Saturday, November 1, 2014

খাদিজার জীবদ্দশায় মুহাম্মদের দ্বিতীয় বিয়ে না করার নেপথ্য কারণ



মুহাম্মদের প্রথম পত্নীর নাম খাদিজা। মুসলিম জগতে তিনি হজরত খাদিজাতুল কুবরা [রাযি আল্লাহ আনহা] নামেও পরিচিত। তাঁর পিতার নাম খোয়ায়লিদ ও মায়ের নাম ফাতিমা বিনত জায়দা।  খোয়ায়লিদ ছিলেন একজন বণিক ও উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর ৬ষ্ঠ পুরুষ ইবনে কিলাব ছিলেন একজন প্রসিদ্ধ পুরুষ এবং  ছিলেন মক্কার শাসকস্বভাবতই উত্তরাধিকার সূত্রেই খাদিজা ছিলেন একজন বিত্তবান, প্রভাবশালী ও বিদুষী নারী। ছিলেন খুব সুন্দরীও। তিনি ছিলেন প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী ও  বুদ্ধিমতীওতাঁর পিতা তাই তাঁর হাতেই বাণিজ্য ও সংসার পরিচালনার ভার তুলে দিয়েছিলেন যদিও তাঁর আরো দুই ভাই ও তিন বোন ছিলোমুহাম্মদের সঙ্গে  বিয়ের আগে তাঁঁর একাধিক বিয়ে হয়েছিলো মোট কয়টি বিয়ে হয়েছিলো তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। একটা মত হলো দুবার, আর একটি মত হলো তাাঁর তিন বার বিয়ে হয়েছিল। অবশ্য অধিকাংশ মত হলো দুবার বিয়ে হয়েছিলো। যাঁরা মনে করেন খাদিজার তিন বার বিয়ে হয়েছিলো তাঁদের মধ্যে আহমদীয়া মুসলিম জামাতও আছে। এই জামাতের পক্ষ থেকে মৌলানা দোস্ত মোহাম্মদ শাহেদ  লিখেছেন – 
“তাঁর প্রথম বিয়ে আবু হালা-র সাথে হয়। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পরে আতিক বিন আয়েব – এর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় এবং তার পরে সাফি বিন উমাইয়ার সাথে তাঁর বিয়ে হয়। সাফির মৃত্যুর পর তিনি তৃতীয় বারের মত বিধবা হয়ে যান।” [সাইয়্যেদাতুন নিসা, হজরত খাদিজাতুল কুবরা রাযি আল্লাহ আনহা, পৃ-২] 
খাদিজার জীবনীকার বাংলাদেশের বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ মুফাচ্ছিরে কোরআন ও গবেষক মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদীও বলেছেন মুহাম্মদ ছিলেন খাদিজার চতুর্থ স্বামী। তিনি লিখেছেন – 
“একাধারে তাঁর মহান দায়িত্ব পালন ও কর্তব্য সাধনে উৎসাহ ও প্রেরণাদানকারিনী, তিনি ইসলামের সেবায় মুসলিম জাহানের সর্বপ্রধান মাতৃত্বের আসন গ্রহণ করবেন। আল্লাহ পাকের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কি করে সে খাদীজাতুল কোবরা [রাঃ] বসে থাকতে পারেন এক সাধারণ গৃহের কুলবধূ হিসেবে? এ সাময়িক ঘটনার অবসান ঘটিয়ে আল্লাহ পাক হযরত খাদীজা[রাঃ}-কে যথাস্থানে পৌঁছে দিবেন তাই গন্তব্যে পৌঁছার পথ পরিষ্কার হওয়া দরকার। সে প্রয়োজনে হযরত খাদিজা [রাঃ] – এর তৃতীয় স্বামীও বিয়ের মাত্র কয়দিন পরেই ইন্তেকাল করেন।” [দ্রঃ হযরত খাদীজা (রাঃ) এর জীবনী, বাংলা বাজার ঢাকা, পৃ – ৩০,৩১]  
উকিপিডিয়ার একটি সূত্র এই একই কথা বলছে  -  
Khadija married three times and had children from all her marriages. While the order of her   marriages is debated, it is commonly agreed that she first married Abu Hala Malak ibn Nabash   ibn Zarrara ibn at-Tamimi and second 'Atiq ibn 'A'idh ibn 'Abdullah Al-Makhzumi.[8] To her    first husband she bore two sons, who were both given what were usually feminine names,[9] Hala and Hind. Abu Hala Malak died before his business became a success.[10] To her husband Atiq Khadija bore a daughter named Hindah. This marriage also left Khadija as a widow.[11] [http://en.wikipedia.org/wiki/Khadija_bint_Khuwaylid] 

