূলকে ক্ষমতায় বসিয়েছে । কিন্তু এ কথা অনস্বীকার্য যে  বামফ্রন্ট সরকার অনেক ভাল কাজও করেছিলো । সেই ভালো কাজগুলির মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য একট হলো সরকারী সহায়তা প্রাপ্ত স্কুল-মাদ্রাসায় শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের জন্যে সার্ভিস কমিশন গঠন করে তার মাধ্যমে নিয়োগ দানের ব্যবস্থা করা  । এটা যে একটা রাজনৈতিক পক্ষপাতমুক্ত ইতিবাচক গণতান্ত্রিক সুষ্ঠ নিয়োগ পদ্ধতি তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই ।  এই পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে  একদিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দলবাজী ও দুর্নীতির পরিবর্তে অনেক স্বচ্ছতা যেমন এসেছে, অপরদিকে তেমনি সবচেয়ে ভালো মানের শিক্ষকমন্ডলী ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের নিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে এর পূর্বে নিয়োগ করার ক্ষমতা ছিলো  বিদ্যালয়/মাদ্রাসা পরিচালন  সমিতির হাতে । পরিচালনা সমিতির কর্মকর্তারা - মূলত সম্পাদক, প্রধান  শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ - তাদের পছন্দের লোকজনদের নিয়োগ দিত । তখন  অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রার্থীর মেধা, উৎকর্ষতা, সাধারণ জ্ঞান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়গুলি বিবেচনা করা হতো না । তার পরিবর্তে বিবেচনা করা হতো কে কত টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষকে চাঁদা(ঘুষ) দিতে সক্ষম, কী তার রাজনৈতিক পরিচয়, ধর্মীয় পরিচয় ইত্যাদি । বহু জায়গাতেই নিলাম ডাকা হতো – যে সব চেয়ে বেশী টাকা দেবে তাকেই নিয়োগ দেওয়া হবে । দিনের পর দিন নিলাম ডাকা স্কুল/মাদ্রাসার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পেয়েছে নিলামে ওঠা টাকার পরিমাণও । একজন করণিকের পদে ৫/৬ লক্ষ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন খবরও শোনা গেছে ।  কোথাও কোথাও এমন ঘটনাও ঘটেছে যেখানে কর্মকর্তাদের কারও একজনের মেয়ের সঙ্গে বিয়ের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ।  সাধারণভাবে এ  কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সবচেয়ে যোগ্য ও মেধাসম্পন্ন প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে এবং অযোগ্য, অনুপযুক্ত ও নিম্ন মেধার প্রার্থীরাই টাকা অথবা রাজনৈতিক দাদা-দিদিদের ক্ষমতার জোরে  শিক্ষক, করণিক ও পিওনের পদে  নিয়োগ পেয়েছে ।  এক কথায় স্কুল/মাদ্রাসাগুলি হয়ে উঠেছিল ঘুঘুর বাসা ।  সেই  ঘুঘুর বাসা ভাঙা ভীষণ কঠিন কাজ ছিলো । এস.এস.সি এবং  এম.এস.সি (মাদ্রাসা সার্ভিস কমশন) গঠন করে বামফ্রন্ট সরকার সেই কঠিন কাজটি সম্পন্ন করেছিল যা নিশ্চিতভাবেই একটি যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক কাজ ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়ন প্রধানতঃ নির্ভর করে  শিক্ষকমন্ডলীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, মেধা ও জ্ঞানের গুণগত মানের উৎকর্ষতার উপরসেই উৎকর্ষতা নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্ব  সরকারের, কারণ সরকারের  উপর ন্যস্ত থাকে দেশের সার্বিক উন্নয়নের কাজ ।  বামফ্রন্ট সরকার অন্ততঃ এ ক্ষেত্রে দলীয় স্বার্থের উপরে উঠে সেই কাজটি যে করে গেছে তা অনস্বীকার্য । কোনো কারণে যদি সেই  নিয়োগ পদ্ধতিটি ব্যহত হয় বা বাতিল হয়ে যায় এবং  পুরোনো সেই দুর্নীতিগ্রস্ত পচা-গলা পদ্ধতি ফিরে আসে তবে তা হবে এ রাজ্যের জন্যে খুবই দুঃখজনক ও হতাশাব্যাঞ্জক । কারণ, তার ফলে সামগ্রিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হবে । তবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা এবং  ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুসলিম সমাজও, কারণ মাদ্রাসায় পড়ে সাধারণতঃ মুসলিম সমাজের সন্তানরাইঅথচ সেই বিশাল একটা সামাজিক ক্ষতিকে ত্বরাণ্বিত করার জন্যে  অতি সক্রিয় ও তৎপর হয়ে উঠেছে মুসলিম সমাজের ধর্ম্মীয় নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবী সমাজের একাংশ