খাদিজার প্রথম বিয়ে হালা না আতিক - কার সাথে হয়েছিলো তা নিয়েও প্রবল মতভেদ আছে। মতভেদ আছে খাদিজার স্বামী আতিক মারা গিয়েছিলেন,  না  কি আতিকের সাথে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছিলো তা নিয়েও। অবশ্য বেশীর ভাগ মতই হলো আতিক মারা গিয়েছিলেন। তবে নিশ্চয় করে বলা যায় না যে ওদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় নি। উইকিইসলাম তো বলছে বিবাহ বিচ্ছেদই হয়েছিলো - 
            Most sources state that Atiq died,[29] although there is a variant tradition that the marriage ended in divorce.  [লিংক -  http://wikiislam.net/wiki/Khadijah_bint_Khuwaylid ]
খাদিজার আগের স্বামীরাও ধনী ছিলেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর বিশাল ধন-সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে তিনিই পানফলে তাঁর ঐশ্বর্য সে সময় বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি  পায়।  পিতার সম্পত্তি ছাড়াও স্বামীর সম্পত্তি ও টাকা-পয়সা যে উত্তরাধিকার সূত্রে খাদিজা পেয়েছিলেন তা মুসলিম ঐতিহাসিক ও বুদ্ধিজীবীরাও অস্বীকার করেন নাবাংলাদেশের লেখক মোহম্মদ সাদাত আলী  এ প্রসঙ্গে  লিখেছেন  - “ইতোপূর্বে তাঁর যে দুটো বিয়ে হয়েছিল, তার মধ্যে দ্বিতীয় স্বামী মৃত্যুকালে অগাধ সম্পত্তি রেখে যান। সেই সূত্রে খাদিজা [রাঃ] হয়েছিলেন অঢেল ধনসম্পত্তি ও বিত্ত-বিভবের অধিকারিণী। বিরাট ব্যবসা ছিলো তাঁর। কর্মচারী রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য দেখাশোনা করাতেন। বিষয়-আশয়ের তত্ত্বাবধান করতেন নিজে।” [মহানবীর (সঃ) এর বিবাহ , পৃ – ১৭] কিন্তু মুসলিম বুদ্ধিজীবী ও ইসলামি পন্ডিতরা দাবি করে থাকেন যে প্রাক ইসলাম যুগে আরবে নারীরা  পিতা-মাতা-স্বামীর সম্পত্তির ভাগ পেতো না। তাঁরা এরূপ দাবি করেন মুহাম্মদ ও ইসলামের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্যে, কিন্তু তা যে সঠিক নয় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত খাদিজা।খাদিজার বয়স নিয়েও তীব্র মতভেদ রয়েছে। সাধারণ একটা মত হলো যে খাদিজা জন্ম গ্রহণ করেন ৫৫৫ খৃষ্টাব্দে এবং পঁচিশ বছরের যুবক মুহাম্মদের সঙ্গে যখন বিয়ে হয় তখন তাঁর বয়স ছিলো চল্লিশ বছরঅন্য একটি মত হলো খাদিজার বয়স ছিলো তখন মাত্র ২৮ [আঠাশ] বছর। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস যিনি মুহাম্মদের আত্মীয় ও তাঁর সঙ্গে মদিনাতেই ছিলেন তিনিও কথা বলেছেনতিনি বলেছেন,
  Abdullah ibn Abbas, the cousin who lived at Muhammad’s side through the final years in Medina,[12] stated that “on the day Khadijah married Allah’s Messenger, she was 28 years old.”[13] [http://wikiislam.net/wiki/Khadijah_bint_Khuwaylid]  
খাদিজার বয়স চল্লিশ বছর ছিলো মুহাম্মদের সঙ্গে বিয়ের সময় – এ কথা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে যথার্থ বলে মনে হয় না। কারণ, মুহাম্মদের ঔরসে খাদিজার ছ'টি সন্তান হয়েছিলো।  চল্লিশ বছরে বয়সে বিয়ে হলে কোনো নারীর ছ’টি সন্তান হওয়াটা অবিশ্বাসযোগ্য। বিশ্ব মুসলিম সমাজ খাদিজার বয়স সংক্রান্ত এই অবিশ্বাস্যযোগ্য  তথ্যটাকে ধ্রুবসত্য বলে  বিশ্বাস করে এবং সেটাই  আবার ইতিহাসে স্বীকৃতিও পেয়েছে। এই অবাস্তব তথ্যটাকে মুসলিম ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় নেতারা বিশ্বাস করতে ও আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়  মুহাম্মদের বিরুদ্ধে অত্যধিক যৌনাকাঙ্খা ও বহুগামিতার যে অভিযোগ আছে তাকে খন্ডন ও মিথ্যা প্রতিপন্ন  করার জন্যে। যেমন তাঁদের অভিমত হলো এই যে, মুহাম্মদের বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগ সত্য হলে তিনি মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে চল্লিশ বছরের প্রায় বিগত যৌবনা এক নারীকে বিয়ে করতেন না। তাঁদের আরো তথাকথিত যুক্তি হলো, খাদিজার সঙ্গে দীর্ঘ পনেরো বছরের দাম্পত্য জীবনে  দ্বিতীয় বিয়ে না করে প্রমাণ করে গেছেন যে তিনি বহুগামিতা পছন্দ করতেন না এবং তিনি ছিলেন তাঁর একমাত্র স্ত্রী খাদিজার  প্রতি ভীষণ বিশস্ত ও শ্রদ্ধাশীল।
খাদিজাকে বিয়ের পেছনে এই যে দুটি কারণের কথা মুসলিম ঐতিহাসিকগণ বলে থাকেন তার সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি দেখা যায় কিন্তু মুহাম্মদের শেষ জীবনে খাদিজার মৃত্যুর পর। খাদিজার মৃত্যুর পর কয়েক দিন যেতে না যেতেই শোকের আবহের মধ্যেই মুহাম্মদ অবলীলায় দ্বিতীয় বিয়েটি সেরে ফেলেন সওদার সঙ্গে। স্ত্রীর প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা, সততা ও শ্রদ্ধা থাকলে কারও পক্ষে কি  এমন কাজ করা সম্ভব? আর সওদাকে বিয়ে করেই তিনি থেমে যান নি, এমনকি ইসলামি আইনে সর্বাধিক চারটি স্ত্রী একত্রিত করার যে বিধান আছে সেখানেও তিনি থামেন নি। শেষ তেরো বছরে তিনি আরো অনেকগুলি বিয়ে করেন যে সংখ্যাটা দু ডজনেরও বেশী বৈ কম নয়। যদি ধরে নেওয়ায় যায় যে বিশেষ পরিস্থিতিতে আল্লাহ পুরুষদের জন্যে চারটি বিয়ে করার বিধান বা অনুমতি প্রদান করেছে, তা হলেও তাঁর কি উচিত ছিল না একটার বেশী বিয়ে না  করে শিষ্যদের সামনে বহুগামিতার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাওয়া? তিনি তো নিজেকে আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ বলে দাবি করেছেন, তাহলে তো তাঁঁর কাাছে এটাই প্রত্যাশিত ছিল যে তিনি সকলের সাামনে নিজেকে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরবেনতিনি যদি সত্যিই বহুবিবাহ ও বহুগামিতাকে নিরুৎসাহিত করতে চায়তেন, তবে তাঁর নিজের জীবনেই তার প্রমাণ রেখে যেতে পারতেন, এটাই তো আল্লাহর দূত (?) হিসাবে তাঁর কাছে সকলের কাম্য ছিলোতা না করে তিনি বরং বিয়ে করার সর্বোচ্চ সংখ্যাটাকে নিজেই ভেঙে ফেলেন যাকে খুশী ও যতো খুশী বিয়ে করে। এবং যাদের তিনি বিয়ে করেন তাঁরা ছিলেন প্রত্যেকেই রূপসী ও ভরপুর যৌবনবতী।সুতরাং এটাই স্বাভাবিক যে তাঁর নিজের থেকেও বয়সে বড়ো এবং বিধবা একজন নারীকে (খাদিজাকে) বিয়ে করার পেছনে নিশ্চয়ই অন্য কোনো গূঢ় কারণ আছে যা মুসলিম ঐতিহাসিকগণ দেখতে পান না কিংবা দেখতে চান না। কী সে কারণ তা বোঝার জন্যে মুহাম্মদ ও খাদিজার বিয়ের ঘটনাটার পটভূমিটা ভালো করে জানা ও বোঝা দরকার। এটা ঠিক যে সেই ঘটনার প্রায় দেড় হাজার বছর পর তাঁদের বিয়ের পিছনে নিহিত থাকা ঘটনাগুলির খুটিনাটি বিবরণ জানার সুযোগ এখন আর তেমন নেই। তবু যেটুকু জানা যায় তা থেকেই আমাদের বোঝার চেষ্টা রতে হবে কেন তিনি (মুহাম্মদ) তাঁর থেকে বয়সে বড়ো এবং বিধবা খাদিজাকে বিয়ে করেন। 