মুসলিম সমাজের এই তথাকথিত প্রতিনিধিরা মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই প্রতিবাদ করে এসেছেন । এঁরা বামফ্রন্ট সরকার যখন মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণের চেষ্টা করেছে তখনও তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছে ।  এঁদের প্রতিবাদের জন্যেই মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার সম্পূর্ণ আধুনিকীকরণের কাজ সম্পূর্ণ হয় নি ।   তা যদি সম্ভব হতো তাহলে তার সুফল ভোগ করতো মুসলিম সমাজের ছেলেমেয়েরাই ।  এঁদের প্রতিবাদকে অগ্রাহ্য করেই বামফ্রন্ট সরকার  স্কুল সার্ভিস কমিশনের মতোই মাদ্রসা সার্ভিস কমিশন স্থাপন করেছিলোতখন এঁরা আদালতে মামলা করে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন বাতিল করার জন্যে । এঁদের অভিমত হলো এই কমিশন গঠন মুসলিম সমাজের স্বার্থ ও অধিকারকে খর্ব করছে এবং লঙ্ঘন করেছে  সংবিধানকেও  বেশ কয়েক বছর পর কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে আমরা এখন বুঝতে পারছি যে  মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন গঠন সংবিধান সম্মত হয় নি । হায় কোর্ট রায় দিয়েছে কমিশন গঠনের আইনগত দিকটা নিয়ে, কিন্তু উক্ত কমিশন গঠনের ফলে মুসলিমদের অধিকার ও স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এমন দাবীকে ঐ রায়ে সমর্থন করা হয়েছে এমনটা শোনা যায় নি । তেমনটা নিশ্চয় বলার কথাও নয় । কারণ, নির্বোধ মানুষ ও বিশেষতঃ কুমতলবওয়য়ালা মানুষ ছাড়া আর সকলেই বোঝেন যে মাদ্রসা সার্ভিস কমিশন গঠনের ফলে মুসলমানদের অধিকার ও স্বার্থ অনেকটা সুরক্ষিতই হয়েছে ।  
এখন প্রশ্ন হলো মুসলিম সমাজের উক্ত প্রতিনিধিরা তাহলে কেনো মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন চান নি এবং এখন তুলে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন । এর পশ্চাতে প্রধানতঃ তিনটি কারণ  রয়েছে । প্রথমতঃ এই শক্তি কোনোকালেই মুসলিম সমাজের প্রকৃত উন্নতি চায় না । এঁরা চায়, মুসলিমদের যা হবে হোক, মুসলমানরা যেন কিছুতেই ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতির ঘেরাটোপের বাইরে না যায় । ব্যক্তি মুসলমান ও  মুসলমান সমাজ অপেক্ষা ইসলাম ধর্ম এঁদের কাছে অনেক বড়ো । দ্বিতীয়তঃ মাদ্রসা শিক্ষা ব্যবস্থা যেন মুসলিম সমাজের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও মাতব্বরদের হাতে কুক্ষিগত থাকে । এবং তৃতীয়তঃ মাদ্রসায় শিক্ষক ও অশিক্ষক হিসেবে যেন কোনো অমুসলিম (কাফের) প্রবেশ করতে না পারে এবং মাদ্রসায় যেন ইসলামি পরিবেশ ও পরিমন্ডল অটুট ও অক্ষুণ্ণ থাকে ।
কলকাতা হায় কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যদি মাদ্রসা সার্ভিস কমিশন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত  নেয় তা হলে তা হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বরং সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলকে ভাবতে হবে কীভাবে এই নিয়োগ ব্যবস্থাটি রক্ষা করা  এবং  তার আরো উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করা যায় । প্রয়োজন হলে সংবিধান সংশোধন করেও তা করা একান্ত জরুরী । কিন্তু এই সরকারতো  আগের আগের সরকারগুলোর চাইতেও বেশী বেশী করে  রক্ষণশীল মুসলিম ও মৌলবাদীদের পদলেহন করতে উদগ্রীব । এই সরকার মুসলমানদের ভোট পেতেই আগ্রহী, তাদের কল্যাণ করতে মোটেই নয় । এই সরকার মনে করে আগের সরকারগুলোর মতোই যে রক্ষণশীল ও মৌলবাদী মুসলিমদের তুষ্ট করতে পারলে অনেকবেশী মুসলমানদের ভোট পাওয়া যায় । এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা, তবুও সেই ধারণার বশবর্তী হয়েই এই সরকার   যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ  নিচ্ছে  এরূপ কয়েকটি  উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হলো সংবিধান লঙ্ঘন করে ইমাম ভাতা ও  মুয়াজ্জেন ভাতা প্রদান, পুরাতন হজ হাউসের সম্প্রসারণ ও নতুন হজ হাউস নির্মাণ,  খারিজি মাদ্রাসাগুলিকে অনুমোদন প্রদান, রাজ্যসভায় মুসলিম মৌলবাদীদের প্রতিনিধি প্রেরণ ইত্যাদি    তাই এই সরকার মুসলিম মৌলবাদীদের দাবীকে মান্যতা দেবে না এমনটা আশা করা যায় না । এই পরিস্থিতিতে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে রক্ষা করতে হলে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও ধর্মান্ধ মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের বাইরে যে বৃহত্তর মুসলিম সমাজ রয়েছে তাদের  পক্ষ থেকে পাল্টা দাবী তুলে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা আবশ্যক । কিন্তু সে সম্ভাবনার ক্ষীণতম শিখাও দৃষ্টগোচর হয় না । মুসলিম সমাজের ধর্মীয় নেতারা ও ধর্মান্ধ বুদ্ধিজীবীরা  ধর্মীয় আবেগ নামের ‘কুঠার’ নিয়ে স্বগোত্রীয় মুসলিম সমাজের পায়ে আঘাত করতে  মরিয়া হয়ে উঠেছে  অথচ বাকি মুসলিম সমাজ আচরণ করছে  নীরব দর্শক ও শ্রোতার মত ।      
এই ঘটনা অবশ্য এদেশে মুসলিমদের  ইতিহাসে নতুন কিছু নয় । মুসলমানদের ধর্মীয় নেতারা ধর্মের নামে নিজেদের (মুসলিম  সমাজের) পায়ে কুঠার দিয়ে যখন কুঠার দিয়ে আঘাত করে গোটা সমাজটাকে পঙ্গু করে,  তখন বাকি বৃহত্তর মুসলিম সমাজ নিশ্চুপ বসে থাকে । এ ভাবেই  মুসলিম সমাজ যখন ক্রমশঃ পিছিয়ে পড়তে থাকে তখন কিন্তু তার দায় ওই ধর্মীয় নেতারা  নিতে চায় না, দায় চাপায় সরকারের উপর, জিগির তোলে সরকারি শোষণ ও বঞ্চনার ।  আর সেই জিগিরে তাদের সাথে কন্ঠ মেলায়  বাকি মুসলমান সমাজ এটা মুসলিম সমাজের ঐতিহ্য । আবহমান কাল থেকে আমরা দেখছি এই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে মুসলমানরা ।  
বৃটিশ সরকার আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু যখন করে তখন ঐ ধর্মীয় নেতারা মুসলমানদের অধিকার ও স্বার্থ বিপন্ন  হবে বলে  প্রত্যাখান করে নিজেদের পায়ে কুঠার মেরেছিলো । তখন বাকি বৃহত্তর মুসলিম সমাজ নীরব ছিলো । স্বাধীন ভারতের সরকার হিন্দু সমাজের ক্ষেত্রে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ  ও উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমানাধিকারের আইন প্রণয়ন করে হিন্দু সমাজের উন্নতির পথ সুগম করেছিলো তখন মুসলমানদের ধর্মীয় নেতারা মুসলিম ব্যক্তিগত আইন তথা শরিয়ত আইনের সংস্কারে বাধা দিয়ে  নিজেদের পায়ে নিজেরা কুঠার মেরেছিলো   তখনও বাকি বৃহত্তর মুসলিম সমাজ নীরব ছিলো ভারত সরকার যখন সকলের জন্যে দত্তক আইন প্রণয়ন  করেছিলো তখন তার তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিলো মুসলমান সমাজের ধর্মীয় নেতারা । ভারত সরকার তখন মুসলমানদের জন্যে ঐ আইনটিকে অপ্রযোজ্য করতে আইনটির সংশোধন করেছিলো । সুপ্রীম কোর্ট একটি যুগান্তকারী রায়ে বলেছিলো তালাকপ্রাপ্তা নারী  আত্মনির্ভরশীল না হলে এবং স্বামী অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হলে  তাকে তার প্রাক্তন স্ত্রীকে খোরপোষ দিতে হবে । তালাকপ্রাপ্তা নারীদের জন্যে এই রায় ছিলো এক যুগান্তকারী সহানুভূতীশীল ও মানবিক রায় । কিন্তু মুসমান সমাজের ধর্মীয় নেতারা তৎক্ষণাৎ ধর্মের উপর হস্তক্ষেপের অজুহাতে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে তীব্র প্রতিবাদ করে মুসলমান সমাজের পায়ে কুঠার চালিয়েছিলো  । সরকার তাদের সন্তুষ্ট করতে  আইন প্রণয়ন করে সেই রায়টি খারিজ করে দিয়েছিলো ।  তখনও বাকি বৃহত্তর মুসলিম সমাজ নীরব ছিলো । এরূপ ঘটনার আরো  নজির রয়েছে ।  মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন নিয়ে সেই একই চিত্রনাট্য ও তার মঞ্চায়ন আমরা দেখছি ।  আড়াইশো বছর আগে মুসলমান সমাজ যেখানে ছিলো, আজও সেখানেই দাঁড়িয়ে

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...