এ প্রসঙ্গে প্রথমেই যে কথাটা বলতে চাই যে মুহাম্মদ ও খাদিজার মধ্যে বয়সের যে ফারাকের কথা প্রচার করা হয় তা সত্যি নয়। সত্যিটা হলো এই যে খাদিজা[২৮] ও মুহাম্মদ[২৫] ছিলেন বয়সের দিক থেকে প্রায় সমজুটি এবং দেখতে দুজনেই ছিলেন ভারী সুন্দর, সৌম্যদর্শন ও সৌন্দর্যমন্ডিত এ দিক থেকে বিচার করলে এটা সহজেই বোধগম্য হয় যে তাঁদের দুজনের মধ্যে বিয়ে হওয়া খুব অস্বাভাবিক ঘটনা ছিলো না। তাছাড়া এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে খাদিজার দৈহিক রূপ ও সৌন্দর্য ছিলো এতোই অপরূপ যা বর্ণনাতীত বললে অত্যুক্তি করা হয় না। এ কথাটা মানেন এবং দাবি করেন মুসলিম ঐতিহাসিকরাও। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ইসলামি গবেষক মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদী লিখেছেন, 
          “এগুলো ছাড়া  দৈহিক রূপ ও সৌন্দর্যের তার কোন তুলনা ছিল না। তখন আর বিশ্বে তাঁর তুল্য রূপসী রমনী অন্য কেহ ছিল না।” [দ্রঃ হযরত খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী, পৃ – ২৭]  
কিন্তু বাকি সব দিক থেকেই তাঁরা ছিলেন পরষ্পর বিপরীত মেরুর মানুষ, এবং সে সব দিক থেকে বিচার করলে তাঁদের মধ্যে বিয়ে হওয়া প্রায় অসম্ভবই ছিলো। যেমন, খাদিজা ছিলেন সেই সময়ে মক্কার সবচাইতে ধনী বণিক, অপরদিকে মুহাম্মদ ছিলেন এতোই গরীব যে তাঁকে একদা খাদিজার অধীনেই কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে হয়েছিলো। যাঁরা বিত্তবান সমাজে তাঁদের প্রতিপত্তি অনিবার্যভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে, কিন্তু তৎকালীন সমাজে খাদিজার প্রতিপত্তি অন্যান্য সকল বিত্তবানদের ছাপিয়ে গিয়েছিলো। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের মৌলানা দোস্ত মোহম্মদ শাহেদ লিখেছেন, 
“তিনি অনেক ধন সম্পদ ও প্রাচুর্যের অধিকারী হয়ে গেলেন। ফলে তাঁর কাছে ধন সম্পদ ও প্রাচুর্যের  এক ভান্ডার জড়ো হয়ে গেলফলে মক্কার সকল ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা তাঁর হাতে এসে গেল এবং সমস্ত আরবেই তাঁর ঐশ্বর্যের কথা ছড়িয়ে পড়ল।”  [সাইয়্যেদাতুন নিসা, হজরত খাদিজাতুল কুবরা রাযি আল্লাহ আনহা, পৃ-২] 
খাদিজার এই বিপুল প্রভাব ও প্রতিপত্তির বিপরীতে মুহাম্মদ ছিলেন যেমন বিত্তহীন তেমনি প্রতিপত্তিহীন একজন সাধারণ ব্যক্তি। খাদিজা ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত রমনী, অপরদিকে মুহাম্মদ ছিলেন নিরক্ষর বলে কথিত। মুহাম্মদ সত্যি নিরক্ষর ছিলেন কী না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। কিন্তু এই সংশয়কে ইতিহাস কোনো গুরুত্ব দেয় নি। খাদিজা ছিলেন খৃষ্ট ধর্মাবলম্বী, অপরদিকে মুহাম্মদ ছিলেন পৌত্তলিক। খাদিজা কোন ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন তা নিয়ে বিতর্ক আছে, কেউ কেউ মনে করেন তিনি পৌত্তলিক ছিলেন এবং তাঁরা আল্লাহর কন্যা উজ্জার উপাসক ছিলেন। এ প্রসঙ্গে উইকিপিডিয়া যা লিখেছে -    Khadija was said to have neither believed in nor worshipped idols,[citation needed] which was      atypical for pre-Islamic Arabian culture. According to other sources, however, she kept an idol of Al-‘Uzzá in her house.[13] [http://en.wikipedia.org/wiki/Khadija_bint_Khuwaylid
মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদিও লিখেছেন তাঁর পূর্বোল্লেখিত গ্রন্থের ২৬ পৃষ্ঠায় যে খাদিজা খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীই ছিলেন। তিনি লিখেছেন – 
  “হযরত খাদীজা [রাঃ] – এর পরিবারস্থ লোকেরা বংশগতভাবেই খৃস্ট ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তাই             তাদের   পরিবারে তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব দুখানির খুব বেশী চর্চা হত। পরিবারের প্রায় সকলেই এ দুটি গ্রন্থের জ্ঞান আয়ত্ত করেছিল।” 
সুতরাং এটা স্পষ্ট যে, আর্থিক অবস্থা, সামাজিক মর্যাদা, সামাজিক প্রতিপত্তি, সাংস্কৃতিক, ধর্মবিশ্বাস, শিক্ষাদীক্ষা প্রভৃতি  সব দিক থেকেই  খাদিজা ও মুহাম্মদের মধ্যে  পার্থক্য  ছিলো আকাশ-পাতাল। অর্থাৎ তাঁদের দুজনের অবস্থান ছিলো সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে। তাই তাঁদের দুজনের মধ্যে বিয়ে হওয়াটা ছিলো কার্যত অসম্ভব ও অবাস্তব ব্যাপার।  আর খাদিজা যেহেতু মাত্র ২৮ বছরে  বয়সেই স্বামীর মৃত্যুজনিত কারণে বিধবা হয়ে যান, তাই তাঁর মতো উচ্চ শিক্ষিত, অতুলনীয় সুন্দরী ও সর্বাপেক্ষা ধনী ও প্রতাপশালী রমণীর জন্যে উপযুক্ত পাত্রের অভাব ছিলো না। বরং যেটা সত্যি তা হলো খাদিজা তৃতীয় বার বিধবা হওয়ার পর তাঁর পাণি গ্রহনের জন্যে অনেকেই তাঁর পিতার কাছে প্রস্তাব  পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু খাদিজা পুনরায় বিয়ে করতে ত হন নি। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের একজন ঐতিহাসিক, রশিদ আহমদ চৌধুর্‌ তাঁর বইয়ে এ প্রসঙ্গে লিখেছেন    – 
“After the death of her second husband, several respected and influential men of the Quraish tried to seek her hand in marriage but she rejected their offers. She resolved that she would not marry again and decided to live an independent life.” [Vide: HADHRAT SAYYEDAH KHADIJAH, page – 14].  

বলা বাহুল্য যে এরূপ একজন উচ্চ শিক্ষিত,  রূপবতী, গুণবতী ও ঐশ্বর্যশালী বণিক মহিলার কাছে মুহাম্মদ স্বভাবতই পাত্র হিসেবে বিবেচনার যোগ্যই ছিলেন না। অথচ মুসলিম ঐতিহাসিকরা ও ইসলামি পন্ডিতবর্গ প্রচার করে থাকেন যে বিগত যৌবনা খাদিজাকে বিয়ে করে মুহাম্মদ এক বিরাট উদারতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এ কথাটি যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অবাস্তব এবং মুহাম্মদের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি বানানোর জন্যে এরূপ প্রচার করা হয় তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। মুহাম্মদ যে খাদিজার উপযুক্ত পাত্রী ছিলেন না তা তিনি নিজেও উত্তমরূপে জানতেন, এবং খাদিজার দূত যখন তাঁর কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান তখন তিনি সে কথা নিজেই সেই দূতের সামনে ব্যক্ত করেছিলেন। পরে যখন তিনি যখন বোঝেন যে খাদিজা সত্যি সত্যিই তাঁকে বিয়ে করতে চান তখন  মুহূর্তের মধ্যেই সম্মতি দিতে বিলম্ব বা দ্বিধা করেন নি। এটা যে প্রকৃতই  সত্যি ঘটনা তা বোঝা যায় তাঁদের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পটভূমির   ইতিহাস পর্যালোচনা করলে।
খাদিজা তাঁর বাণিজ্য পরিচালনা করতেন কর্মচারীদের সাহায্যে, নিজে কোনো দিন জিনিষপত্র কিনতে বা বিক্রি করতে বাণিজ্য কাফেলার সঙ্গে যেতেন না বাণিজ্য আরো সুন্দরভাবে পরিচালনার  জন্যে একজন দক্ষ ও বিশ্বস্ত কর্মচারী তিনি খুঁজছিলেন। আবু তালিব সেটা জানতে পারেন, কারণ খাদিজার পরিবারের সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তা ছিলো, তিনি ছিলেন খাদিজার  ভাইয়ের স্ত্রীর  ভাই। আবু তালিবও মুহাম্মদের জন্যে একটা কাজের সন্ধানে ছিলেন। তিনি কাল বিলম্ব না করে মুহাম্মদকে নিযুক্ত করার জন্যে খাদিজার কাছে সুপারিশ করেন। আবু তালিবের কথায় খাদিজা মুহাম্মদকে তাঁর কর্মচারী নিযুক্ত করেন এবং তাঁঁকে বাণিজ্য কাফেলার সঙ্গে সিরিয়া পাঠান। মুহাম্মদ সেই সফরে ভালোই লাভ করেন যা  ছিল খাদিজার প্রত্যাশার থেকে অনেক বেশী। তাই মুহাম্মদের দক্ষতা, যোগ্যতা ও সততায় তিনি মুগ্ধ হন। একে তো মুহাম্মদের রূপ ছিল বেশ দর্শনীয় ও প্রবল আকর্ষণীয়, তারপর তাঁর এই ব্যবসায়িক সাফল্য খাদিজাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। বাণিজ্য মসৃণভাবে পরিচালনার জন্যে তিনি যে লোকের সন্ধানে ছিলেন তাকে খুঁজে পেলেন মুহাম্মদের মধ্যে। অন্য দিকে মুহাম্মদ ছিলেন যেহেতু একজন সুদর্শন উঠতি যুবক, স্বভাবতই তাঁঁর প্রতি খাদিজা ধীরে ধীরে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। সে সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র আঠাশ বছর, স্বভাবতঃই তাঁর শরীরে ও মনে যৌবন ছিলো তখনও ভরপুররূপে বিরাজমানকিন্তু পুরুষতান্ত্রিক পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে তাঁকে তাঁর শরীর ও মনের যাবতীয় চাহিদাকে অবদমিত করে রাখতে হয়েছিলো। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন জীবনে আর কখনো বিয়ে করবেন না। কিন্তু মুহাম্মদের সান্নিধ্যে আসার ফলে সেই অবদমিত সকল চাহিদা  প্রবলভাবে জেগে ওঠে তাঁঁর মনে ও শরীরে ধীরে  ধীরে।  ফলে তাঁর মনোজগতে এক বিশাল ঝড় বয়ে যায়। সে ঝড় তাঁর জীবনের সব কিছু ওলট পালট করে দেয়। এবং মুহাম্মদ ও তাঁর মধ্যেকার আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অবস্থানগত আকাশ-পাতাল বিভেদের কথা ভুলে  গিয়ে তিনি মুহাম্মদকে বিয়ে করবেন বলে মনস্থির করে ফেলেন। তাঁর মনের এই উথাল পাতাল অবস্থা ব্যক্ত করেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নাফিসাকে। নাফিসা খাদিজার ইচ্ছা ও সিদ্ধান্তকে প্রবলভাবে সমর্থন করেন এবং খাদিজা চাইলে তাঁকে এ বিষয়ে সর্বপ্রকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। খাদিজা তখন নাফিসাকে তাঁর  দূত করে পাঠান মুহাম্মদের কাছে। নাফিসা খাদিজার কথামতো মুহাম্মদেের কাছে যান। তাঁঁর নিকট গিয়ে তাঁঁঁকে জিজ্ঞাসা করেন তিনি বিয়ে করছেন না কেন? মুহাম্মদ বলেন যে তাঁর বিয়ে করার মতো আর্থিক সংস্থান নেই তাই। নাফসা তখন জানতে চান কোনো ধনী রমণী যদি  তাঁকে বিয়ে করতে চান তাহলে  তাঁর আপত্তি আছে কিনা। মুহাম্মদ তখন উল্টে জিজ্ঞাসা করেন, কেউ আছেন নাকি এমন রমণী? নাফিসা তখন খাদিজার নাম বলেন। মুহাম্মদ এ কথা শুনে হকচকিয়ে যান। বলেন, এ হয় না কি? তিনি কতো বড়ো ধনী, শিক্ষিত, অভিজাত  ও উচ্চ মর্যাদাশীল নারী, আর আমি তো একজন সামান্য দরিদ্র ও নিরক্ষর মানুষ, তিনি আমাকে বিয়ে করতে চাইবেন কেনো? নাফিসা বলেন, সেটা দেখার দায়িত্ব আমার, আপনি সম্মত কী না বলুন। মুহাম্মদ তখন বলেন, তাঁকে বিয়ে করবো এ কথা বলার ঔদ্ধত্য আমার নেই, তবে তিনি যদি স্বেচ্ছায় আমাকে বিয়ে করতে চান তাহলে আমার সম্মতি আছে। নাফিসা খাদিজাকে গিয়ে মুহাম্মদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের বিবরণ দেন। খাদিজা তখন মুহামাদের কাছে তাঁর বিয়ের প্রস্তাব প্রেরণ করেন। খাদিজার নাফিসাকে মুহাম্মদের কাছে দূত করে পাঠানো,  নাফিসা ও মুহাম্মদের মধ্যে কথোপকথন  এবং খাদিজার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের কাছে বিয়ের প্রস্তাব প্রেরণ ইত্যাদি বিষয়ে  উপরে যে আলোচনা করা হলো তার সমর্থন মুসলিম সমাজের ঐতিহাসিকদের রচনাতেও পাওয়া যায়। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের রশিদ আহমদ চৌধুরী এ বিষয়ে লিখেছেন – 
                   “Khadijah wanted to make him a proposal for marriage. She sought the opinion of her                    best friend  Nafeesah, who approved of the idea and offered her help. One day                               Nafeesah    went to Muhammad and during the conversation asked him why he had not married.
                         Muhammad replied that he was not rich enough to do so. Nafeesah asked him whether he would be willing to marry a respectable reach woman.
Muhammad asked, ‘Who is that woman?’
Nafeesah told him about Khadijah.
                           Muhammad apologised and said, “How can that be possible? Khadijah is too                  highly placed for me.  She is a wealthy woman and I am a poor person.”
Nafeesah said, “let me take care of that.”
Muhammad remarked, “In that case I have nothing to say but to agree.”
When nafeesah told the result of her talk with Muhammad, she sent him an offer of marriage. [Vide: HADHRAT SAYYEDAH KHADIJAH, page –22]

নাফসার সংগে কথোপকথনকে মুহাম্মদের স্বপন বলে মনে হচ্ছিল। সরাসরি খাদিজার কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসার আগে পর্যন্ত মুহাম্মদ নাফিসার কথাগুলি কতটা সঠিক তা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে ছিলেন। এটাই তো স্বাভাবিক।তাঁর ভয় ছিলো খাদিজার পিতাকেও।  তিনি  কি তাঁর মতো একজন   নিরক্ষর ও হতদরিদ্র যুবক এবং তাঁরই অধস্তন একজন কর্মচারীকে জামাই হিসেবে মেনে নিতে পারবেন? ওদিকে খাদিজাও সংশয়ে ছিলেন কীভাবে তাঁদের বিয়েটা সম্পন্ন করবেন তা নিয়ে। কারণ, তাঁর পিতা মুহাম্মদকে কিছুতেই মেনে নেবেন না সে ব্যাপারে তিনি প্রায় নিশ্চিত ছিলেন। খাদিজা তাই তাঁর পিতাকে এই বিয়েতে সম্মত করাবার প্রয়াস করার কোনো ঝুঁকি নেন নি। তিনি পিতার সম্মতি আদায়ের জন্যে একটা অসৎ কৌশল অবলম্বন করেন। পিতাকে না জানিয়েই বিয়ের দিন স্থির করে ফেলেন।  বিয়ের দিন তাঁর বাড়িতে  অন্য একটা অজুহাতে একটা জোরালো পার্টির আয়োজনও করেন। সেই পার্টিতে তাঁর পিতাকে অতিরিক্ত মদ পান করিয়ে বেসামাল করে তোলেন। যখন তিনি বোঝেন যে তাঁর  পিতার স্বাভাবিক  বোধ-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে সেই সময় মুহাম্মদের কাকা আবু তালিব ও মুহাম্মদের পক্ষের অন্যান্য প্রতিনিধিদের তাঁর সামনে  আসতে আহ্বান করেন। সেই সময় খাদিজা ও মুহাম্মদের  বিয়ের কথাবার্তা ও দিনক্ষণ  চূড়ান্ত করা হয়। খাদিজার পিতা কিন্তু এই বিয়েতে প্রচন্ড অসন্তুষ্ট ও আহত হয়েছিলেন।  খাদিজা যে তাঁর পিতাকে বোকা বানিয়ে তাঁর কাছ থেকে মুহাম্মদকে বিয়ে করার সম্মতি আদায় করেছিলেন সে কথা অনেক ঐতিহাসিকের লেখায় দেখতে পাওয়া যায়। উইকিইসলাম এই ঘটনাটিকে এভাবে বর্ণনা করেছেন - 
Marriage required the consent of the bride’s guardian, and Khadijah’s father Khuwaylid had refused her previous suitors. She therefore plotted to secure his permission through trickery. She plied her father with wine until he was drunk. Then she slaughtered a cow, covered his shoulders with a new striped robe and sprinkled him with perfume, whereupon Muhammad and his uncles entered the house. Khadijah extracted the legally binding words from her father while he was too inebriated to know what he was saying. As the day wore on and the wedding party was in full swing, Khuwaylid recovered his sobriety enough to ask, “What is this meat, this robe and this perfume?” Khadijah replied, “You have given me in marriage to Muhammad ibn Abdullah.” Khuwaylid was as furious as his daughter had expected, protesting that he had never consented to any such thing and even unsheathing his sword. [ http://wikiislam.net/wiki/Khadijah_bint_Khuwaylid ]


মুসলিম ঐতিহাসিকরা অবশ্য এটা সত্য ঘটনা বলে স্বীকার করেন না। উইকিপিডিয়াও সত্য বলে মানে না। কারণ, এতে মুহাম্মদের অনেকখানি  মর্যাদাহানি হয়। তাই  এটা নিয়ে বিতর্কের অবসান কল্পে  তাঁরা দাবি করেন যে খাদিজা ও মুহাম্মদের বিয়ে আগেই খাদিজার পিতার মৃত্যু হয়েছিলো। এ প্রসঙ্গে মুহাম্মদের জীবনীকার প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ম্যুইর – এর উদ্ধৃতি ও অভিমত উল্লেখ করে উইকিইসলাম কী  বলছে তা দেখা যাক
 Although the Muslim historian Waqidi denied this embarrassing story (even while reporting it), the British historian Muir points out that nobody had any reason to fabricate it. The tradition is from two independent sources, both of whom were biased in Muhammad’s favour and neither of whom had any reason to disparage Khadijah’s father or his clan. Two further independent            sources, without mentioning the drunken party, state that it was Khuwaylid who married Khadijah to Muhammad. Although Waqidi claims that it was Khadijah’s uncle who gave her away because  her father had died before the Sacrilegious War (591-594), his pupil Ibn Saad names Khuwaylid as a commander in that war. Muir therefore concludes that the tradition of Khuwaylid’s death “has been invented, to throw discredit on the story of his drunkenness.”[75]
শুধু খাদিজার পিতার মৃত্যুকে ঘিরেই নয়, মুহাম্মদের ভাবমূর্তি কৃত্রিম উপায়ে নির্মাণ করার জন্যে মুসলিম ঐতিহাসিক ও ইসলাম বিশেষজ্ঞগণ বহু জায়গাতেই ইতিহাসেরও তথ্যবিকৃতি ঘটিয়েছেন ও বহু মনগড়া গল্প রচনা করেছেন। সে রকম একটি আষাঢ়ে গল্পে বলা হয়েছে যে, খাদিজা ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন এ কথা ভেবে যে তাঁর মতো একজন পৌঢ়া নারীকে কি মুহাম্মদ বিয়ে করতে সম্মত হবেন? মনের মাধুরী মিশিয়ে সেই গল্পটা পরিবেশন করা হয়েছে এভাবে – 
                      “... তিনি যতদিন জীবিত থাকবেন, আর কোন দিনই বিয়ে করবেন না। কিন্তু খাদিজা [রাঃ] এর মনের অবস্থা হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে গেলো।
             তিনি মনের গভীরে এ আকাঙ্খা পোষণ করে ফেললেন যে, হযরত মুহাম্মদ [সঃ} – এর মত                 একজন গুণবান পুরুষকে যে নারী স্বামীরূপে লাভ করতে পারবে তাঁর জীবন অবশ্যই ধন্য                 হয়ে যাবে। তবে তাঁর মনের বাসনা যতই প্রবল হোক না কেন, হযরত মুহাম্মদ [সঃ] কি তাঁর            মত এক জন অধিক বয়স্কা নারীকে বিয়ে করতে সম্মত হবেন?” [হযরত খাদীজা [রাঃ] এর জীবনী, ইসলামি গবেষক মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদী, পৃ-৫৬]   
মুহাম্মদের মর্যাদাকে খাদিজার  ঊর্ধে স্থাপন করার জন্যেই  এরূপ গল্প তৈরী করা হয়েছে তা বলা বাহুল্য। আর এরূপ গল্প কিংবা সিদ্ধান্তকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্যে খাদিজার বয়স আঠাশ থেকে বাড়িয়ে  চল্লিশ করা  একান্তই আবশ্যক হয়ে পড়ে।  তাঁদের এই  চালাকি বা অপকৌশল  ধরা পড়তো না যদি না খাদিজার গর্ভে মুহাম্মদের ঔরসে ছ’টি সন্তানের জন্ম না হতো।
খাদিজা ও মুহাম্মদের দাম্পত্য জীবন পঁচিশ বছর দীর্ঘস্থায়ী হয়েছিলো। খাদিজার মৃত্যুর পরেই কেবল তাদের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটে। ইসলামি পন্ডিতবর্গ, গবেষকগণ ও মুসলিম ঐতিহাসিকগণ মুহাম্মদের নৈতিক চরিত্র নিয়ে যে সমালোচনা আছে তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে গিয়ে এই ঘটনাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরে থাকেন আগেই বলা হয়েছে যে  তাঁদের দাবী হলো  -  মুহাম্মদ নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ ছিলেন বলেই একজন বয়স্কা নারীর সঙ্গে পঁচিশ বছর অতিবাহিত করা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিয়ে করেন নি যদিও তখন আরবে বহুবিবাহের ব্যাপক প্রচলন ছিলো। আপাত দৃষ্টিতে এ কথা সত্যি মনে হতে পারে এবং সাধারণভাবে মুসলিম সমাজ এটাকে ধ্রুব সত্য বলে বিশ্বাসও করে থাাকেন।  কিন্তু এই বিশ্বাসের ইমারতটা নড়বড়ে করে দেয়  খাদিজা পরবর্তী  মুহাম্মদের জীবনের অধ্যায়টা, যে অধ্যায়ে তিনি একের পর এক বিয়ে করেন যে সংখ্যাটা প্রায় দু'ডজন। একের পর এক বিয়ের এই ঘটনা প্রশ্ন তুলে দেয় যে, খাদিজার জীবদ্দশায়  আর কোনো বিয়ে না করার পেছনে তাহলে কি অন্য কারণ ছিল?  তা না হলে যে ব্যক্তি তাঁর ভরা যৌবনে দীর্ঘ  পঁচিশ বছর এক স্ত্রীর সঙ্গে কাটিয়ে দেন সেই ব্যক্তিই পৌঢ় বয়সে মাত্র তেরো বছরে প্রায় দু'ডজন বিয়ে করেন কেনো? সুতরাং এই সম্ভাবনাই প্রবল হয়ে ওঠে যে খাদিজার জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে না করার পেছনে নিশ্চয় অন্য কিছু কারণ নিহিত ছিলো? প্রশ্ন হলো, কী সেই কারণগুলি? 
খাদিজা ও মুহাম্মদের বিয়েতে কী কী চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিলো তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না। কারণ, এই চুক্তির বিষয়ে ঐতিহাসিকগণ সম্ভবত খুব বেশী কৌতূহলী ছিলেন না এবং এখনও ননঅথচ ইসলামকে বোঝার জন্যে, ইসলামের আগমনের আগে আরবে নারীর অবস্থা কেমন ছিলো তা জানার জন্যে এবং সর্বোপরি নারী সম্পর্কে  মুহাম্মদের দৃষ্টিভঙ্গি কীরূপ ছিলো তা সঠিকভাবে অনুধাবন করার জন্যে এই চুক্তিপত্রটি একটি প্রামাণ্য নথি হিসেবে আমাদের অনেক সাহায্য করতে পারতো। এই চুক্তিপত্রটির কিছু কিছু অংশ অবশ্য জানা যায় বিভিন্ন সূত্র থেকে। সেই সূত্রগুলিও কিছুটা আলোক ফেলে এটা বোঝার জন্যে যে মুহাম্মদ কেনো দীর্ঘ পঁচিশ বছর তাঁর প্রথম স্ত্রী খাদিজার প্রতি বিশস্ত ও অনুগত ছিলেনতাছাড়া  সেই সময়ে মক্কার আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবস্থা, সমাজে নারীর  অবস্থান এবং খাদিজা ও মুহাম্মদের আর্থিক অবস্থা, তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন  সামাজিক মর্যাদা ও প্রতিপত্তি ইত্যাদি বিষয়গুলি  গভীরভাবে বিচার বিশ্লেষণ করেও একজন স্ত্রী তথা খাজিজার প্রতি মুহাম্মদের বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের কারণগুলি আমরা বুঝতে পারিকারণগুলি এরূপঃ
এক]. খাদিজা যে  মক্কার বণিকদের মধ্যে সব চেয়ে ধনী এবং প্রবল প্রতাপশালী একজন নারী ছিলেন সে বিষয়ে কোনো মহলেই বিতর্ক নেই। সুতরাং, এটা অনুমান করা যায় যে,  খাদিজা মুহাম্মদকে যখন বিয়ে করেন তখন যে চুক্তিপত্র সম্পাদন করা  হয়েছিলো তাতে খাদিজা হয়তো এ রকম শর্ত অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন যে তিনি জীবিত থাকাকালীন মুহাম্মদ দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। এ রকম চুক্তি থাকাটা মোটেই অস্বাভাবিক ছিলো না। কারণ, চুক্তপত্রে কী কী থাকবে, আর কী থাকবে না, তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা ও প্রভাব তখন খাদিজার ছিলো। তাছাড়া  সে যুগে আরবে সমাজে নারী অনেক স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করতো, অর্থাৎ তখনকার সামাজিক পরিবেশ পরিস্থিতিও ছিলো বিয়ের চুক্তিপত্রে খাদিজার অনুকূলে শর্ত আরোপ করার মতন। খাদিজা ও মুহাম্মদের বিয়েতে চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয়েছিলো তার সমর্থন পাওয়া যায় উইকিইসলাম থেকেও। এ বিষয়ে সূত্রটি যা বলেছে তা হলো - 
          Khadijah asked for a dower of 20 camels.[70] Twenty camels would have been worth about               £8,000,[71] which was four times the dower that Muhammad gave to any of his subsequent               wives.[72] This suggests that Khadijah was “worth four women” to him, i.e. that it was part of their marriage contract that he would not take another wife in her lifetime.

দুই]. বিয়ের আগে খাদিজা ছিলেন মনিব ও মুহাম্মদ ছিলেন কর্মচারী। সুতরাং, এটা অনুমান করা যায় যে তাঁদের বিয়ের পর তাঁদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্থাপিত হলেও তাঁদের উভয়ের মনে পুরানো মনিব-কর্মচারীর সম্পর্কটির  প্রভাব নিশ্চয় খুব তাড়াতাড়ি মুছে যায় নি। মনিব-স্ত্রী তথা খাদিজার জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে করলে যে তাঁকে (মুহাম্মদকে) তাঁর মনিব সেটা মেনে নেবেন না সে কথা  বোঝার মতন বোধ-বুদ্ধি তাঁর (মুহাম্মদের) যথেষ্টই ছিলো। ফলে তাঁর পক্ষে খাদিজার জীবিত অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করা সম্ভব ছিলো না।
তিন].  মুহাম্মদকে আর্থিক দিক থেকে সব সময় খাদিজার প্রতি নির্ভরশীল থাকতে হতো। খাদিজার  সাহায্য ব্যতীত তাঁর নিজেরই ভরণ-পোষণ পরিচালনা করার সামর্থ তাঁর নিজের ছিলো না। ফলে তাঁর পক্ষে দ্বিতীয় বিয়ে করা তো দূরের কথা, সে স্বপ্ন  দেখার ক্ষমতাও ছিলো না।
চার].  এক স্ত্রীর প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা যে মুহাম্মদের চরিত্রবিরোধী ছিলো তার প্রমাণ তিনি রেখে গেছেন নিজেই খাদিজার মৃত্যুর পর অনেক নারীকে বিয়ে করে। তাঁর হারেমে একই সঙ্গে তেরোজন পর্যন্ত স্ত্রী ছিলো। খাদিজার মৃতুর পর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই বিয়ে করেছিলে সওদাকে। আবার  কয়েক বছর পর সওদাকে বিনা দোষে তালাক দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেনসওদার দোষ ছিলো একটাই,  অন্যান্য স্ত্রীদের তুলনায়  তাঁর  বয়স একটু বেশী হয়ে গিয়েছিলো। সওদাকে তালাক দিয়ে দূরে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে অন্য লেখায়। 
পাঁচ].  এক নারী নয়, বহু নারীর  সেবা ভোগ করতে  মুহাম্মদ  যে অধিক পছন্দ করতেন তা স্পষ্ট বোঝা যায় তাঁর দেওয়া বেহেস্তের [স্বর্গের] বর্ণনায়। মানুষকে তাঁর ধর্মে প্রলুদ্ধ করার জন্যে পরকালের বেহেস্ত ও দোজখের [নরকের] যে বর্ণনা দিয়েছেন তাতে বলেছেন ইমানদার  মুসলমানরা বেহেস্ত পাবেন যেখানে তাঁদের সেবায় সর্বদা নিয়োজিত থাকবে ৭২ জন চির কুমারী হুরী [স্বর্গীয় অপ্সরা]।  
ছয়].  প্রাক ইসলাম আরবে  বহুবিবাহের ব্যাপক প্রচলন ছিলো বলে যে দাবী করা হয় তা মোটেই সঠিক নয়, ইতিহাসে এই দাবীর পক্ষে প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায় না। মুহাম্মদ ও ইসলামের ভাবমূর্তি ঊর্ধে তুলে ধরার জন্যে এই দাবিটি অত্যধিক জোরের সঙ্গে নিরন্তর প্রচার করা হয়। বিশেষ করে মক্কা ও মদিনায় তো বহুবিবাহের প্রচলন খুব বেশি ছিলো না তা ইসলামের ইতিহাস থেকেও কিছুটা বোঝা যায়মুহাম্মদের পিতা আবদুল্লাহ এবং কাকা আবু তালিব, আবু হামজা ও আবু লাহাব, মুহাম্মদের পিতামহ মোত্তালেব,  মক্কার কোরেশদের মধ্যে অত্যন্ত প্রভাবশালী অন্যতম ব্যক্তিত্ব আবু সুফিয়ান ইত্যাদি বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের  বহু স্ত্রীর কথা বিশেষ শোনা যায় না। কারো কারো বহুবিবাহ হয়ে থাকলেও তা দুই/তিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। খাদিজার প্রথম তিনজন স্বামীর মধ্যে কারোও একাধিক স্ত্রী ছিলো এমন কথা শোনা যায় না। মদিনায় মুহাম্মদ গন্ডায় গন্ডায় বিয়ে করেছিলেন, কয়েকজন নারী মুহাম্মদের পাণি গ্রহণ করার জন্যে (সম্ভবত মৃত্যুর পর বেহেস্ত লাভের আশায়) ব্যাকুলও হয়েছিলো বলে শোনা যায়, কিন্তু মদিনার কোনো নারী মুহাম্মদকে বিয়ে করার কিংবা মদিনার মুহাম্মদের একজন শিষ্যও তাঁর মেয়েকে মুহাম্মদের পত্নী করার  আগ্রহ দেখান নি। এটা সম্ভবত এজন্যেই যে মদিনায় বহুবিবাহের প্রচলন ছিলো না। তা না হলে আল্লার নবীর স্ত্রী হওয়ার আকাঙ্খা নিশ্চয় সেখানেও নারীদের মধ্যে তৈরী হতো এবং মা-বাবারাও পরকালের মঙ্গলের কথা ভেবে নবীর সঙ্গে তাদের মেয়েদের বিয়ে দেবার জন্যে উতলা বোধ করতো।
মুহাম্মদের দ্বিতীয় বিয়ে না করার পেছনে  হয়তো এটাও একটা কারণ যে সেই সময়ে মক্কায়  বহুবিবাহের প্রচলন বিশেষ ছিলো না। মুহাম্মদই মক্কা ও মদিনায় আল্লাহর নামে নিকৃষ্ট প্রথা বহুবিবাহের প্রচলন করেন যা পরবর্তীতে ইসলামের সৌজন্যে মুসলিমদের মধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
মুহাম্মদে জীবনে এবং  ইসলামের ইতিহাসেও মুহাম্মদ ও খাদিজার দীর্ঘ পঁচিশ বছরের দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  একটা কথা প্রবাদ বাক্যের মতো চালু আছে – খাদিজার ঐশ্বর্য, মহানুভবতা, উদারতা ও ত্যাগ এবং আলীর তলোয়ার ছাড়া ইসলামের বিজয় সম্ভব হতো না। মুহাম্মদের জীবনী অধ্যয়ন করলে বোঝা যায় যে, তাঁর ছিলো প্রবল রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ। কিন্তু যে কোনো অভিলাষ পূরণের জন্যে প্রচুর বিত্ত ও বৈভব একান্তই আবশ্যক হয়। কিন্তু মুহাম্মদ এতো দরিদ্র ছিলেন যে তাঁকে একজন নারীর অধীনে কর্মচারীর কাজ নিতে হয়েছিলো। তাই তিনি যখন নাফিসার মাধ্যমে খাদিজার কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন তখন তৎক্ষণাৎ হ্যাঁ বলতে বিলম্ব করেন নি। এটা তাঁর কাছে  হাতে চাঁদ পাওয়ার মতোই  একটা অবিশ্বাস্য প্রস্তাব বলে মনে হয়েছিলো। রাজনৈতিক অভিলাষ পূর্ণ করার জন্যে আর্থিক চিন্তামুক্ত অখন্ড অবসর যা তাঁর একান্তই কাম্য ও অপরিহার্য ছিলো সেটা তিনি পেয়েছিলেন খাদিজাকে বিয়ে করে। সেই সুযোগটাই তিনি কাজে লাগান বিয়ের পর। বিয়ের কিছুদিন পরই তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের অবসরে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য পাশে সরিয়ে রেখে দিনের পর দিন হীরা গুহায়  গিয়ে নিরালায় বসে চিন্তা করতেন কীভাবে ও কোন পথে  লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। তিনি অবশ্য দাবি করতেন যে তিনি গুহায় গিয়ে আল্লাহর ধ্যান করতেন। বাণিজ্যের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে জেনেও খাদিজা মুহাম্মদকে এই কাজে পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছিলেন। খাদিজার এই ত্যাগ ছাড়া মুহাম্মদ ইসলাম ধর্মের কথা ভাবতেও পারতেন না। মুসলিম ঐতিহাসিক ও ইসলামি শাস্ত্রে  বিশেষজ্ঞগণ খাদিজার এই অবস্মরণীয় অবদানকে  যথাযোগ্য মর্যাদা দেন নি। বরং বহু ক্ষেত্রে খাদিজার অবমূল্যায়ন করে তাঁকে হেয় ও অপমান করা হয়েছে। তাঁরা খাদিজার বয়স নিয়ে জালিয়াতি করেছেন। তাঁরা বলেছেন খাদিজা নিজে অতিশয় ধন্য হয়েছিলেন মুহাম্মদ তাঁকে বিয়ে করায়। এরূপ মন্তব্য করে তো তাঁরা খাদিজাকে যারপরনাই অপমানই করেছেন।  তাঁরা এরূপ করেছেন মুহাম্মদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্যে।





    

13 comments:

  1. ভক্তকথায় না জানি কত কি আসে !

    ReplyDelete
  2. Keep it up. New book-if you wish to publish in English, and you think I can be any use, feel free to use. May the Force be with you

    ReplyDelete
  3. বাণিজ্যের প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে জেনেও খাদিজা মুহাম্মদকে এইকাজে পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছিলেন! কেন? যেভাবে মুহাম্মদকে সারা লেখায় উপস্থাপন করা হয়েছে তার সাথে লেখার এই অংশটি কোনোভাবেই মেলানো যাচ্ছে না! কেন খাদিজা তাঁকে এই কাজে বাণিজ্যের লোকসান করেও সহযোগিতা করলেন? একটু ব্যাখ্যা আশা করছি।

    ReplyDelete
  4. লেখক ১০০% হিন্দু/ অমুসলিম

    ReplyDelete
  5. মালাওনের বাচ্চা তর ধরম নিয়া বিশ্লেষণ কর কিভাবে নিজের আপন মামিরে চুদে

    ReplyDelete
  6. জানোয়ার, তু্ই নিজের জীবন দেখ।অথর্ব,গাধা তুই মুহাম্মদের জীবন নিয়ে দোষ বের করার কে?

    ReplyDelete
  7. বিশ্বের ২০০কোটিরও অধিক লোক ইসলাম ধর্মানুসারী। তাঁরা কি না বুঝেই ধর্ম অনুসরণ করে থাকে? সবাই কি অন্ধ? না কি বোকা মনে করেন তাঁদের?

    ReplyDelete
  8. কি ভাষায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবো জানি না। চমৎকার ধর্মীয় গবেষণামুলক লেখা।লেখনি খুবই ভালো লেগেছে।আশাকরি খুব শীগ্রই নতুন ধর্মীয় গবেষণামুলক লেখা পোষ্ট করবেন।ইসলামের প্রকৃত সত্য বিষয় ধীরে ধীরে রের হয়ে আসছে এবং আসবে।ষদিও ইসলামের নাম ধারী মুমিন আপনার লেখা হজম করার ক্ষমতা নেই বরং বমি করে অসুস্হ্য হবে।ধন্যবাদ।শুভেচ্ছা দিয়ে শেষ করলাম।

    ReplyDelete
  9. রাম যখন সীতাকে বিয়ে করেন তখন সীতার বয়স ৬ বছর ছিল।শ্রীকৃষ্ণ ১৬১০ টি বিয়ে করেছিলে, রাম ৪টি,শীব ২টি।

    ReplyDelete
  10. এই লেখার প্রশংশাকারী গর্ধব পাঠকদের এবং লেখকের স্থুল ও মেধা বিবর্জিত চিন্তাশক্তিতে বিস্মিত হচ্ছি। লেখার রেফারেন্স হিসেবে বারবার wiki Islam এর প্রসঙ্গ টেনে আনা হচ্ছে যেখানে (wiki Islam) কিছু ফালতু লোক attention পাওয়ার জন্য ইসলামের সমালোচনা করে থাকে। আর কিছু অজ্ঞাতকুলশীল ইসলামী স্কলারের রেফারেন্স😃 বস্তুত হযরত মুহাম্মদ (স:) হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাকে অবিশ্বাসীরা আরবের সবচেয়ে সুন্দরী নারী এবং সবচেয়ে সম্পদশালী ব্যক্তি হওয়ার অফার করেছিল কিন্তু তিনি (স:) তা প্রত্যাখান করেছিলেন এবং সত্য প্রচারে অটল ছিলেন। আর ওনার একাধিক বিয়ের যৌক্তিক কারণগুলো google এ search দিলে সবাই খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। রসূল (স:) এর সমস্ত জীবনটাই সমগ্র মানবজাতির জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ। আল্লাহ আমাদের বুদ্ধি নয়, জ্ঞান দান করুন, আমীন।

    ReplyDelete
  11. বাণিজ্যের প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে জেনেও খাদিজা মুহাম্মদকে এইকাজে পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছিলেন! কেন? যেভাবে মুহাম্মদকে সারা লেখায় উপস্থাপন করা হয়েছে তার সাথে লেখার এই অংশটি কোনোভাবেই মেলানো যাচ্ছে না! কেন খাদিজা তাঁকে এই কাজে বাণিজ্যের লোকসান করেও সহযোগিতা করলেন? একটু ব্যাখ্যা আশা করছি। (২)

    ReplyDelete

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...